নয়াদিল্লিতে ১৫ বছরের পুরোনো যানবাহন জ্বালানি পাবে না
Published: 1st, March 2025 GMT
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ১৫ বছরের বেশি পুরোনো যানবাহনকে জ্বালানি দেওয়া হবে না। নয়াদিল্লিতে ভয়াবহ দূষণের মাত্রা কমানোর অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। আজ শনিবার দিল্লি সরকার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর নিয়মিত তালিকায় ওপরের দিকে থাকা একটি শহর নয়াদিল্লি। প্রতিবছর শহরটি তীব্র ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে।
প্রাথমিকভাবে নয়াদিল্লির আশপাশে কৃষকেরা তাঁদের জমি পরিষ্কার করতে ফসলের খড় পোড়ান। এতে দূষণের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। এর সঙ্গে যানবাহন ও কলকারখানা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া এবং নির্মাণকাজের সময় ধুলাবালু বাতাসে মিশে দেশটিতে বায়ুদূষণ পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে। এ ছাড়া কনকনে ঠান্ডা এবং ধীরগতির বাতাস প্রতিবছর শীতে পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তোলে।
দিল্লির সড়কগুলোতে ১০ বছরের পুরোনো ডিজেলচালিত এবং ১৫ বছরের পুরোনো পেট্রলচালিত গাড়ি চালানোর অনুমোদন নেই। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই নিয়ম লঙ্ঘন করতে দেখা গেছে।
দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী মানজিনদর সিং আজ সাংবাদিকদের বলেছেন, বায়ুদূষণের কারণে সৃষ্ট রোগ ও এর প্রতিকার নিয়ে এক দীর্ঘ বৈঠক হয়। সেখানে পুরোনো গাড়িতে জ্বালানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মানজিনদর সিং সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ৩১ মার্চের পর থেকে ১৫ বছরের বেশি পুরোনো গাড়িতে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ পুরোনো যানবাহন শনাক্ত করতে পেট্রলপাম্পগুলোতে যন্ত্র ব্যবহার করা হবে বলেও তিনি জানান।
আরও পড়ুনদূষণ-মানচিত্রে শীর্ষে ভারত, ২০১৯ সালে মৃত্যু ২৩ লাখ১৮ মে ২০২২.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বেনুভিটা মানমন্দির থেকে ‘প্ল্যানেটারি প্যারেড’ দর্শন
চারপাশ নীরব-নিস্তব্ধ। এরই মাঝে রাতের আকাশে তাক করে রাখা টেলিস্কোপ। সেখানে চোখ রেখে কিছু মানুষ দেখছে ‘প্ল্যানেটারি প্যারেড’। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত এ আয়োজন ছিল গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বিন্দুবাড়ী এলাকার বেনুভিটা মানমন্দিরে। সেখানে বিরল মহাজাগতিক এ দৃশ্য দেখতে সমবেত হয়েছিল কিছু বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ। তাদের কেউ পর্বতারোহী, কেউ আবার সংস্কৃতি চর্চায় জড়িত।
নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ছিল খুদে শিক্ষার্থীরাও। আয়োজকরা জানান, পৃথিবী থেকে একসঙ্গে মঙ্গল, বৃহস্পতি, ইউরেনাস, শুক্র, নেপচুন, বুধ ও শনি গ্রহ দেখার জন্য তাদের এ আয়োজন। সৌরজগতের এই সাত গ্রহ এদিন এক কাতারে চলে আসে; যা জোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় ‘প্ল্যানেটারি প্যারেড’ বা গ্রহের কুচকাওয়াজ হিসেবে পরিচিত।
আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী কাবেরী জান্নাত বলেন, অভূতপূর্ব মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে পৃথিবীর মানুষ। সৌরজগতের সাতটি গ্রহ একসঙ্গে দেখতে পাওয়া গেল। এই দৃশ্য আবার দেখা যাবে ২০৪০ সালে। দিগন্তের নিম্নরেখায় অবস্থান করায় শনি গ্রহটিকে খালি চোখে দেখা যায়নি; টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখা গেছে। ইউরেনাস ও নেপচুন দেখতেও টেলিস্কোপের দ্বারস্থ হতে হয়েছে।
কাবেরী জান্নাত আরও বলেন, বিরল এ দৃশ্য দেখার জন্য সূর্যাস্তের পর কয়েক মিনিট মাত্র সময় পাওয়া যায়। এরপরই গ্রহগুলো দিগন্তে মিলিয়ে যায়। শুক্র, বৃহস্পতি ও মঙ্গল এই তিন গ্রহকে বেশ সময় ধরে দেখা গেছে। মহাজাগতিক পর্যবেক্ষক নূর মুহাম্মদ পরম যত্ন নিয়ে তাদের এই গ্রহের কুচকাওয়াজ দেখিয়েছেন। তিনিই প্রতিটি গ্রহের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে আকাশ পর্যবেক্ষণে সহযোগিতা করিয়েছেন।
পর্বতারোহী ও প্রশিক্ষক মহিউদ্দিন মাহীর সঙ্গে সেখানে ছিলেন তাঁর দলের
সদস্যরাও। বিরল এ দৃশ্য দেখতে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, খুব আনন্দ পেয়েছে এই প্ল্যানেটারি প্যারেড দেখে। আকাশে যে এত কিছু আছে, সেটা তাদের জানা ছিল না। মহাজগৎ সম্পর্কে তাদের আগ্রহ আরও বেড়েছে।