Risingbd:
2025-03-01@18:28:08 GMT

শেরপুরে বিএনপি নেতা বহিষ্কার

Published: 1st, March 2025 GMT

শেরপুরে বিএনপি নেতা বহিষ্কার

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শেরপুর সদরের কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমানকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। 

শনিবার (১ মার্চ) সকালে শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ মো. হজরত আলী ও সদস্য সচিব মো. ফরহাদ আলী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমানকে দলীয় পদসহ প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার কোনো অপকর্মের দায়-দায়িত্ব দল নিবে না।”

এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শেরপুরে আধিপত্য বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জের ধরে সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শেরপুর সরকারি কলেজের সাবেক এজিএস জাকারিয়া বাদলকে (৪৭) কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমান ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। 

এ ঘটনায় সোহাগ এবং রাহুল নামের বিএনপির দুই কর্মী আহত অবস্থায় এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দরা। 

জাকারিয়া বাদলের স্বজন ও ছাত্রদল কর্মী রমজান আলী জানান, আধিপত্য বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জের ধরে উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমানের সাথে সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাকারিয়া বাদলের দীর্ঘদিন থেকে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সেই জেরে ২৫ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) বিকেলে জাকারিয়া বাদলসহ তিনজন মোটরসাইকেলে ভীমগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ি ফেরার তাদের ওপর হামলা চালায় লুৎফরের অনুসারীরা। এসময় বাদলসহ তিন জনকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায় তারা।

পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে বাদল ও সোহাগের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। রাতে অবস্থা আরও খারাপের দিকে গেলে সংকটাপন্ন অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বাদলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। পরে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে উত্তরা এলাকায় তার মৃত্যু হয়। 

পরে বাদলকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর থেকে লুৎফর রহমান ও তার অনুসারীরা পলাতক রয়েছেন।

ঢাকা/তারিকুল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ল ৎফর রহম ন উপজ ল অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যবসায়ী সেজে আমলার সাড়ে ৭ কোটি টাকা ঋণ

তিনি সরকারের আমলা। তবে সে তথ্য গোপন করে ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে দুই ব্যাংক থেকে নিয়েছিলেন সাড়ে সাত কোটি টাকা ঋণ। কিন্তু ঋণের কিস্তি আর দেননি। সেই ঋণ সুদ-আসলে হয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা। ঋণখেলাপিকে খুঁজে পেতে হয়রান ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এক পর্যায়ে জানতে পারে, তিনি আসলে ব্যবসায়ী নন, সরকারের আমলা। সেই কর্মকর্তা হলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব (প্রশাসন-২) একরামুল হক চৌধুরী। পরে দুই ব্যাংক কর্তৃপক্ষই জনপ্রশাসন এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এখন ওই কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কাজ থামিয়ে দিতে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ।

চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মচারী সরকারের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া সরকারি কাজ ব্যতিরেকে কোনো ব্যবসায় বা চাকরিতে জড়িত হতে পারবেন না। তবে নন-গেজেটেড সরকারি কর্মচারী সরকারের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া তাঁর পরিবারের সদস্যদের শ্রম কাজে লাগিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাতে পারবেন এবং তা তাঁর সম্পত্তির ঘোষণাপত্রের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। 
জানা গেছে, উপসচিব একরামুল চৌধুরী নিজেকে ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে মুক্তার এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক দাবি করে ইস্টার্ন ব্যাংক গাজীপুর শাখা থেকে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দুই কোটি টাকা ঋণ নেন। পরে ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আরও এক কোটি টাকা ঋণ নেন। এর আগে ২০১৬ সালে একই পরিচয় দিয়ে একই প্রতিষ্ঠানের নামে প্রিমিয়ার ব্যাংক মাওনা শাখা থেকে আরও সাড়ে চার কোটি টাকা ঋণ নেন। ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিলের মধ্যে তাঁর প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্রথম ঋণ পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু ঋণ নেওয়ার পর তিনি আর কোনো কিস্তি পরিশোধ করেননি। ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁর এই ঋণ সুদসহ দাঁড়ায় ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। এক পর্যায়ে একরামুল চৌধুরীর পরিচয় জানতে পেরে ২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট প্রিমিয়ার ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাঁকে একটি নোটিশ দেয়। তার পরও তিনি কিস্তি পরিশোধ করেননি। 

গত সেপ্টেম্বরে প্রিমিয়ার ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। এর আগে গত বছরের ১১ জানুয়ারি ইস্টার্ন ব্যাংক আরেকটি অভিযোগ দাখিল করে। পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবহিত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি চিঠি দেন। তারপর আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। 

এদিকে প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের মাওনা শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মেহেদী হাসান লিখিত অভিযোগ দেন। তাতে বলা হয়, সহকারী সচিব মো. একরামুল হক চৌধুরী সরকারি চাকরিজীবীর তথ্য গোপন করে বেআইনিভাবে ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে ব্যাংকের ঋণ গ্রহণ করে নামে-বেনামে মাওনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্পত্তি ক্রয় করে ইচ্ছাকৃত নিজে ঋণখেলাপিতে পরিণত হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে মেহেদী হাসান বলেন, গাজীপুরের গ্রামীণফোনের ফ্লেক্সিলোডের ডিস্ট্রিবিউটর মুক্তার এন্টারপ্রাইজের মালিক হিসেবে একরামুল হক চৌধুরী ব্যবসার জন্য সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়েছেন। পরে আমরা জানতে পারি, তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব। এ কারণে বিষয়টি লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। এখন মন্ত্রণালয় তাঁর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কেউ মন্তব্য করতে চাননি। তবে উপসচিব একরামুল হক চৌধুরী সমকালকে বলেন, আমি জমি বন্ধক দিয়ে ঋণ নিয়েছিলাম। এখন কোনো কারণে ঋণ পরিশোধ করতে পারিনি। কিন্তু আপনি জানেন, ব্যাংক থেকে এক টাকা ঋণ নিতে হলে তিন টাকার জমি বন্ধক রাখা লাগে। আমার জমি ব্যাংকের কাছে দেওয়া আছে। এখন ব্যাংক বলছে, আমার জমি বিক্রি করে তারা ঋণের টাকা নিয়ে নেবে। আগামী মাসেই হয়তো ব্যাংক এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেবে। এ ছাড়া কোনো তথ্য গোপন করার বিষয় এখানে নেই। কিছু লোক আমার সম্পর্কে এগুলো ছড়াচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ