যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে দেশটির কোনো প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রকাশ্যে এভাবে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা এর আগে হয়তো কখনও ঘটেনি। বিরল এ দৃশ্যে হতবাক হয়েছে পুরো বিশ্ব। সেই সঙ্গে বিভক্তও হয়েছে দু’ভাগে। একপক্ষ বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যুক্তিতর্ক করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। অন্যপক্ষ বলছে, ট্রাম্প তো শান্তি স্থাপন করতে চান; হত্যাযজ্ঞ থামাতে চান। জেলেনস্কির এমন আচরণ অপ্রত্যাশিত। 

এ অবস্থায় ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, তা অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। ইউক্রেনে সব ধরনের মার্কিন সহায়তা বন্ধের ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে। তবে জেলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়েছেন ইউরোপের নেতারা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বলছে, ট্রাম্পকে অপমান ও যুক্তরাষ্ট্রকে খাটো করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। বৈঠকটির ১০ মিনিটের একটি ফুটেজ গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ওয়াশিংটন সফরের আগে ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তাদের মধ্যে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে একটি চুক্তি হতে যাচ্ছে। হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় শুক্রবার দিনান্তে চুক্তিটি হওয়ার কথা ছিল। এ উপলক্ষে গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে তারা বৈঠকে বসেন। সেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান জেলেনস্কি। 
ইউক্রেনে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য জেলেনস্কিকে উপেক্ষা করেই এগোচ্ছিলেন ট্রাম্প। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা। ওই বৈঠকে ইউক্রেনের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। পরে নানা বক্তব্যে জেলেনস্কির সমালোচনা করেন ট্রাম্প। এমনকি তাঁকে স্বৈরাচার বলেও মন্তব্য করেন। পরে যুদ্ধবিরতির জন্য রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ উত্তোলন নিয়ে একটি চুক্তির দিকে এগোয় দুই দেশ। ওয়াশিংটন সফরে চুক্তিটি করার কথা ছিল জেলেনস্কির। তর্কাতর্কি-উত্তেজনায় এ নিয়ে কোনো আলোচনাই এগোয়নি। এমনকি যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়।

সিএনএনে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্পের এক পাশে ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স ও অন্য পাশে জেলেনস্কি। প্রথমে কথা বলেন ভ্যান্স। তিনি বলেন, ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন দখল করেছেন। দেশটির বিস্তীর্ণ অংশ তিনি ধ্বংস করেছেন। এ অবস্থায় শান্তি ও উন্নতি হয়তো কূটনীতিতে নিহিত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে একটি ভালো দেশ করতে চান। তিনি কূটনীতিতে যুক্ত হতে চান। সেটাই তিনি করছেন। 

এ সময় জেলেনস্কি জানতে চান, তিনি প্রশ্ন করতে পারেন কিনা। ভ্যান্স জানান, অবশ্যই। জেলেনস্কি বলেন, ‘তিনি (পুতিন) আমাদের দেশের বড় অংশের দখল নিয়েছেন, ক্রিমিয়াসহ বড় অংশের। ২০১৪ সালে তিনি ক্রিমিয়া দখল করেন। এখন ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধ করতে চাচ্ছেন। তখন কেউ তো তাঁকে (পুতিনকে) বাধা দেয়নি।’ তখন ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তো তখন ছিলাম না।’ জেলেনস্কি বলেন, ‘পরে আমরা রাশিয়ার সঙ্গে বন্দিবিনিময়ে চুক্তি করি। কিন্তু তিনি (পুতিন) বন্দিবিনিময় করতেন না। তাহলে আপনারা কী ধরনের কূটনীতি চান?’ 
ভ্যান্স বলেন, ‘আমরা সে ধরনের কূটনীতি চাই যা আপনার দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করবে। এখন আপনারা মানবশক্তি সমস্যায় (সৈন্য পাওয়া যাচ্ছে না) ভুগছেন; চাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র যাতে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে।’ ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স বলেন, ‘আপনি যে সৈন্যবাহিনী বড় করার জন্য মানুষ পাচ্ছেন না, এটা অস্বীকার করতে পারবেন?’ জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধ করলে তো সমস্যা থাকবেই। তবে সমাধান তো আসবেই; ভবিষ্যতে আপনারা এটা বুঝতে পারবেন।’ 

এ সময় তর্কে হাজির হন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমরা কী বুঝতে পারব, বা পারব না– এটা নিয়ে আপনি বলবেন না। কারণ, আপনি এটা বলার কোনো পর্যায়ে নেই, মনে রাখবেন। আপনি কোনো ভালো অবস্থানে নেই। খুব খারাপ অবস্থানে আছেন। আপনার হাতে কোনো কার্ড নেই।’ ট্রাম্প বলেন, ‘আপনি লাখ লাখ মানুষের প্রাণ নিয়ে খেলছেন; তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন। আর যা করছেন, সেটা এ দেশের (যুক্তরাষ্ট্র) জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক।’ 

ট্রাম্প একনাগাড়ে এসব কথা বলার সময় ফাঁকে ফাঁকে ‘আমি অসম্মান করছি না’, ‘প্রিয় ভাই’– এ ধরনের নানা মন্তব্য করেন জেলেনস্কি। তবে এক পর্যায়ে তিনিও সবকিছু ছাড়িয়ে যান। ট্রাম্প বলেন, তাদের দেওয়া অস্ত্র ও অর্থ সহযোগিতার কারণে জেলেনস্কি টিকে আছেন। স্টুপিড প্রেসিডেন্ট (জো বাইডেন) আপনাদের ৩৫০ বিলিয়ন ডলার দিয়েছিল। না হলেও শেষ হয়ে যেতেন। জবাবে ট্রাম্পকে পুতিনের সঙ্গে তুলনা করে জেলেনস্কি বলেন, পুতিনও এভাবে বলতেন; তিন দিনে শেষ হয়ে যাবে ইউক্রেন। এক পর্যায়ে জেলেনস্কির গায়ে ধাক্কাও দেন ট্রাম্প। পরে জেলেনস্কি ও তাঁর সঙ্গে থাকা ইউক্রেনের অন্য কর্মকর্তাদের হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।

এর কিছুক্ষণ পরই ফক্স নিউজে হাজির হয়ে জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক পণ্ড হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তিনি অনুতপ্ত। সম্পর্কটি পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি লিখেন, ‘ধন্যবাদ যুক্তরাষ্ট্র, আপনাদের সহায়তার জন্য ধন্যবাদ, এ সফরের জন্যও ধন্যবাদ।’ এ প্রেক্ষাপটে রাশিয়ান টেলিভিশন বা আরটি অনলাইনে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি বিশ্লেষণে বলা হয়, ট্রাম্পের সঙ্গে তর্ক করে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে জেলেনস্কির। তিনি আর প্রেসিডেন্ট থাকছেন না।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ইউরোপের নেতারা। বিবৃতি দিয়ে ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড, স্পেন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, চেক রিপাবলিক, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, স্লোভেনিয়া, বেলজিয়াম, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ ও আয়ারল্যান্ডের নেতারা এ সমর্থন জানান। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নেতারাও। আর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দার লিয়ান বলেছেন, ‘প্রিয় প্রেসিডেন্ট, আপনি একা নন। শক্ত থাকুন, নির্ভয় থাকুন, নির্ভার থাকুন।

ইউক্রেনের পাশে থাকার আশ্বাস স্টারমারের
এদিকে ইউক্রেনে ‘ন্যায়সংগত ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার’ জন্য সমর্থন জোগাড় করতে আজ রোববার  লন্ডনে জড়ো হচ্ছেন ইউরোপীয় নেতারা। শনিবার লন্ডনে পা দিয়েই ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন জেলেনস্কি। এ সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জেলেনস্কিকে আলিঙ্গন করেন এবং ইউক্রেনের পক্ষে অটল সমর্থন জানিয়ে বলেন, আপনার প্রতি যুক্তরাজ্যের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ডাউনিং স্ট্রিট থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে স্টারমার জেলেনস্কিকে সাহসী ও নির্ভীক থাকতে অনুপ্রেরণা দিয়ে বলেন, ‘আপনি একা নন সম্মানিত প্রেসিডেন্ট, আমরা আছি আপনার পাশে।’ জার্মানির সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মেরৎস এক্সে লিখেছেন, ‘প্রিয় ভলোদিমির জেলেনস্কি, সব সময় আমরা ইউক্রেনের পাশে আছি।’

বিশ্লেষকদের মত
হোয়াইট হাউসের অবিস্মরণীয় বৈঠক নিয়ে বিশেষজ্ঞরা তাদের মত দিয়েছেন। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ বা আইসিজির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ব্রায়ান ফিনুকেন বলেন, বৈঠকের পুরোটা সময়ই উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের আচরণ ছিল অপ্রত্যাশিত। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা করা নিয়ে যা ভাবেন এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের বিষয়ে তিনি যে বর্ণনা প্রচার করেন তা সবারই জানা। তাই তাদের ওই আচরণ অতটাও অবাক করা ছিল না।
ইউক্রেনের রাজনীতি বিশ্লেষক ভলোদিমির ফেসেনকো এএফপিকে বলেন, এই বাগ্‌বিতণ্ডা, এই বিস্ফোরণ, আজ হোক বা কাল হোক ঘটতই। তবে এতে ইউক্রেনের জন্য খারাপ কিছু হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউক্রেনে অস্ত্রের যে চালান যাওয়ার কথা রয়েছে, সেটা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাবলে বাতিল করা হতে পারে।

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র প ক টন ত কর ছ ন র জন য আপন র ইউর প ধরন র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

বদলে গেছে জীবনযাত্রার ছক

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস ছিল গতকাল রোববার। তবে বদলে গিয়েছিল জীবনযাত্রার চেনা ছক। সকালবেলা মুখে কিছু না তুলেই অফিস-কাছারি পথে পা বাড়িয়েছেন লোকজন। জীবন–জীবিকার দায় মেটাতে যাঁর যা কাজ তাতে নিয়োজিত হয়েছেন। এদিকে বেলা যায় তবু ক্ষুধা–তৃষ্ণার কথা মুখে নেই। পবিত্র মাহে রমজান পাল্টে দিয়েছে ব্যক্তিজীবন থেকে ঘরসংসারের গতানুগতিক কাজের ধারা।

শনিবার সন্ধ্যায় রমজান মাসের চাঁদ দেখার ঘোষণার পর থেকেই মূলত মাহে রমজানের আবহ ছড়িয়ে পড়ে মুসলিম পরিবারগুলোয়। এশার নামাজের পর সারা দেশে মসজিদগুলোয় খতম তারাবিহর প্রথম জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীতে মসজিদগুলোয় এশার ওয়াক্ত থেকেই নামাজিদের উপস্থিতি বেড়ে যায়। অধিকাংশ বাড়িতেই বরাবরের চেয়ে তুলনামূলক আগেই রাতের খাবার পর্ব শেষ করা হয়। গৃহিণীরা প্রস্তুতি নেন শেষরাতে সাহ্‌রির খাবারের আয়োজন করতে।

সকালে নাশতা তৈরি নিয়ে যে ব্যস্ততা থাকে, গতকাল তা ছিল না। বেলা গড়ানোর পর থেকে বাড়তে থাকে ইফতারের প্রস্তুতি। প্রথম রোজায় সবাই চেষ্টা করেছেন পরিবারে সবাইকে নিয়ে সাধ্যমতো উপাদেয় খাদ্য-পানীয় দিয়ে ইফতার করতে। রমজান উপলক্ষে অফিসের সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। সে কারণে চাকরিজীবীরা হাতের কাজ শেষ করে দ্রুত বাসাবাড়িতে ফেরার পথ ধরেন। অনেকে ফেরার আগে কাঁচাবাজার, ফলের দোকান, ইফতারির দোকানগুলোয় গেছেন কেনাকাটা করতে।

গতকাল হোটেল–রেস্তোরাঁর ঝাঁপ ছিল বন্ধ। ফুটপাতের চায়ের দোকানগুলোর সামনেও পর্দা ঝুলিয়ে খানাপিনার দৃশ্যে আড়াল টানা হয়। দুপুরের পর পাড়া–মহল্লার মোড়ে, হোটেল–রেস্তোরাঁর সামনে বসে যায় ঝাল-মিষ্টি, ভাজাপোড়ার হরেক রকম উপকরণ সাজিয়ে ইফতারির পসরা।

ইফতারে মুড়ি, ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, জিলাপি, বুন্দিয়া—এগুলোই বাঙালির প্রধান ও প্রিয় খাবার। এর সঙ্গে থাকে মাংস, সবজির বিভিন্ন ধরনের পদ, পরোটা, বিরিয়ানি ও মিষ্টি। মাংসের অনেক রকমের কাবাব, ভুনা, রোস্ট এসব দিয়ে ইফতার করতে পছন্দ করেন ঢাকার বাসিন্দারা। এর পাশাপাশি হালিমও ইফতারের তালিকায় বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। সারা দিনের তৃষ্ণা নিবারণ ও শরীরে পানির ঘাটতি পূরণের জন্য ডাব বা লেবুর শরবতই অনেকের কাছে প্রিয়।

পুরান ঢাকার চকবাজারে চকশাহি মসজিদের সামনে পয়লা রমজান দুপুর থেকে বসে ইফতারির বাজার। বহু বছর ধরে চলছে এই বৈচিত্র্যময় ইফতারসামগ্রীর পসরা। বেইলি রোডের ইফতারিও বিখ্যাত। বিকেলে দেখা গেল ক্যাপিটাল কনফেকশনারির আয়োজনে বসেছে ইফতারির বাজার। এবার এখানে আছে ১০০ রকম পদ। জিলাপির কেজি ৪০০ টাকা। পাশেই নবাবি ভোজের ইফতারির পসরায় আছে ৫০ রকমের পদ। ব্যবস্থাপক ইমাম হোসেন জানালেন, তাঁদের কাচ্চি, মোরগ–পোলাও ৩০০ ও স্পেশাল গরুর তেহারি ৩৫০ টাকা। জ্যাগেরি রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক জানালেন তাঁদের ইফতারির তালিকায় আছে প্রায় ৬০টি পদ। গরুর হালিম ৩৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ আর খাসির হালিম ৪০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। বেইলি পিঠাঘর এখন সাজিয়েছে ৩০ রকমের ইফতারির পসরা।

সেগুনবাগিচায় রয়্যাল অ্যারোমা কারি অ্যান্ড কাবাব তাদের রেস্তোরাঁর সামনে শামিয়ানা টাঙিয়ে তার তলায় সাজিয়েছে প্রায় অর্ধশত পদের ইফতারি। ব্যবস্থাপক সবুজ মিয়া বললেন, তাঁরা দাম বাড়াননি। ইফতারিতে লাভ কম করে বেশি মানুষের হাতে উপাদেয় খাবার তুলে দেওয়ারই চেষ্টা করছেন তাঁরা।

দুপুরের পর থেকেই ইফতারির দোকানগুলোয় বেচাকেনার ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়। পথে যানজট ও যানবাহনেও যাত্রীদের ভিড়ও ছিল বেশি। বেলা যখন অস্তাচলে, ইফতারি সামনে নিয়ে বসেছেন রোজাদাররা। সারা দিন পানাহারে বিরত থেকে অপেক্ষা মাগরিবের আজানের ধ্বনির জন্য। ইফতারি মুখে তোলার আগে পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে নিজেদের রোজা কবুল ও পাপ মার্জনার জন্য সবিনয়ে কাতর প্রার্থনা করেছেন। আরও প্রার্থনা করেছেন, তিনি যেন তৌফিক দেন রমজানের সংযমের শিক্ষায় আত্মশুদ্ধি করে নিতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ