ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতারণা করে মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় চাকরি, সাবেক পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার
Published: 1st, March 2025 GMT
প্রতারণা করে মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় সরকারি চাকরি করার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার মো. সুমন (৩১) নামের পুলিশের এক সাবেক কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার রাতে আখাউড়া সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি মুক্তিযোদ্ধার নাতির পরিচয়ে এক যুগ পুলিশ কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
গ্রেপ্তার মো.
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মো. সুমন ২০১২ সালে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পরীক্ষায় অংশ নেন। নিয়োগের সময় মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় চাকরির জন্য প্রতিবেশী সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মো. হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা পুরুষ (নাতি) কোটায় চূড়ান্তভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি ট্রেনিং সেন্টারে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ নেন সুমন। ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগ দেন তিনি। ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর স্থানীয় যুবক মো. ফরহাদ মিয়া এ প্রতারণার বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগটি তৎকালীন কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেনকে তদন্তের নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার। পুলিশ কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিবেদন দেন। সেখানে কনস্টেবল সুমনের প্রতারণার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সুমন শুক্রবার ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন, এমন সংবাদের ভিত্তিতে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য়
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের অর্থনীতিতে সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আরেকটি পূর্বাভাস
২০২৫–২৬ অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতিতে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। ইওয়াই ইকোনমি ওয়াচ নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই পূর্বাভাস দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ভারতের উন্নয়ন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতিপ্রকৃতি ও অর্থনৈতিক নীতিমালা পর্যালোচনা করে থাকে।
ইওয়াই ইকোনমি ওয়াচের প্রতিবেদনে অর্থনীতির পাশাপাশি শিক্ষা খাতের উন্নয়ন নিয়েও জোর দেওয়া হয়েছে। তারা বলছে, এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে সরকারের শিক্ষাব্যয় ২০৪৮ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনের ৬ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রয়োজন রয়েছে। খবর ভারতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের
প্রতিষ্ঠানটির নতুন পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ১ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া ২০২৫–২৬ অর্থবছরে ভারতীয় অর্থনীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হতে পারে। ইওয়াই ইকোনমি ওয়াচ বেশ জোর দিয়েই বলেছে, মানবপুঁজি উন্নয়নকে সমর্থন করে—এমন একটি সুপরিকল্পিত রাজস্ব কৌশল প্রয়োজন, যা আর্থিক কার্যক্রমে গতিশীলতা বজায় রাখে এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারে।
প্রতিষ্ঠানটির চলতি মার্চ সংস্করণে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ সমাপ্য অর্থবছরে ভারতের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০২৫–২৬ অর্থবছরে খানিক বেড়ে সাড়ে ৬ শতাংশে উন্নীত হবে। তবে ওই হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে ভারতের রাজস্ব নীতি পুনর্বিন্যাস করতে হবে, যাতে বিকশিত ভারত অভিযাত্রা সফল করে তোলা যায়।
গত মাসে জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের (এনএসও) সংশোধিত প্রাক্কলনে ২০২৩ থেকে ২০২৫ অর্থবছরে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, ৯ দশমিক ২ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০২৪–২৫ অর্থবছরের শেষ ত্রৈমাসিক অক্টোবর–ডিসেম্বরে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমক ২ শতাংশ হয়েছে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে। এই হার চতুর্থ ত্রৈমাসিক তথা জানুয়ারি–মার্চে আরও বেড়ে ৭ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়াবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইওয়াই ইকোনমি ওয়াচ। তবে আগামীকাল সোমবার শেষ হতে যাওয়া চলতি অর্থবছরের জন্য ভারতের জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয় (এনএসও) বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
ইওয়াই ইকোনমি ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে জিডিপিতে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে বেসরকারি পর্যায়ের চূড়ান্ত ভোগব্যয়ে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অবশ্য ভারতের অর্থনীতিতে এত উচ্চ প্রবৃদ্ধি আর কখনো দেখা যায়নি।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা ফিচ রেটিংও ভারতের অর্থনীতি নিয়ে আগামী দুই বছরের জন্য পূর্বাভাস দিয়েছে। তারা বলেছে, ২০২৫-২৬ আর্থবছরে ভারতের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এর পরের অর্থাৎ ২০২৬-২৭ অর্থবছরে তা ৬ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে যেতে পারে। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ।