প্রায় ২৫ বছর ধরে বাড়ি নির্মাণ করে জোড়াপাম্প এলাকায় বসবাস করেন গোলাম মোস্তফা। সামান্য বৃষ্টি হলেই তাঁর বাড়ির আঙিনা তলিয়ে যায়। একবার জলাবদ্ধতা দেখা দিলে মাসের পর মাস দুর্ভোগ কাটে না। দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের এই এলাকার মানুষকে এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
গতকাল শনিবার সরেজমিন ওই এলাকাবাসীর যন্ত্রণা দেখা যায়। গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এখন তো বৃষ্টি নেই। তারপরও আমার বাড়িতে ময়লা পানি জমে আছে।’ পৌরসভায় অনেকবার এ বিষয় নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করেছেন গোলাম মোস্তফা। আশ্বাস মিললেও সমাধান আর মেলেনি।
গোলাম মোস্তফার বাড়ির পাশে একটি পুরোনো নালা রয়েছে। পৌরসভার লোকজনের সেটি নিয়মিত পরিষ্কার করার কথা। কিন্তু তারা কোনো কাজই করেন না। যে কারণে জমে থাকা পানি বের হতে পারছে না। পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান দাবি করেন তিনি। 
এলাকার ১১টি পরিবারের দুর্ভোগ বেশি। নালা উপচে আশপাশের দুর্গন্ধযুক্ত পানি তাদের আঙিনায় জমে আছে। এই নোংরা পানি মাড়িয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। দেখা গেছে, পুরো এলাকা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠেছে। নিচু জমিতে ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছিল। আশপাশের এলাকা মাটি ভরাট করায় উঁচু হয়ে গেছে। এসব এলাকার পানির পাশাপাশি শিল্প-কারখানার বর্জ্যমেশা পানি সরু নালা দিয়ে আগে বেরিয়ে যেত। এখন উঁচু করে ঘরবাড়ি তৈরি করায় সেই নালা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পানি আর সরতে পারছে না।
একটি বাড়িতে ছয় মাস ধরে ভাড়ায় থাকেন রাজীব হোসেন, মফিজুল ইসলাম ও রাসেদুল আলম। তারা বলেন, বৃষ্টি হলে পানি জমে 
থাকে। এখন তো বৃষ্টি নেই, তারপরও নোংরা পানি বাড়িতে ঢুকে পড়ছে। এবারের পানি এক মাস ধরে আটকে আছে। যে কারণে পরিবারের সদস্যদের ভোগান্তির শেষ নেই। 
স্থানীয় দোকানি সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার মুদির দোকানের সামনেও প্রায় সময়ই ময়লা পানি চলে আসে। সারাক্ষণ পচা দুর্গন্ধ তো আছেই। আমরা এর প্রতিকার চাই।’
৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রশাসক মো.

মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিচ্ছি। দ্রুতই 
একজন প্রকৌশলীকে পাঠিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেব। দ্রুতই সেখানকার বাসিন্দাদের সমস্যার সমাধান করা হবে।’
 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

তরুণদের দলকে স্বাগত জানালেন জ্যেষ্ঠরা

গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজনীতিবিদরা। তবে এই দলের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করেছেন কেউ কেউ।

নানামুখী আলোচনার পর জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে আজ শুক্রবার। দলটির আহ্বায়ক হচ্ছেন সদ্য উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগকারী নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব হচ্ছেন আখতার হোসেন। যারা জুলাই অভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ প্রসঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার বর্ধিত সভার বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি সব নতুন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে স্বাগত জানায়। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রহণ কিংবা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে জনগণ।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সমকালকে বলেছেন, ‘নতুন দল যারা গঠন করছেন, তাদের আদর্শ-উদ্দেশ্য, লক্ষ্য এবং গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে কিছুই জানি না। তারা কী পুঁজিবাদ না-কি সমাজতন্ত্রের পক্ষে? শোষক না-কি মেহনতি শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে? এগুলোর কিছুই তারা পরিস্কার করেননি। আগামীদিনে তাদের পথচলার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হবে তারা কোন ধরনের রাজনীতি করতে চান। তারপরও আমি মনে করি, প্রতিটি নাগরিকের রাজনৈতিক দল করার অধিকার আছে। এই বিবেচনা ও রাজনীতির মানুষ হিসেবে আমি এটাকে স্বাগত জানাই।’

ডাকসুর সাবেক ভিপি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, নতুন দল গঠনের উদ্যোগকে একটা দিক দিয়ে ইতিবাচক বলবো। সেটা হচ্ছে- এতদিন যারা বলে এসেছেন, রাজনীতি ও রাজনীতিবিদরা খুবই খারাপ কিংবা তারাই দেশের বর্তমান দুর্দশার জন্য দায়ী, এখন তাদের মাধ্যমেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হচ্ছে। তারপরও আশা করবো- তারা যেন সাধারণ ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য রাজনীতি করেন এবং সেভাবে কর্মসূচি নেন। তাহলে জনগণও তাদের ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করবে।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক ভিপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আমরা নতুন দল গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তারা দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমরা সেখানে যাবো। একইসঙ্গে তারা ইতিবাচক রাজনীতি করবেন বলেও আমরা প্রত্যাশা করছি।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও ডাকসুর আরেক সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘তারা যদি রাজনীতি করতে চান, তাহলে সেটা প্রকাশ্য হতে এতদিন লাগলো কেন, সেটা আমি বুঝতে পারি না। তাছাড়া তারা তো একটা নয়, ছাত্র সংগঠন ও রাজনৈতিক দল গঠন এবং আগের নাগরিক কমিটিকে বহাল রাখার মাধ্যমে একইসঙ্গে তিনটা সংগঠন গঠনের কথা বলছেন। আমরা যেভাবে ট্রাডিশনালি রাজনৈতিক দল গঠন করি, এটা তার সঙ্গে ঠিক যাচ্ছে না। তারপরও বলবো- আমি যেকোনো রাজনৈতিক উদ্যোগের পক্ষে। যত বেশি মানুষ রাজনীতি করবেন, ততই দেশের মঙ্গল। কিন্তু সেই রাজনীতিটা যেন ইতিবাচক হয়, সেটাই আশা করবো।’

তিনি বলেন, যারা এই দলটি গঠন করছেন, তাদের ন্যারেটিভ কী, রাজনৈতিক বক্তব্যটাই বা কী- সেটা এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি। আপাতত এটুকু বলবো- তারা যাত্রা শুরু করেছেন এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে শুভাকাঙ্খী হিসেবে তাদের সাফল্য কামনা করবো। একইসঙ্গে দেখতে থাকবো- তারা কীভাবে কতদূর যান।

নতুন ছাত্র সংগঠনের কমিটি ঘোষণা নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে সহিংসতার প্রশ্নে মান্না বলেন, দ্বন্দ্ব নিরসন করতে পারেননি তারা। এটাও একটা ভাববার বিষয় বটে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইলন মাস্কের সম্পদমূল্য কমেছে ৫২০০ কোটি ডলার, তারপরও শীর্ষ ধনী
  • তরুণদের দলকে স্বাগত জানালেন জ্যেষ্ঠরা