অনলাইন আয়কর রিটার্নে দেশীয় প্রযুক্তির সাফল্য
Published: 1st, March 2025 GMT
দেশের অনলাইন আয়কর রিটার্নে বড় সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অনলাইনে রিটার্ন জমার হার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩০০ শতাংশ বেড়েছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠান সিনেসিস আইটি এই ই-রিটার্ন সিস্টেমটি তৈরি করে দিয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৪ লাখ ৪৩ হাজারেরও বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ২৬ হাজারের মতো। নতুন অর্থবছরে (২০২৫-২৬) ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন করেছেন ১৮ লাখ ৬২ হাজারের বেশি করদাতা।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান জানিয়েছেন, এবারের ই-রিটার্ন জমা দেওয়ায় নতুন ধারা সৃষ্টি হয়েছে। এনবিআর যা ধরে রাখতে চায়। তিনি উল্লেখ করেন, এনবিআর দেশীয় সফটওয়্যারের ওপরে ভরসা রাখতে চায়। দেশি সফটওয়্যার ব্যবহারের কারণে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০২০ সালের করোনা মহামারির সময় অনলাইনে রিটার্ন জমা নিতে এনবিআরের ওপর চাপ তৈরি হয়। সে সময় আয়কর বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় সিনেসিস আইটি মাত্র চার মাসে ই-রিটার্নের প্রথম ভার্সন তৈরি করতে সক্ষম হয়। বর্তমানে ই-টিআইএন সিস্টেমে ১ কোটি ১৭ লাখের বেশি নিবন্ধন হয়েছে যা দেশের অন্যতম বড় ডেটাবেইজ।
২০১৩ সালে ই-টিআইএনের মাধ্যমে আয়কর বিভাগ প্রথম অটোমেশন কার্যক্রম শুরু করে, যার শুরু সিনেসিস আইটির হাত ধরে।
সিনেসিস আইটির প্রধান সলিউশন অফিসার আমিনুল বারী শুভ্র বলেন, ‘সরকার ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রচেষ্টার সফল উদাহরণ হলো ই-রিটার্ন। কর ব্যবস্থার ডিজিটাল রূপান্তরে এটি একটি বড় মাইলফলক। ই-রিটার্ন সিস্টেমের ডিজাইনে সাইবার নিরাপত্তা এবং করদাতার ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।’
অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো এখন আন্তর্জাতিক মানের সলিউশন ডেভেলপ করছে। তাই সে ক্ষেত্রে বিদেশি সফটওয়্যার কেনার মানে নেই। তিনি বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে।
সিনেসিস জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ইউরোপ, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের এই ই-রিটার্ন সিস্টেম গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং একটি দেশের সঙ্গে চুক্তির আলোচনা চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আয়কর স ন স স আইট
এছাড়াও পড়ুন:
লালমনিরহাটে মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ভাঙার প্রতিবাদ উদীচীর
লালমনিরহাট শহরের বিডিআর রোডে শিশুপার্ক–সংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্মারক মঞ্চে স্থাপিত ম্যুরালের একাংশ ভেঙে ফেলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। ম্যুরালটি ভাঙার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ সোমবার এক বিবৃতিতে উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, ১৪০ ফুট দীর্ঘ ম্যুরালটিতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধ, মুজিবনগর সরকার, ’৭১-এর গণহত্যা, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণসহ জাতির গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা চিত্রিত ছিল। যা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশকে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলছিল। এই ম্যুরাল দেখে সাধারণ মানুষ তথা তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারত। বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের আগে দুই দফা ম্যুরালটি ঢেকে রাখা হয়। তখন জেলা প্রশাসক দাবি করেছিলেন, চব্বিশের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে এটি ঢেকে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুনলালমনিরহাট মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্মারক মঞ্চের ঢেকে রাখা ম্যুরালের কিছু অংশ ভাঙা হয়েছে৫ ঘণ্টা আগেউদীচীর বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানের মূল চেতনা কোনোভাবেই একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। দুটি ক্ষেত্রেই মূল লক্ষ্য ছিল বৈষম্য থেকে মুক্তি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পেলেও বৈষম্য থেকে মুক্তি না পাওয়ার কারণেই সাধারণ মানুষকে ১৯৯০ বা ২০২৪ সালের মতো বারবার রাজপথে আন্দোলন করতে হয়েছে, আত্মাহুতি দিতে হয়েছে; কিন্তু ’৭১ ও ’২৪–কে মুখোমুখি বা সাংঘর্ষিক অবস্থানে নেওয়ার কথা বলে একটি অপশক্তি সচেতনভাবে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এই অপচেষ্টা প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে দেরি না করে ম্যুরালটি সংস্কার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন উদীচীর নেতারা।
আরও পড়ুন‘জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতীয়মান না হওয়া’য় ঢেকে রাখা হলো মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল২৭ মার্চ ২০২৫