‘দায় ও দরদের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করবে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’
Published: 1st, March 2025 GMT
একটি সুস্থ ধারার মেধা ও মনন এবং দায় ও দরদের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ যাত্রা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন সদ্য আত্মপ্রকাশ করা সংগঠনের সদস্য সচিব জাহিদ আহসান।
শনিবার (১ মার্চ) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রায়েরবাজারে কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত হয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জিয়ারত করে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছে ছাত্র সংগঠনটি। জিয়ারত শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ আহসান বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশে কোন সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি হয়নি। বরং ছাত্র রাজনীতির নামে ক্যাম্পাসগুলোতে ট্যাগিং কালচার, মাদার পার্টির এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য পুরো ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে রাখার প্রচেষ্টা দেখেছি। এজন্য একটি সুস্থ ধারার মেধা ও মনন এবং দায় ও দরদের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ যাত্রা শুরু করেছে।”
আরো পড়ুন:
ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পরিচিতি সভা
রাজধানীর লোকাল বাসে মারধরের শিকার ঢাবি শিক্ষক
জুলাই গণঅভ্যুত্থান নতুন ছাত্র সংগঠনের শক্তি ও ভিত্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা মোহাম্মদপুর রায়েরবাজার জুলাই-আগস্টে শহীদ পরিবার ও যাদের পরিবার তাদের লাশ খুঁজে পায়নি, এমন ব্যক্তিদের কবর জিয়ারত করেছি। এ গণঅভ্যুত্থান বাদ দিয়ে বাংলাদেশে আগামীতে কোন রাজনীতি হবে না।"
তিনি আরো বলেন, “মানুষ যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল, সেই আশা-আকাঙ্ক্ষাই হবে বাংলাদেশের রাজনীতির মূল ভিত্তি। শহীদদের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা প্রতিজ্ঞা করছি, যে দায় ও দরদের জন্য তারা জীবন দিয়েছেন, আমরা তা ধারণ করব। আমরা ভুল করলে শুধরে দেবেন, ভালো করলে বাহবা দেবেন।”
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও তারুণ্যের স্বপ্ন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ভিত্তি। আমাদের শহীদ ভাই ও সহযোদ্ধারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাসিনার পতন ঘটিয়েছে। একটি গণঅভ্যুত্থানের দুটি শর্ত থাকে। বিদ্যমান ব্যবস্থা উপড়ে ফেলা এবং নতুন বন্দোবস্ত হাজির করা। আমরা প্রথম দায়িত্ব পালন করেছি। এখন আমাদের দায়িত্ব হলো নতুন বন্দোবস্ত হাজির করা।”
তিনি বলেন, “ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তি, দাসত্ব ও জিম্মি করে রাখার যে সংস্কৃতি ছিল, তা উপড়ে নতুন ব্যবস্থা হাজির করতে চায়। ছাত্রদের ব্যবহার করে যেভাবে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রাখছে, তা আমরা উপড়ে ফেলতে চাই।”
অন্যদের মাঝে আরো বক্তব্য দেন সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব মহির আলম, মুখ্য সংগঠক হাসিব আল ইসলাম প্রমুখ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন দ য় ও দরদ র র র জন ত র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত সুমাইয়ার বাড়িতে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ
ছাত্রজনতার আন্দোলনে গত বছরের ২০ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদিতে ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান গার্মেন্টসকর্মী সুমাইয়ার আক্তার। তার পরিবার ও শিশু সুয়াইবার সঙ্গে ঈদুল ফিতরের দিন (সোমবার) দেখা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুলাহ আল আমিন, তামিম আহমেদ ও দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত জামিল। এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম শহীদ সুমাইয়ার মায়ের হাতে ঈদ উপহার ও আর্থ সহায়তা করেন।
সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদিতে গত বছরের জুলাই মাসে ছাত্রজনতার গণআন্দোলনে ঘরের বরান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা গার্মেন্টর্কমী সুমাইয়া আক্তার (২০) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছিলেন। মারা যাওয়ার সময় সুমাইয়া আড়াই মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রেখে যান। মা হারা সেই সুয়াইবার প্রথম ঈদ কাটলো আজ। এখন সুয়াইবার বয়স প্রায় ১০ মাস।
সুয়াইবার বাবা জাহিদও তার কোনো খোঁজখবর নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সুমাইয়ার পরিবার। এজন্যই মা-বাবাহীন সুয়াইবার ঈদ কাটছে নানি-খালা-মামার স্নেহ ভালবাসায়। দেশব্যাপী ছাত্র-জনতা যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় কাঁচপুর থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদিতে বাবা মায়ের কাছে বেড়াতে এসেছিলেন সুমাইয়া তার শিশু সুয়াইবাকে নিয়ে। আন্দোলনের সময় বাড়ির চার তলায় শিশু সুয়াইবাকে ঘুম পাড়িয়ে ২০ জুলাই বিকেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আন্দোলনের দৃশ্য দেখছিলেন সুমাইয়া। হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া একটি গুলি বারান্দার গ্রিল দিয়ে ঢুকে তার মাথায় বিদ্ধ হয়। এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন সুমাইয়া। তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও সড়কেই মৃত্যু হয় সুমাইয়ার।