মেলে না আঙুলের ছাপ ভাতাভোগী বিড়ম্বনায়
Published: 1st, March 2025 GMT
তাড়াশ পৌর সদরের খাঁনপাড়ার ৮০ বছর বয়সী মো. আবু বক্কর খাঁন। সরকারিভাবে বয়স্কভাতা সুবিধা পাচ্ছেন প্রায় দেড় দশক হলো। আগে কখনও টাকা তুলতে সমস্যায় পড়তে হয়নি তাঁর। সম্প্রতি তিনি তাঁর ভাতা স্থানীয় এজেন্ট ব্যাংকের শাখা থেকে তুলতে যান। বায়োমেট্রিক যন্ত্রে আঙুলের ছাপ না মেলায় টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না। বারবার চেষ্টার পরও ছাপ না মেলায় ভাতার টাকা উত্তোলন করতে না পেরে অর্থ সংকটে কষ্টে আছেন তিনি।
একই অবস্থা উপজেলার তাড়াশ গ্রামের উত্তরপাড়ার মোছা.
সমাজসেবা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, উপজেলার আটটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌর এলাকায় বয়স্কভাতা পান ৯ হাজার ৬০২ জন। ৫ হাজার ৭০০ জন পান প্রতিবন্ধী ভাতা। এ ছাড়া বিধবা ৫ হাজার ৮৫১, হিজড়া ১০, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ৫০ জনসহ ২১ হাজার ৪২০ জন ভাতাভোগী রয়েছেন। তাদের সবাই একটি ব্যাংকের অন্তত ২০টির মতো এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা থেকে ভাতার টাকা উত্তোলন করেন।
জানা গেছে, ভাতাভোগীদেরর মধ্যে বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও বিধবাদের মধ্যে সরকারি আর্থিক সুবিধা পাওয়া বা ভাতাভোগী প্রায় ১১শ থেকে ১২শ জনের আঙুলের ছাপ বায়োমেট্রিক যন্ত্রে মিলছে না। এতে তারা ভাতার টাকা তুলতে পারছেন না। ফলে তারা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। বিষয়টি সমাধানে উপজেলা সমাজসেবা ও ব্যাংকে ঘুরতে ঘুরতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে জানান তছিরন।
তাঁর ভাষ্য, ভাতার টাকায় ওষুধ, খাবারসহ কিছু ব্যক্তিগত খরচ মেটান। আঙুলের ছাপ না মেলায় তা তুলতে না পেরে বেকায়দায় আছেন তিনি। ভাতার টাকা পাওয়ার আশায় একবার ব্যাংকে, একবার সমাজসেবা অফিসে ঘুরতে হচ্ছে। তারপরও কাজও শেষ হয়নি। টাকা তুলতে পারেননি তিন মাস।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বায়োমেট্রিক যন্ত্রে আঙুলের ছাপ দিলেও যাদের মিলছে না, তাদের বেশির ভাগই বয়স্ক। মূলত বয়সের কারণে বা আঙুলের ত্বক নষ্ট হলে কিংবা শীতকালে এমনটি হয়। এ সংখ্যা উপজেলায় হাজারেরও বেশি। ব্যাংকের মামুনুর রহমান বলেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার প্রত্যয়নে নমিনি বা ভাতাভোগীর আঙুলের ছাপ নিয়ে নতুন করে বায়োমেট্রিক যন্ত্রে সংযুক্ত করা হচ্ছে। এভাবে তিন-চার মাসে ৭০০ থেকে ৮০০ জন ভাতাভোগীর টাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখনও অনেকের আঙুলের ছাপ না মেলায় টাকা তুলতে পারছেন না।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস হাসান শেখ বলেন, দুই মাসে প্রত্যয়ন দিয়ে বায়োমেট্রিক যন্ত্রে আঙুলের ছাপ না মেলা অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন ভাতাভোগীর টাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা হয়েছে। এ ছাড়া নমিনি বা ভাতাভোগীর আঙুলের ছাপ নিয়ে নতুন করে তা বায়োমেট্রিক যন্ত্র সংযুক্ত করা হচ্ছে। ছাপ না মেলা ভাতাভোগীর ভাতা পেতে সমাধান কার্যক্রম চলছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জন ভ ত ভ গ উপজ ল বয়স ক
এছাড়াও পড়ুন:
এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।
উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’
আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।
নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।
উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।