‘সেতুর অভাবে ঘুরতে হয় ২০ কিলোমিটার’
Published: 2nd, March 2025 GMT
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের রাজৈর গ্রামের শশা চাষী আলামিন প্রধান। সারা বছর নিজের উৎপাদিত ফসল আড়তে নিয়ে বিক্রি করেন তিনি। রাজৈর খেয়াঘাটে সেতুর অভাবে তাকে ফসল নিয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার ঘুরে আড়তে যেতে হয়। এ কারণে ফসলের ফলন ভালো হলেও পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় লাভের পরিমাণ কম পাচ্ছেন তিনি।
নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে আলামিনের মতো শতাধিক কৃষক বছরের পর বছর এভাবে লোকসান গুনছেন।
গোপালপুর এলাকায় ধলেশ্বরী নদীরপাড়ে রাজৈর খেয়াঘাটে আক্ষেপের সুরে কৃষক আলামিন প্রধান বলেন, “ডিপ্লোমা শেষ করে বেকার না থেকে কৃষি কাজে যুক্ত হয়েছি। বাপ-দাদারা সবাই কৃষি কাজের সঙ্গে ছিলেন, এখনো আছেন। আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করে চাষাবাদ করে ফসলের ভালোই ফলন পাচ্ছি। নদীতে সেতু না থাকায় ঘিওর হয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার ঘুরে আড়তে নিয়ে ফসল বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে কয়েকগুণ পরিবহন খরচ গুনতে হয়। পাশাপাশি সময় ও পরিশ্রম বেশি লাগছে। একটি সেতু হলে এ অঞ্চলে কৃষকদের ভাগ্য বদলে যাবে।”
আরো পড়ুন:
বেইলি সেতুর পাটাতন ভেঙে সুনামগঞ্জ-দিরাই সড়কে যান চলাচল বন্ধ
কুড়িগ্রামের সোনাহাট সেতু দিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক
রাজৈর খেয়াঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ধলেশ্বরী নদীর এই খেয়াঘাট দিয়ে টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর, মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর ও সাটুরিয়া অঞ্চলের মানুষ যাতায়াত করছেন। খেয়াঘাটে মানিকগঞ্জের বরাইদ ইউনিয়নের গোপালপুর বাজারে কাকরাইদ, শিমুলিয়া, নাটুয়াবাড়ি, পাছকলিয়া, রৌহা, পয়লাসহ একাধিক গ্রামের মানুষের যাতায়াত রয়েছে। এসব গ্রামের শিক্ষার্থীরাও খেয়াঘাট পার হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায়।
রাজৈর গ্রামের অটোরিকশা চালক মো.
শিক্ষার্থী কুসুম আক্তার বলেন, “খেয়াঘাটে পার হতে অনেক সময় লাগে। অনেক সময় ক্লাসে যাইতেও দেরি হয়। সেতু হইলে তাড়াতাড়ি স্কুলে যাইতে পারতাম।”
গোপালপুর বাজার বনিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, “গোপালপুর বাজার আশেপাশের এলাকার মানুষের বাণিজ্যিক স্থল। সেতুর অভাবে এই বাজারে আসতে মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। সেতু না থাকায় বাজারের জমজমাট ভাবটাও কমে যাচ্ছে। রাজৈর খেয়াঘাটে সেতু হলে বাজারে বেচাকেনা বাড়বে, ভাগ্যের চাকা সচল হবে। একই সঙ্গে এলাকায় বেকারত্বও কমবে।”
সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইড) মো. ইমরুল হাসান বলেন, “রাজৈর খেয়াঘাটে প্রায় ৩৫০ মিটার লম্বা একটি সেতু নির্মানের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করলে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। সব ঠিক থাকলে, আগামী অর্থ বছরে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হতে পারে।”
ঢাকা/চন্দন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অ
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছে দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি)। তার সাবেক সহকারীদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের নগদ অর্থ ও ১৬ কেজি স্বর্ণবার জব্দের ঘটনায় ইসমাইল সাবরিকে প্রধান সন্দেহভাজনদের মধ্যে রাখা হয়েছে। আগামী বুধবার (৫ মার্চ) তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
স্থানীয় সময় আজ সোমবার (৩ মার্চ) মালয়েশিয়া এমএসিসি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান আজম বাকি।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবর বলছে, ইসমাইল সাবরি ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। দেশের সবচেয়ে কম সময়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ইসমাইল সাবরি হলেন তৃতীয় নেতা, যিনি তার পূর্বসূরি মুহিউদ্দিন ইয়াসিন এবং নাজিব রাজাকের পরে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।
আরো পড়ুন:
নারী কর্মীদের মালয়েশিয়া না যেতে সতর্কতা
আটকেপড়া ৭ হাজার ৯৬৪ বাংলাদেশি কর্মীকে নিতে রাজি মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি) সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কিত সম্পত্তিতে তিনটি অভিযানে মার্কিন ও সিঙ্গাপুর ডলার, সংযুক্ত আরব আমিরাত দিরহাম এবং জাপানি ইয়েনসহ বিভিন্ন মুদ্রায় নগদ অর্থ উদ্ধার করেছে।
সোমবার এমএসিসি প্রধান আজম বাকি সাংবাদিকদের বলেন, “এই নগদ অর্থের সন্ধান নিশ্চিত করে যে (সাবেক প্রধানমন্ত্রী) এই মামলায় একজন সন্দেহভাজন।”
সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা জব্দকৃত নগদ অর্থ, বিলাসবহুল ঘড়ি ও ১৬ কেজি সোনার বার প্রদর্শন করেন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবর অনুসারে, ইসমাইল সাবরির একজন প্রতিনিধি এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেননি।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নির্বিশেষে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
গত ৮ জানুয়ারি জাতীয় সুশাসন সম্মেলনে তিনি দুনীর্তির বিরুদ্ধে তার জিরো টলারেন্স অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “আমি কারো অবস্থান বা প্রভাব নিয়ে চিন্তা করি না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা ইতিমধ্যেই এটি শুরু করেছি।
তবে সমালোচকরা আনোয়ারকে দুর্নীতির অভিযোগ ব্যবহার করে বিরোধীদের চুপ করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন, যার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এবং প্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী দাইম জয়নুদ্দিনও রয়েছেন।আনোয়ার ইব্রাহিম তাদের বিরুদ্ধে পদের মাধ্যমে নিজেদের সমৃদ্ধ করার অভিযোগ এনেছিলেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে মাহাথির মোহাম্মদ আনোয়ার ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ১৫০ মিলিয়ন রিঙ্গিত মানহানির মামলা দায়ের করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
গত মাসে মাহাথির মোহাম্মদ তার ব্লগে লিখেছিলেন, “আনোয়ার যখন মুখ খোলেন, তখন তিনি মিথ্যা বলেন।”
ঢাকা/ফিরোজ