Prothomalo:
2025-03-03@14:31:52 GMT

অরিন্দম কহিলা বিষাদে

Published: 2nd, March 2025 GMT

কবির আহমেদ মাসুম চিশতির প্রদর্শনী ‘মেঘনাদবধ’দেখতে পেলে দর্শক একটা ক্ষীণ আভাস পেতে পারেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত যখন প্রথম মেঘনাদবধ কাব্য লিখলেন, তখন বাঙালি পাঠক কেমন বোধ করেছিলেন।

মধুসূদন দত্ত মেঘনাদবধ কাব্যতে এক অভূতপূর্ব ব্যতিক্রম ঘটিয়েছিলেন। রাম ও রাবণকে ভিন্ন এক দৃষ্টিভঙ্গিতে উপস্থাপন করেছিলেন। রামায়ণের প্রচলিত বর্ণনাকে তিনি অনুসরণ করেননি। উনিশ শতকে মধুসূধনের লেখায় রাবণ হয়ে উঠেছিলেন নায়ক এবং রাম তাঁর সম্পূর্ণ বিপরীত। আর এই ঘটনার একটি একুশ শতকীয় পুনর্ঘটন দর্শক পাবেন মাসুম চিশতির প্রদর্শনীতে। চিশতিও তাঁর শিল্পে এনেছেন নিজস্ব ভাবনা ও প্রকাশের নতুনত্ব। মধুসূদন যেমন ইউরোপীয় মিথ, কাব্য ও দর্শনের নির্যাসকে ভারতীয় পুরাণ, কাব্য ও দর্শনের সঙ্গে মিশিয়ে গড়েছেন এক নতুন রূপ, তেমনি চিশতিও নিজের চিত্রকর্মে স্রেফ মেঘনাদবধ কাব্য-এর আক্ষরিক রূপবিন্যাস না করে জুড়েছেন শিল্পের বিভিন্ন আঙ্গিক আর আপন ভাবনার মোজাইক। 

মাসুম চিশতি কাজ করেছেন লিখিত ভাষার আক্ষরিক ব্যবহারের মাধ্যমে। ফলে প্রদর্শনীতে যখন দর্শক দেখতে পাবেন মেঘনাদবধ কাব্য-এর দৃশ্যপটের সঙ্গে অজস্র টেক্সট, তখন তাঁরা মোহিত ও বিমূঢ় দুই-ই হতে পারেন। চলচ্চিত্রের স্টোরিবোর্ড ও কমিক–শিল্পের ধরন অনুসরণে শিল্পী এঁকেছেন মেঘনাদবধ-এর দৃশ্য। এতে তিনি ব্যবহার করেছেন অনেক লিখিত ভাষার অক্ষর। অক্ষর বলছি কারণ, শিল্পীর হাতের লেখায় এই অক্ষর বা শব্দগুলো সব সময় বোধগম্য নয়। সেটা তিনি চেয়েছেন, এমনও নয়। তবে শিল্প তৈরির খাতিরে টেক্সটগুলো একটা সময় দর্শকের কাছে দৃশ্যের যে জন্ম দেবে, তা তো বটেই।

মাসুম চিশতির আঁকাআঁকির ক্ষেত্রে একধরণের সারগ্রাহী ভাব লক্ষণীয়। একাধারে তিনি প্রাচ্যরীতি, আধুনিক কমিকসের ধারা এবং মায় মাংগা রীতিকে নিয়ে এসেছেন শিল্পকর্মে। মধুসূদন যেমন করে ভারতীয় পুরাণ ও পাশ্চাত্য দৃষ্টিভঙ্গির মিশ্রণে লিখেছিলেন মহাকাব্যটি, একইভাবে চিশতির অঙ্কনেও পাওয়া যায় হরেক শৈলী। কাগজে চারকোল ও গ্রাফাইটের মাধ্যমে তিনি মেঘনাদবধই এঁকেছেন, কিন্তু জুড়ে দিয়েছেন আধুনিক জীবন-বাস্তবতার নানান অনুষঙ্গ। চিশতির ‘মেঘনাদবধে’ আছে যৌনতার চিত্রণ, আছে যুদ্ধবিমান, ট্যাংক ইত্যাদি আধুনিক সমরযন্ত্র।

প্রদর্শনীতে ‘মেঘনাদবধের’ ৩৮টি চিত্রকর্মের দেখা মেলে। এর বাইরে আছে আরও কিছু ছবি। লালমাটিয়ার কলাকেন্দ্র গ্যালারিতে ভাস্কর লালারুখ সেলিমের কিউরেশনে প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ৪ মার্চ অবধি।

অনিন্দ্য নাহার হাবীব

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম স ম চ শত চ শত র

এছাড়াও পড়ুন:

এবার ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে ইফতার করালো রাবি প্রশাসন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অধ্যায়নরত ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার (৩ মার্চ) দ্বিতীয় রোজায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে এ আয়োজন করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আসরের নামাজের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা দলে দলে কেন্দ্রীয় মসজিদে আসতে শুরু করেন। এ সময় মসজিদের ভেতরে এবং মসজিদ সংলগ্ন বাগানে তারা ইফতারির জন্য সারিবদ্ধভাবে বসেন। এ ছাড়াও নারীদের জন্য মসজিদের বাগানে আলাদাভাবে ইফতারির ব্যবস্থা করা হয়। এতে মসজিদ প্রাঙ্গণে তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ।

আরো পড়ুন:

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গণইফতার আয়োজন করে অভিনব প্রতিবাদ

রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, ভোটগ্রহণ জুনে

ইফতারে অংশগ্রহণ করতে আসা ইনফরমেশন সাইন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রোকনুজ্জামান বলেন, “আজকের আয়োজন অনেক ভালো ছিল। এখানে সবার সঙ্গে ইফতার করতে এসে খুবই ভালো লাগছে। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটা দিন মনে হচ্ছে ঈদের মতো। প্রশাসনের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।”

আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন আহমেদ বলেন, “গতকালের তুলনায় আজকের আয়োজন অনেক ভালো। কাল সব এলোমেলো ছিল। কিন্তু আজকের আয়োজন গোছালো হয়েছে। এত মানুষের সঙ্গে আগে কখনো ইফতার করিনি। অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছে। মনে হচ্ছে এখানে মেলা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর আয়োজন করার জন্য।”

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইফতারে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন খান (প্রশাসন), উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান (শিক্ষা), রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ, জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার প্রমখ।

সার্বিক বিষয়ে জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “আমরা আজ প্রায় সাড়ে ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতার আয়োজন করেছি। যা গতকালের তুলনায় তিনগুণ। আমরা আশা করছি আজ সব ঠিকঠাক মতো হবে। এজন্য সবার সাহায্য প্রয়োজন, যাতে কোন উশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না হয়।”

প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। রোজার প্রথমদিন রবিবার (২ মার্চ) ৪ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। কিন্তু আয়োজনের তুলনায় অধিক রোজাদার উপস্থিত হওয়ায় ইফতারে সঙ্কট দেখা দিলে শিক্ষার্থীদের ভাগাভাগি করে নিতে দেখা গেছে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ