বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বছরে কয়েক হাজার কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এই পোশাক রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত আছে দেশের বিভিন্ন তৈরি পোশাকশিল্পের প্রতিষ্ঠান, যেখানে মার্চেন্ডাইজার হিসেবে কাজের বিপুল সুযোগ আছে। দেশে প্রশিক্ষিত কর্মীর ঘাটতি আছে বলে অনেক ক্ষেত্রেই ভিনদেশি নাগরিকেরা বাংলাদেশে এসে এসব পদে কাজ করছেন। অথচ আমাদের তরুণেরাই কিন্তু এই ঘাটতি পূরণ করতে পারেন। বিষয়টি বিবেচনা করে ‘অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং ও ম্যানেজমেন্ট’ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি চালু করেছে ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটি (আইএসইউ)।

ভবিষ্যৎ পেশাজীবনের কথা বিবেচনা করেই উচ্চমাধ্যমিক শেষে আইএসইউর এ বিষয়ে ভর্তি হয়েছেন সোহানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মার্চেন্ডাইজাররা ক্রেতার অর্ডার থেকে শুরু করে উৎপাদন ও ডেলিভারি পর্যন্ত সবকিছু তদারক করেন। তাই অনেক কিছু শেখার সুযোগ আছে। বাংলাদেশে তৈরি পোশাকশিল্পে কাজ করা মানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড, যেমন এইচঅ্যান্ডএম, জারা, নাইকি, লিভাইসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ।’

আরও পড়ুন৮ মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে জাপানে চাকরির সুযোগ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঢাকার বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন রিফা তাসনিয়া। ছোটবেলা থেকে ফ্যাশন উদ্যোক্তা হতে চেয়েছিলেন। ইচ্ছা ছিল, পোশাকের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করবেন। তাই অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং ও ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পড়তে ভর্তি হয়েছেন আইএসইউয়ে। রিফা বলেন, ‘একদিকে বিষয়টা নতুন, আবার সামনে বিদেশের অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজের সুযোগ আছে বলেও শুনেছি। তাই আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।’

আইএসইউর প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন আবুল কাশেম বলেন, ‘অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং ও ম্যানেজমেন্ট খাতে বাংলাদেশের কর্মবাজার অনেক বিস্তৃত। হাতে গোনা এক থেকে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। বাংলাদেশে গার্মেন্টস সেক্টর বড় হচ্ছে, নতুন নতুন ব্যবসা এই খাতের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে। আমরা এই খাতে দেশীয় মানবসম্পদ তৈরির জন্য অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং ও ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি চালু করেছি। একজন অভিজ্ঞ মার্চেন্ডাইজার ভালো বেতনের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পান।’

আরও পড়ুনবিনা নোটিশে চাকরি চলে গেছে, এখন কী করব২৭ জানুয়ারি ২০২৫

আইএসইউর অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক জগলুল হক মৃধা বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাড়া মালয়েশিয়া, চীন, তুরস্ক, ভিয়েতনাম ও ভারতে দক্ষ মার্চেন্ডাইজারদের ব্যাপক চাহিদা আছে। অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পোশাকশিল্পের যাবতীয় কার্যক্রম শেখানো হয়। গার্মেন্টসের উৎপাদনের প্রক্রিয়া, টেক্সটাইল ও ফেব্রিক প্রযুক্তি, ফ্যাশন ও ডিজাইন, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং ও ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও রপ্তানির নানা বিষয়, ই-কমার্স ও ডিজিটাল মার্চেন্ডাইজিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমরা কোর্স অফার করছি। আমাদের পড়াশোনার পুরোটাই এই শিল্পের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অভিজ্ঞ শিক্ষক ও পেশাজীবীদের মাধ্যমে ক্লাস ডিজাইন করা হয়েছে। আর শিক্ষার্থীরা প্রথম থেকেই ইন্টার্নশিপ ও হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন।’

অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগে স্নাতক করতে খরচ হবে প্রায় ৪ লাখ ৪২ হাজার টাকা। বৃত্তির সুযোগ আছে। বিস্তারিত দেখুন এই লিংকে।

আরও পড়ুন‘অনেক চাকরি নিয়ে বসে আছি, কিন্তু লোক পাচ্ছি না’১৯ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য প র ল ম র চ ন ড ইজ ম র চ ন ড ইজ র কর র স য গ ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন না করেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে যেতে চায় ইইউ

ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন না করেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে যেতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ব্রাসেলস ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে এ কথা জানিয়েছে সংস্থাটি । চীনের সংবাদমাধ্যম সিএমজি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ৭০টির বেশি দেশের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। বেইজিংয়ের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য সীমিত করার একটি পরিকল্পনা চলছে।
দ্য আইরিশ টাইমস জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের চাওয়া- ইইউ যেন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি পক্ষ বেছে নেয়। তবে ইউরোপীয় কমিশনের উপমুখপাত্র আরিয়ানা পোদেস্তা স্পষ্টভাবে বলেছেন, চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এই আলোচনা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমাদের চীন নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

তিনি জানান, চীন-ইইউ সম্পর্ক নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েন। তাঁর পক্ষ থেকে বেইজিংয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও বজায় রাখা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য ঝুঁকি হ্রাস করা। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া নয়।

ইউরোপের ভ্যাট এবং টেক জায়ান্টদের বিভিন্ন নিয়মকে অন্যায্য সুবিধা মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর জবাবে কমিশন বলেছে, ইউরোপের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুস্থতার প্রশ্নে কোনো আপস হবে না।

ভন ডার লায়েন জানান, বিশ্ব ব্যবস্থা যত অনিশ্চিত হচ্ছে, ইউরোপের পাশে দাঁড়াতে আগ্রহী দেশের সংখ্যাও বাড়ছে। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্য ও ইইউকে বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ব্রুগেলের সিনিয়র ফেলো আন্দ্রে সাপিরও বলেছেন, মার্কিন শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় ইইউর একটি আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত বাণিজ্য জোট গঠন করা উচিত।

তিনি বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দ্বারা প্রকাশিত উন্মুক্ত ও নিয়মভিত্তিক বাণিজ্যের জন্য ইইউ নেতাদের জি-২০ এবং জি-২০-বহির্ভূত দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ