হ্যাকম্যানের মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্যকর তথ্য
Published: 1st, March 2025 GMT
গত বুধবার অস্কারজয়ী মার্কিন অভিনেতা জিন হ্যাকম্যান ও তাঁর স্ত্রী বেটসি আরাকাওয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদের মৃত্যুর রহস্য এখনো পুরো খোলাসা হয়নি। এদিকে তাঁদের মৃত্যু ঘিরে প্রকাশ্যে এসেছে নতুন তথ্য, যা উসকে দিয়েছে নতুন প্রশ্ন।
জিন হ্যাকম্যানের রহস্যজনক মৃত্যুতে সারা দুনিয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নিউ মেক্সিকোর সান্তা ফে এলাকায় একটি আবাসনের কটেজে বুধবার জিন, তাঁর স্ত্রী ও পোষা কুকুরকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
অনেকেই অনুমান করেছিলেন, কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়ায় হ্যাকম্যান ও বেটসির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে কার্বন মনোক্সাইড পরীক্ষায় দুজনই নেগেটিভ। এদিকে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে সান্তা ফের শেরিফ অ্যাডান মেনডোজা জানিয়েছেন, মরদেহ উদ্ধারের ৯ দিন আগেই হ্যাকম্যানের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে! তিনি বলেন, ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হ্যাকম্যানের কার্যক্রম সম্পর্কে জানা যায়, সেটিই ছিল সম্ভবত তাঁর জীবনের শেষ দিন।
জিন হ্যাকম্যান। এএফপি ফাইল ছবি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ য কম য ন র
এছাড়াও পড়ুন:
পাঁচ বছরে অনলাইন থেকে শোরুম
প্রত্যেক নারীর সফলতার পেছনে থাকেন তিনি নিজেই। কারণ তাঁর ইচ্ছাশক্তি এবং মনোবল তাঁকে নিয়ে যেতে পারে বহুদূর। নিজের ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। করপোরেট জগৎসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে নারীর সংখ্যা বাড়ছে; সেই সঙ্গে নারীরা এখন পড়াশোনা করছেন, চাকরি করছেন; স্বাধীন উদ্যোক্তাও হচ্ছেন। তেমনই একজন ইয়াসমিন সুলতানা।
দেশের ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লার বিখ্যাত মোমবাটিক পোশাক নিয়ে ২০১৯ সালে অনলাইনে কাজ শুরু করেন ইয়াসমিন। চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের একটি মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা ইয়াসমিন সুলতানার বিয়ে হয়ে যায় অল্প বয়সে। স্বামীর চাকরিসূত্রে ঢাকার সাভারে তাঁর বসবাস।
শূন্য থেকে শুরু করে নিজের চেষ্টা, অধ্যবসায় ও কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে কীভাবে নিজের একটা আলাদা পরিচয় তৈরি করা যায়, তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অদম্য সংগ্রামী নারী ইয়াসমিন। আজ তিনি সফল নারী উদ্যোক্তা। এই পথটা সহজ ছিল না। অনেক কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। ইয়াসমিনের শৈশব ও কৈশোরের স্বর্ণালি দিনগুলো কাটে চাঁদপুরেই। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়ালেখা করেন সেখান থেকে। তখনও সবেমাত্র পড়ছিলেন উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষে। পারিবারিকভাবে হঠাৎ করে তাঁকে বিয়ে দেওয়া হয়। শ্বশুরবাড়িতে শুরু হয় নতুন জীবন। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সহযোগিতায় পাস করেন এইচএসসি। এর পরই তাঁর প্রথম সন্তানের জন্ম। এক বছর বিরতি দিয়ে অনার্সে ভর্তি হয়ে আরও দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তিনি। পড়ালেখা করে চাকরি পাওয়া যেমন সহজ নয়; তেমনি স্বামী-সংসার সামলে চাকরি করতে পারাটাও ভীষণ কঠিন। এমনটা ভেবেই অন্যভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চিন্তা মাথায় আসে তাঁর। স্বামীর দেওয়া হাত খরচের সামান্য কিছু টাকা জমিয়ে শুরু করেন দেশীয় পণ্যের অনলাইন ব্যবসা।
শুরুতেই বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লার বিখ্যাত মোমবাটিকের বাহারি ডিজাইনের মেয়েদের থ্রি-পিস, ওয়ান পিস, ওড়না, হাতের কাজ করা শাড়ি, ব্লাউজ, বেডশিট তার ফেসবুক পেজ সঞ্চয়িতা থেকে লাইভে এসে প্রদর্শনী শুরু করেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতাকে তিনি দেশীয় পণ্যের ব্যাপারে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন। ক্রেতারা তার লাইভ দেখে নিজের পছন্দমতো পোশাক অর্ডার করতে শুরু করেন। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও মেলায় অংশগ্রহণ করে কুড়িয়েছেন অনেক সম্মাননা। পেয়েছেন আর্থিক সহযোগিতাও। অর্থনীতিতে অবদান রাখায় নিজ জেলা চাঁদপুর থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘চাঁদপুর প্রভাত সমাজকল্যাণ সংস্থা’ থেকে পেয়েছেন সম্মাননা। সম্প্রতি আশুলিয়া এলাকার মির্জানগর এনায়েতপুরে নিজ প্রতিষ্ঠানের একটি আউটলেট উদ্বোধন করেছেন।
উদ্যোক্তা হতে হলে কাজের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ অত্যাবশকীয় বলে মনে করেন ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ‘উদ্যোক্তা হওয়ার শুরুটা সহজ ছিল না। তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়াতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। তবু স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিইনি। এ কাজে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন আমার স্বামী।’ পরিবার-সংসার সামলে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়াটা কঠিন। সঠিক পরিকল্পনা, অধ্যবসায় ও পরিশ্রম থাকলে এটি সম্ভব বলে মনে করেন ইয়াসমিন। তিনি আরও বলেন, ‘এতদিন আমার স্বপ্ন ছিল, কবে একটি শোরুম হবে। আমার ক্রেতারা অনলাইনে পণ্য কেনার পাশাপাশি এখন সরাসরি শোরুমে এসেও দেখে বুঝে তাদের পছন্দসই পণ্য কিনতে পারবেন।’ v