লোকসান বাড়ছেই রিংশাইন টেক্সটাইলের
Published: 2nd, March 2025 GMT
চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিংশাইন টেক্সটাইল। দেখা গেছে, এই সময় তাদের ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে এবং নগদ প্রবাহও চাপের মধ্যে আছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যানুসারে, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে রিংশাইনের শেয়ারপ্রতি ক্ষতি হয়েছে ৭১ পয়সা; ২০২৩ সালের একই সময়ে যা ছিল ৫৫ পয়সা। অর্থাৎ সেই তুলনায় চলতি বছর ক্ষতি বেড়েছে ২৯ শতাংশ। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ক্ষতি ১ টাকা ৫০ পয়সা; গত বছরের একই সময় যা ছিল ১ টাকা ৪১ পয়সা। অর্থাৎ এই সময় ক্ষতি বৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪ সময়ে রিংশাইনের শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) ঋণাত্মক ৯০ পয়সায় উঠেছে। আগের বছরের একই সময় যা ছিল ৩৬ পয়সা; অর্থাৎ অবনতি হয়েছে ১৫০ শতাংশ। এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, কোম্পানির কার্য পরিচালনা কতটা চ্যালেঞ্জের মুখে। সেই সঙ্গে নগদ অর্থেরও সংকট আছে।
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ছিল ঋণাত্মক ৯ টাকা ৫০ পয়সা; গত ৩০ জুন ২০২৪-এ যা ছিল ঋণাত্মক ৮ টাকা ০৩ পয়সা। ধারাবাহিকভাবে এনএভির ঋণাত্মক থাকা থেকে বোঝা যায়, কোম্পানির দায়বদ্ধতা সম্পদের তুলনায় বেশি। ফলে কোম্পানি আর্থিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
২০১৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় রিংশাইন টেক্সটাইল। ওই সময় প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা তুলেছিল ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা বা ডিইপিজেডে অবস্থিত কোম্পানিটি। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর বছর না ঘুরতেই ২০২০ সালে রিংশাইনে সংকট দেখা দেয়। এ কারণে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে উৎপাদন বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। এর পর থেকে কোম্পানিটির দেনা কেবল বাড়ছে।
রিংশাইনের ওপর করা বিএসইসির নিরীক্ষায় জানা যায়, কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করে দিয়েছেন। যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির আড়ালেও পাচার করা হয় অর্থ। এমন পরিস্থিতিতে কোম্পানিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়ে। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কোম্পানিটির মালিকানা হস্তান্তর বা নতুন কাউকে দিয়ে কোম্পানিটিকে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় বিএসইসি। তারই অংশ হিসেবে ওয়াইজ স্টার টেক্সটাইল উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার অধিগ্রহণের মাধ্যমে কোম্পানিটির পরিচালনার যুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লালমনিরহাটে মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ভাঙার প্রতিবাদ উদীচীর
লালমনিরহাট শহরের বিডিআর রোডে শিশুপার্ক–সংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্মারক মঞ্চে স্থাপিত ম্যুরালের একাংশ ভেঙে ফেলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। ম্যুরালটি ভাঙার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ সোমবার এক বিবৃতিতে উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, ১৪০ ফুট দীর্ঘ ম্যুরালটিতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধ, মুজিবনগর সরকার, ’৭১-এর গণহত্যা, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণসহ জাতির গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা চিত্রিত ছিল। যা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশকে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলছিল। এই ম্যুরাল দেখে সাধারণ মানুষ তথা তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারত। বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের আগে দুই দফা ম্যুরালটি ঢেকে রাখা হয়। তখন জেলা প্রশাসক দাবি করেছিলেন, চব্বিশের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে এটি ঢেকে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুনলালমনিরহাট মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্মারক মঞ্চের ঢেকে রাখা ম্যুরালের কিছু অংশ ভাঙা হয়েছে৫ ঘণ্টা আগেউদীচীর বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানের মূল চেতনা কোনোভাবেই একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। দুটি ক্ষেত্রেই মূল লক্ষ্য ছিল বৈষম্য থেকে মুক্তি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পেলেও বৈষম্য থেকে মুক্তি না পাওয়ার কারণেই সাধারণ মানুষকে ১৯৯০ বা ২০২৪ সালের মতো বারবার রাজপথে আন্দোলন করতে হয়েছে, আত্মাহুতি দিতে হয়েছে; কিন্তু ’৭১ ও ’২৪–কে মুখোমুখি বা সাংঘর্ষিক অবস্থানে নেওয়ার কথা বলে একটি অপশক্তি সচেতনভাবে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এই অপচেষ্টা প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে দেরি না করে ম্যুরালটি সংস্কার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন উদীচীর নেতারা।
আরও পড়ুন‘জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতীয়মান না হওয়া’য় ঢেকে রাখা হলো মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল২৭ মার্চ ২০২৫