তাড়াশ পৌর সদরের খাঁনপাড়ার ৮০ বছর বয়সী মো. আবু বক্কর খাঁন। সরকারিভাবে বয়স্কভাতা সুবিধা পাচ্ছেন প্রায় দেড় দশক হলো। আগে কখনও টাকা তুলতে সমস্যায় পড়তে হয়নি তাঁর। সম্প্রতি তিনি তাঁর ভাতা স্থানীয় এজেন্ট ব্যাংকের শাখা থেকে তুলতে যান। বায়োমেট্রিক যন্ত্রে আঙুলের ছাপ না মেলায় টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না। বারবার চেষ্টার পরও ছাপ না মেলায় ভাতার টাকা উত্তোলন করতে না পেরে অর্থ সংকটে কষ্টে আছেন তিনি। 
একই অবস্থা উপজেলার তাড়াশ গ্রামের উত্তরপাড়ার মোছা.

তছিরনের। তাঁর ভাষ্য, আগে বায়োমেট্রিক যন্ত্রে আঙুলের ছাপ মিললেও এখন তা মিলছে না। এ কারণে তিনি ব্যাংকে বারবার ধরনা দিয়েও ভাতার টাকা তুলতে পারেননি। আবু বক্কর ও তছিরনের মতো উপজেলার বয়স্ক অন্তত ১১শ থেকে ১২শ জন ভাতাভোগী ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সমাজসেবা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, উপজেলার আটটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌর এলাকায় বয়স্কভাতা পান ৯ হাজার ৬০২ জন। ৫ হাজার ৭০০ জন পান প্রতিবন্ধী ভাতা। এ ছাড়া বিধবা ৫ হাজার ৮৫১, হিজড়া ১০, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ৫০ জনসহ ২১ হাজার ৪২০ জন ভাতাভোগী রয়েছেন। তাদের সবাই একটি ব্যাংকের অন্তত ২০টির মতো এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা থেকে ভাতার টাকা উত্তোলন করেন।
জানা গেছে, ভাতাভোগীদেরর মধ্যে বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও বিধবাদের মধ্যে সরকারি আর্থিক সুবিধা পাওয়া বা ভাতাভোগী প্রায় ১১শ থেকে ১২শ জনের আঙুলের ছাপ বায়োমেট্রিক যন্ত্রে মিলছে না। এতে তারা ভাতার টাকা তুলতে পারছেন না। ফলে তারা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। বিষয়টি সমাধানে উপজেলা সমাজসেবা ও ব্যাংকে ঘুরতে ঘুরতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে জানান তছিরন।
তাঁর ভাষ্য, ভাতার টাকায় ওষুধ, খাবারসহ কিছু ব্যক্তিগত খরচ মেটান। আঙুলের ছাপ না মেলায় তা তুলতে না পেরে বেকায়দায় আছেন তিনি। ভাতার টাকা পাওয়ার আশায় একবার ব্যাংকে, একবার সমাজসেবা অফিসে ঘুরতে হচ্ছে। তারপরও কাজও শেষ হয়নি। টাকা তুলতে পারেননি তিন মাস।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বায়োমেট্রিক যন্ত্রে আঙুলের ছাপ দিলেও যাদের মিলছে না, তাদের বেশির ভাগই বয়স্ক। মূলত বয়সের কারণে বা আঙুলের ত্বক নষ্ট হলে কিংবা শীতকালে এমনটি হয়। এ সংখ্যা উপজেলায় হাজারেরও বেশি। ব্যাংকের মামুনুর রহমান বলেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার প্রত্যয়নে নমিনি বা ভাতাভোগীর আঙুলের ছাপ নিয়ে নতুন করে বায়োমেট্রিক যন্ত্রে সংযুক্ত করা হচ্ছে। এভাবে তিন-চার মাসে ৭০০ থেকে ৮০০ জন ভাতাভোগীর টাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখনও অনেকের আঙুলের ছাপ না মেলায় টাকা তুলতে পারছেন না।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস হাসান শেখ বলেন, দুই মাসে প্রত্যয়ন দিয়ে বায়োমেট্রিক যন্ত্রে আঙুলের ছাপ না মেলা অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন ভাতাভোগীর টাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা হয়েছে। এ ছাড়া নমিনি বা ভাতাভোগীর আঙুলের ছাপ নিয়ে নতুন করে তা বায়োমেট্রিক যন্ত্র সংযুক্ত করা হচ্ছে। ছাপ না মেলা ভাতাভোগীর ভাতা পেতে সমাধান কার্যক্রম চলছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জন ভ ত ভ গ উপজ ল বয়স ক

এছাড়াও পড়ুন:

তরুণ আলেম প্রজন্ম ২৪–এর কার্যকরী পরিষদ গঠন

তরুণ আলেম প্রজন্ম ২৪-এর কার্যকরী পরিষদ গঠন করা হয়েছে। নির্বাহী পরিষদের সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত প্রস্তাবনা মোতাবেক সংগঠনটির ৪৭ সদস্য বিশিষ্ট এই কার্যকরী পরিষদ গঠিত হয়েছে।

রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি। নির্বাহী কমিটিতে এহসানুল হককে সভাপতি ও হুজাইফা ইবনে ওমরকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আর সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন জামিল সিদ্দিকী।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আলেম-শিক্ষার্থীদের অবদানকে সমুন্নত রাখতে অভ্যুত্থানের চেতনায় বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে বেগবান করতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে জুলাই অভ্যুত্থানের অংশীদার আলেম-শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন তরুণ আলেম প্রজন্ম-২৪ গঠিত হয়। পরবর্তীতে সংগঠনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে একটি কার্যকরী পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাহী পরিষদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ