ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তে গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক আল আমিনের (৩২) মরদেহ হস্তান্তর করেছে বিএসএফ।

শনিবার (১ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক শেষে বিজিবি’র কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করে তারা।
কসবা উপজেলার পুটিয়া সীমান্তের ২০৫০ নং পিলারের সামনে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন: বাংলাদেশিকে গুলি করে নিয়ে যায় বিএসএফ, হাসপাতালে মৃত্যু

আরো পড়ুন:

যুবককে নির্যাতন, মৃত ভেবে ফেলে গেল বিএসএফ 

বাহিনীর কারো গাফিলতি পেলে ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা 

বৈঠকে বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউর রহমান ও বিএসএফের পক্ষে ৪৯ ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার অজিত কুমার নেতৃত্ব দেন।

এর আগে, শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পুটিয়া সীমান্তে কাঁটাতারের কাছে আল আমিনকে গুলি করে বিএসএফ সদস্যরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ভারতের অভ্যন্তরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাত ৯টার দিকে আল আমিন মারা যান।

নিহতের স্বজনরা জানান, আল আমিন পেশায় কৃষক ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তার একটি গরু সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে চলে যায়। গরুটিকে আনতে আল আমিন সীমান্ত অতিক্রম করতে গেলে বিএসএফ তাকে গুলি করে। 

বিজিবির ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউর রহমান জানান, বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এ ধরণের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য বিএসএফকে সতর্ক করা হয়েছে।

ঢাকা/মাইনুদ্দীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসএফ ব এসএফ

এছাড়াও পড়ুন:

সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামার প্রত্যাশা

সম্প্রতি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) মহাপরিচালক পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিজিবির পক্ষ থেকে এই বৈঠকে যেইভাবে সীমান্ত হত্যা পুরোপুরি বন্ধের কথা বলা হয়েছে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত গত দেড় যুগ ধরে আমাদের দেশের সীমান্ত যেন আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সীমান্তে নির্মমভাবে গুলি করে যেভাবে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা করেছে, তা বিরল। এই নির্মমতায় আমাদের হৃদয়ে করেছে রক্তক্ষরণ ঘটেছে। আমরা জানি, ভূ-রাজনীতির দিক দিয়ে বাংলাদেশ তিনদিক দিয়ে ভারত দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং একদিকে বঙ্গোপসাগর। 
সীমান্তে হতাহতদের বড় অংশ হলো গবাদি পশু ব্যবসায়ী ও সীমান্তবর্তী জমির কৃষক। জানুয়ারির শুরুর দিকে, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি সীমান্তে সন্ধ্যার দিকে একটি কৃষক পরিবারের সন্তান  তাদের গরু আনতে গেলে, সীমান্তের ভেতরে ঢুকে হত্যা করে বিএসএফ। বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং মানবাধিকার সংস্থার হিসাব মতে, বিএসএফ কর্তৃক সীমান্ত হত্যার গত দেড় বছরে ছয় শতাধিকের মতো। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ৩১ জন বাংলাদেশের সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন। 


আজ থেকে ১৪ বছর আগে যে মর্মান্তিক দৃশ্য বিশ্ববাসীকে মর্মাহত করেছিল, আর  তা ছিল ফেলানি হত্যা। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে বাবার সঙ্গে ফেরার সময়ে বর্বর বিএসএফ ১৪ বছর বয়সী ফেলানিকে অত্যন্ত নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিল, যা বিশ্ববাসী দেখেছিল। এই বর্বর সীমান্ত হত্যা চলতে পারে না। মাঝেমধ্যে সীমান্ত হত্যা বন্ধের জন্য সীমান্তে আমাদের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়; তারপরও বন্ধ হয়নি সীমান্ত হত্যা। কিছুদিন আগে বিএসএফ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম  সীমান্তে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করে ভারত, এই বেড়া নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছে বিজিবি বাংলাদেশের কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে। 


অন্যদিকে ভারতীয় মিডিয়ার বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার থেমে নেই। আমরা জানি, ইউরোপীয়  ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে একদেশ থেকে আরেক দেশে সীমান্ত পাড়ি দেওয়া যায়। আবার মেক্সিকো-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে শত্রুতা দেখা গেলেও এমনকি উত্তর-দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তেও এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা  ঘটে না। বিগত শেখ হাসিনার আওয়ামী সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সীমান্ত হত্যা বন্ধের ব্যাপারে ভারত সরকারের সঙ্গে মীমাংসা করেনি। তাই বর্তমান সরকারের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, ভারত সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে দ্রুত মীমাংসা করে সীমান্তে শান্তির ব্যবস্থা করা হোক।
 
মো. ইয়ামিন খান: কলাম লেখক
 mdyamin.khan1983@gmail.com
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাধার পরও ৬০ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ
  • দহগ্রাম সীমান্তে ফের কাঁটাতারের বেড়া দিল বিএসএফ
  • ভারতীয়রা সীমান্ত আইন না মানলে আরও কঠোর হবে বিজিবি: ডিজি 
  • বাংলাদেশিকে গুলি করে নিয়ে যায় বিএসএফ, হাসপাতালে মৃত্যু
  • কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
  • সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামার প্রত্যাশা