‘মাফিয়া বসদের মতো’ আচরণ করেছেন ট্রাম্প
Published: 2nd, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের ঘটনা বৈশ্বিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। একই চিত্র দেখা গেছে ইউরোপের গণমাধ্যমেও।
স্থানীয় সময় গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই ইউরোপীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রধান সংবাদ এখন হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বৈঠক। জেলেনস্কির প্রতি ট্রাম্পের আচরণের সমালোচনা করে ইউরোপের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ট্রাম্প ও তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ওভাল অফিসে রাষ্ট্রনায়কের মতো আচরণ করেননি, বরং ‘মাফিয়া বসদের’ মতো আচরণ করেছেন।
ফরাসি দৈনিক লে ফিগারো ট্রাম্পকে একজন রুশ শাসকের সঙ্গে তুলনা করেছে। পত্রিকাটি লিখেছে, ‘আমেরিকাতে এখন একজন জারের খেলা খেলছেন, যিনি গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ভুলেছেন এবং পশ্চিমাদের পতন চান।’ ফরাসি দৈনিকটি আরও বলেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগামী শাসনামল সম্পর্কে এখান থেকে ধারণা পাওয়া যায়।
যুক্তরাজে্যর সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ বলেছে, ‘পশ্চিমা ঐক্য অপরিহার্য বলেই মনে হচ্ছে।’ পত্রিকাটি আরও লিখেছে, এই উত্তপ্ত বাগ্বিতণ্ডার ভয়াবহ দৃশ্য দেখে ব্রিটেন এবং ইউরোপের যে কেউ তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হবে।
ইতালির সংবাদপত্র কোরিয়ের ডেলা বলেছে, ‘ইউরোপ এখন নিজেদের সবচেয়ে খারাপ আশঙ্কাকে সত্য হতে দেখছে। কিয়েভকে তার ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। আটলান্টিকের অপর পারে যাদের বন্ধু ভাবা হতো, তারা আদতে বন্ধু নয়।’
স্প্যানিশ সংবাদপত্র এল পাইস লিখেছে, ‘ওভাল অফিস থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা এসেছে, তা হলো যদি আমাদের জরুরি প্রয়োজন ও নিরাপত্তা সম্পর্কে কোনো সংশয় থাকে, তাহলে বিশ্বে আমাদের বন্ধু কারা, সেই বিষয় পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’
সুইজারল্যান্ডের সংবাদপত্র নিউ জুরচার জেইতুং পরামর্শ দিয়ে লিখেছে, ‘যদি ইউরোপীয়রা সত্যিই ইউক্রেনে টেকসই শান্তি চায়, তাহলে সম্ভবত তাদের নিজেদেরই নেতৃত্ব নিতে হবে, আমেরিকান আশ্বাসে ভরসায় থেকে নয়।’
জার্মানির ডের স্পিগেল পত্রিকা লিখেছে, ‘ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আলোচনা দেখে মনে হয়েছে, আমরা একটি নতুন বিশ্বে বাস করছি। পশ্চিমা বিশ্বে এখন তার পুরোনো শীর্ষ বন্ধুর কবল থেকে বের হয়ে আসার সময় হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
সিটি কলেজের স্থাপনায় হামলা পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে: ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ
ঢাকা সিটি কলেজের স্থাপনায় যখন হামলা হয়, তখন পাশেই পুলিশের ৫০ থেকে ১০০ জন সদস্য দাঁড়িয়ে তা দেখছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এফ এম মোবারক হোসেন। তিনি হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
মোবারক হোসেন বলেন, ‘আজকে আমি দেখেছি, আমাদের কলেজে যখন হামলা হয়, থানা প্রশাসনের লোক, প্রায় ৫০ বা ১০০ জন পুলিশ পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। আমার মনে হয়, তারা যদি সময়মতো পদক্ষেপ নিত, তাহলে আমার কলেজে এ রকমভাবে ভাঙচুর হতো না।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা সিটি কলেজের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মোবারক হোসেন এ কথা বলেন।
সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, অত্র এলাকার জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব থানা-পুলিশকে নিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা শিক্ষকদের দায়িত্ব না। এটা প্রশাসনের দায়িত্ব।
আজকের হামলা, ভাঙচুর এবং সংঘর্ষের ঘটনা সম্পর্কে মোবারক হোসেন বলেন, গতকাল (সোমবার) একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় ঢাকা কলেজের একজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। কে বা কারা তাঁকে আক্রমণ করেছে। এ নিয়ে ঢাকা কলেজ শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা বলেছিলেন, তাদের (ঢাকা কলেজ) শিক্ষার্থীরা কোনো গন্ডগোল করবে না, অন্যায় করবে না। সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরাও যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনায় না জড়ায়, সেদিকে শিক্ষকেরা মনোযোগ দেন। হঠাৎ বেলা ১১টার দিকে দেখা গেল, কিছু দুষ্কৃতকারী হামলা চালিয়ে ঢাকা সিটি কলেজের স্থাপনা ভাঙচুর করল, স্থাপনা খুলে নিল। রমজানের আগেও এভাবে ঢাকা সিটি কলেজের স্থাপনার ওপর হামলা করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এটা একেবারে অনিয়ন্ত্রিত ব্যাপার
ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকানো যাচ্ছে না কেন জানতে চাইলে সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোবারক হোসেন বলেন, ‘এখানে ঢাকা সিটি কলেজে ১২ হাজার শিক্ষার্থী। ঢাকা কলেজে ৭-৮ হাজার শিক্ষার্থী। আইডিয়াল কলেজে ৫-৭ হাজার শিক্ষার্থী। এখানে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর আনাগোনার জায়গা। তারা রাস্তাঘাটে, এখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে, গল্পগুজব করে। তা ছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফেসবুক গ্রুপ আছে, সেখানে তারা একে অপরকে কটাক্ষ করে আচরণ করে। ওই বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক-দুইটা মারামারি হয়। শেষ পর্যন্ত এটা বড় আকার ধারণ করে। এটা একেবারে অনিয়ন্ত্রিত ব্যাপার।
ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের সঙ্গে মিলে চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে মোবারক হোসেন বলেন, ‘সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা আন্তরিক, আমরাও আন্তরিক। এখন আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামরা করছি। কিছুদিন আগে প্রশাসন এসব ঘটনায় দু-একজনের ব্যাপারে মামলাও করেছে। সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার পরও বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।’