জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে গৃহবধূর গলায় ছুরিকাঘাত করে টাকা ও মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে পৌর এলাকার বিহারপুর বাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত গৃহবধূ সিএনজিচলিত অটোরিকশাচালক মহসিন আলীর স্ত্রী মাসুদা (৫০)। গলায় জখম নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

গলায় যন্ত্রণা অনুভূত হলে তাঁর ঘুম ভাঙে বলে জানান ভুক্তভোগী গৃহবধূ। তাঁর স্বামী মহসিন ঢাকায় থাকেন। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘরের টিনের দরজা বন্ধ করে সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন গৃহবধূ মাসুদা। রাত ১২টার দিকে গলায় যন্ত্রণা অনুভব হলে ঘুম ভাঙে তাঁর।

এ সময় গৃহবধূ দেখতে পান, তাঁর গলা দিয়ে রক্ত পড়ছে, পুরো ঘর লণ্ডভণ্ড। তাঁর চিৎকারে পাশের ঘর থেকে মেয়ে, তাঁর জামাই ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তাঁর ঘর থেকে ১৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে বলে দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা।

আহত গৃহবধূর মেয়ের জামাই সাদ্দাম বলেন, ‘আমার শাশুড়ির চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি, তাঁর গলা দিয়ে রক্ত ঝরছে। সামনের কিছু মাটি সরিয়ে দরজা খোলা হয়েছে, এমনটি মনে হচ্ছে। শাশুড়ির মোবাইল ফোন ও ১৫ হাজার টাকা চুরি হয়েছে।’

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। থানায় এখনও কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ নত ই গ হবধ

এছাড়াও পড়ুন:

শতবর্ষী রাস্তার ওপর সবজি চাষ আওয়ামী লীগ নেতার

চারঘাটের সরদহ ইউনিয়নের খোর্দগোবিন্দপুর মাঠপাড়ার গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে শত বছর ধরে গ্রামের মানুষ চলাচল করছেন। রাস্তাটি পাকা করতে দরপত্রও করা হয়েছে। সেই রাস্তার জমি নিজের দাবি করে পটোল রোপণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী। এতে মানুষের চলাচল ও মাঠের ফসল পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এক যুগে কয়েক দফা কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় শতবর্ষী মাটির রাস্তাটির সংস্কার করা হয়। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ থেকে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দরপত্র হয়েছে। এর মধ্যে পাশের জমির মালিক সমজান আলী শ্রমিক দিয়ে রাস্তা কেটে ফসলি জমি বানিয়েছেন। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হলেও গত পাঁচ আগস্টের পর থেকে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনের সঙ্গে চলাফেরা করছেন।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, দৈর্ঘ্যে ১২০ ফুট ও প্রস্থে ৪ ফুট অংশ কেটে নিজের জমির সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন সমজান আলী। সেখানে পটোল রোপণ করা হয়েছে। ১৩ ফুট প্রস্থের সড়ক থেকে আরও ৪ ফুট কেটে নেওয়া হবে বলে স্থানীয়দের জানিয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় প্রকৌশল বিভাগের রাস্তা পাকাকরণ কাজ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। স্থানীয়রা বাধা দিলেও রাস্তা কাটা বন্ধ না করে উল্টো হুমকি দেন সমজান আলী।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব রেজাউল করিম বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের দরপত্র হয়েছে। এখন সেই রাস্তার বেশির ভাগ অংশ নিজের দাবি করে কেটে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী।
নাইমুর রহমান বলেন, বাবা-দাদা সবাই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেছেন। এখন শত শত মানুষের চলাচল। মাঠপাড়ার ফসল ভ্যান, ট্রলি ও মিনি ট্রাকে করে এই রাস্তা দিয়ে বাজারে নেওয়া হয়। কাউকে কিছু না জানিয়ে রাস্তাটি কেটে ফেলা হলো। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।
সমজান আলী বলেন, রাস্তার বেশির ভাগ অংশই আমার জমিতে। এ জন্য কিছু অংশ কেটে নিয়েছি। শুধু আমি রাস্তায় জমি দেব– তা হবে না। অন্যদেরও দিতে হবে। জমির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজপত্র এখন কাছে নেই। তবে স্থানীয় আমিন সুবল চন্দ্র ছয় মাসে দুই দফা জমি পরিমাপ করেছে। মাপ অনুযায়ী রাস্তার বেশির ভাগ অংশ আমার জমিতে পড়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় আমিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র বলেন, জমিটি দেড় থেকে দুই বছর আগে পরিমাপ করেছি। কিছু অংশ রাস্তার ভেতরে ছিল। রাস্তাটি এখন সরকারি সম্পদ। তাই সমজান আলী জমি নিতে পারবে না– এ তথ্য তাঁকে জানানো হয়েছিল। 
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য শুনানির নোটিশ করা হয়েছে। কাগজপত্র নিয়ে সমজান আলীকে আসতে বলা হয়েছে। তবে কোনো জমি ব্যক্তির সম্পত্তি হলেও ২০ বছর সেখানে মানুষজন হাঁটলেই তা সরকারি হয়ে যাবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ