ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) রাজনীতি করা নয়টি ছাত্র সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে পরিচিতি সভা করেছে নবগঠিত ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’।

শনিবার (১ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এ সভার আয়োজন করে সংগঠনটি।

সভায় উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মানসুরা আলম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ঢাবি শাখার সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক খালিদ সাইফুল্লাহ জিহাদ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন খালিদ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু প্রমুখ।

আরো পড়ুন:

রাজধানীর লোকাল বাসে মারধরের শিকার ঢাবি শিক্ষক

সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করার অভিযোগ 

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার, সদস্য সচিব জাহিদ আহসান, মুখ্য সংগঠক তাহমীদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী, মুখপাত্র আশরেফা খাতুন, ঢাবি সংসদের আহ্বায়ক আব্দুল কাদের, সদস্য সচিব মহির আলম প্রমুখ।

সভায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, “জুলাইয়ে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছি। জুলাইয়ের পর এখনো আমরা সহাবস্থানের রাজনীতির চর্চা করছি। আশা করি, সহাবস্থানের এ ধারা বিরাজমান থাকবে। বাংলাদেশের প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করবো।”

তিনি বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে নয় দফার সপ্তম দফায় লেজুড়বৃত্তির বিরোধিতা করেছি। আমরা সামনেও লেজুড়বৃত্তির বিপক্ষে থাকব। ডাকসু এবং সব ছাত্র সংসদ অতিদ্রুত বাস্তবায়ন হওয়া চাই। এ ক্ষেত্রে সবাই মিলে বসে এটি দ্রুত বাস্তবায়নের চেষ্টা করা প্রয়োজন।”

ঢাবি সংসদের আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, “জুলাইয়ের আগে ছাত্র সংগঠনগুলো একসঙ্গে এক জায়গায় বসার কথা আমরা কেবল স্বপ্নে কল্পনা করতাম। আজ তা বাস্তবে দেখছি। সবাই মিলে শহীদদের স্বপ্নের ক্যাম্পাস বিনির্মাণে কাজ করে যাব। সব রকমের দখলদারিত্ব ও বিভাজনের অবসান করে ঐক্যের বাংলাদেশের আহ্বান জানাই। আমরা রাজনৈতিক সহাবস্থানের ভিত্তিতে সন্ত্রাসকে দূরে রেখে মধ্যমপন্থি রাজনীতি করব।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াক্ফ আইন খারিজ না হলে ফল ভোগ করতে হবে, ভারতের মুসলিম সংগঠনগুলোর হুঁশিয়ারি

ভারতের বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে ‘ওয়াক্ফ বাঁচাও’ আন্দোলন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমান নেতারা বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের শরিকদের উদ্দেশে বলেছেন, তাঁরা যেন সমবেতভাবে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন, যাতে ওয়াক্ফ আইন প্রত্যাহারে সরকার বাধ্য হয়। অন্যথায় ওই শরিকদের প্রত্যেককে মুসলমান সমাজের ক্রোধ, রোষ ও ক্ষোভের মুখোমুখি হতে হবে।

অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ডের সভাপতি খালিদ সইফুল্লাহ রাহমানি, হায়দরাবাদের এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসি, উত্তর প্রদেশের শিয়া সমাজের নেতা মাওলানা কালবে জাওয়াদসহ বিভিন্ন নেতা এনডিএ শরিকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ওয়াক্ফ বিলকে সমর্থন করে তাঁরা সবাই মুসলমানদের পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করেছেন। শরিক দলের নেতাদের উচিত, সরকারকে ওই আইন প্রত্যাহার করতে চাপ দেওয়া। না হলে সর্বত্র তাঁদের মুসলমান সমাজের ক্রোধ ও ক্ষোভের মুখোমুখি হতে হবে।

গতকাল মঙ্গলবার দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক সমাবেশে এ কথা বলেন মুসলিম নেতারা।

সমাবেশে মুসলমান নেতারা বিজেপি নেতৃত্বাধীন শরিকদের নাম করে এই হুঁশিয়ারি দেন। তাঁরা বলেন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জেডিইউ, চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি, হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার জিতেন রাম মাঞ্ঝি, অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি ও উত্তর প্রদেশের জয়ন্ত চৌধুরীর আরএলডি সবাই ওয়াক্ফ বিলকে সমর্থন করেছেন। ওই বিল সমর্থন করে তাঁরা মুসলমানদের পেছনে ছুরি মেরেছেন। এখন তাঁদেরই চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে সরকার আইন প্রত্যাহারে বাধ্য হয়। না হলে ওই দলগুলোকে সর্বত্র মুসলমান সমাজের রোষের মোকাবিলা করতে হবে।

মুসলিম নেতাদের ওই হুমকি সমর্থন করেন উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ও বিহারের আরজেডি। এসপির সংসদ সদস্য ধর্মেন্দ্র যাদব ও মহিবুল্লাহ্ নাদভি এবং আরজেডির সংসদ সদস্য মনোজ ঝা তালকাটোরা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। এসপি নেতারা ‘ওয়াক্ফ বাঁচাও’ আন্দোলন সমর্থন করে বলেন, মুসলিম ল বোর্ডের সঙ্গে তাঁরা একমত। সংবিধান প্রদত্ত অধিকার ও ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষায় তাঁরা একমত। ওয়াক্ফ আইন গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সরকারকে তা প্রত্যাহার করতে হবে। একই কথা বলেন আরজেডি নেতা মনোজ ঝা–ও। তিনি বলেন, এই আইন সংবিধানের পরিপন্থী। তাঁর দল কিছুতেই তা মেনে নেবে না।

লক্ষণীয়, মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ড আয়োজিত এই সমাবেশে শিয়া সম্প্রদায়ের অবিসংবাদিত নেতা মাওলানা কালবে জাওয়াদ উপস্থিত ছিলেন। লক্ষ্ণৌয়ের এই প্রবীণ নেতা অটল বিহারি বাজপেয়ীর সময় থেকে বিজেপিকে সমর্থন জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এই বার তিনিও ওয়াক্ফ আইনের বিরোধিতায় অন্যদের সঙ্গে শামিল হয়েছেন।

এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, দেশের কোনো মুসলমান এই কালো আইন মেনে নেবে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই আইন এনেছেন মুসলমানদের জমিজমা ও সম্পত্তির দখল নিতে। মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহিম মুজাদ্দিদি বিজেপির শরিক দলের নেতাদের নাম করে বলেন, এই আইন পাস করাতে সরকারকে সমর্থন দিয়ে তাঁরা দেশের সংবিধানকেও অমান্য করেছেন। মুসলমান সমাজ ও গণতন্ত্রপ্রিয় সব মানুষ ওঁদের চিনে নিয়েছেন। তাঁরা যা করেছেন, তা না শোধরালে ফলভোগ করতে হবে। তিনি বলেন, এই আইন মুসলমানদের জীবন–মরণের প্রশ্ন।

ওয়াক্ফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে শতাধিক মামলা হয়েছে। শুনানির দ্বিতীয় দিনেই কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে জানায়, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত নতুন আইনের দুটি বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ করা হবে না। এক, ওয়াক্ফ সম্পত্তি বলে যা কিছু পরিচিত, তার কোনোটি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে না। দুই, কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিল ও রাজ্য ওয়াক্ফ বোর্ডে নতুন কোনো সদস্য নিযুক্তি হবে না।

তালকাটোরা স্টেডিয়ামে সমবেত নেতারা অবশ্য জানিয়েছেন, আইন খারিজ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের লড়াই চলবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওয়াক্ফ আইন খারিজ না হলে ফল ভোগ করতে হবে, ভারতের মুসলিম সংগঠনগুলোর হুঁশিয়ারি