মশায় অতিষ্ঠ খুলনা নগরবাসী, মশারি নিয়ে মিছিল
Published: 1st, March 2025 GMT
খুলনা নগরীতে মশার উপদ্রব প্রকট আকার ধারণ করেছে। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গত বছরের নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ উৎপাত চলছে এখনও। দিনরাত এবং ঘরে-বাইরে সমানতালে যন্ত্রণা দিচ্ছে মশা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না মশক নিধনের দায়িত্বে থাকা খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। এ অবস্থায় বিক্ষুব্ধ নগরবাসী শনিবার নগরীতে মশারি নিয়ে মিছিল করেছেন।
প্রতিবছর শীতের শুরু এবং শেষ সময়টি মশার প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। সে অনুযায়ী মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করে কেসিসি। কিন্তু সিটি মেয়র ও কাউন্সিলরসহ জনপ্রতিনিধি না থাকায় এবার সেই কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। পাশাপাশি সময়মতো মশার ওষুধ কেনা নিয়েও নানা জটিলতা তৈরি হয়। এতে মশা নিধনে কেসিসির তৎপরতা এবার ফলপ্রসূ হয়নি।
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, মশা নিধনে কেসিসি সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মশার উপদ্রব স্থায়ীরূপ লাভ করলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়াসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, মাঝে মধ্যে নগরীর সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার আশেপাশে কিছু ওষুধ ছিটালেও মহানগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা এর আওতায় আসেনি। ড্রেন, খাল, পুকুর, ঝোঁপ-ঝাঁড় নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং পরিকল্পিতভাবে মানসম্মত কীটনাশক ছিটানোর দাবি জানান তিনি।
তবে কেসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আবদুল আজিজ বলেন, মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালানো হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক স্প্রেম্যান কাজ করছে। ড্রেনের পেড়িমাটি উত্তোলনসহ অন্যান্য কাজ চলছে। খুব দ্রুত মশা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মশারি মিছিল
এদিকে মশার উপদ্রব থেকে নগরবাসীকে রক্ষায় নিয়মিত মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনাসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে মশারি নিয়ে মিছিল হয়েছে। নাগরিক সমাজের উদ্যোগে শনিবার সকালে নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে মশারি মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি পিকচার প্যালেস মোড় থেকে শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
খুলনা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মহসীনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব বাবুল হাওলাদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন শেখ আশরাফ উজ জামান, মুনীর চৌধুরী সোহেল, মিনা আজিজুর রহমান, মিজানুর রহমান বাবু, রেজাউল করিম প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
আদালত জানতে চেয়েছিলেন ৭ দিনের মধ্যে, উত্তর মেলেনি ৭ বছরেও
একজন আইনজীবীর রিটে ২০১৯ সালে হাইকোর্ট সাত দিনের মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন ওয়াসার পানির নমুনায় মলমূত্র এবং অ্যামোনিয়ার উপস্থিতি কেন পাওয়া গেছে? যার উত্তর আজ প্রায় সাত বছরেও পাওয়া যায়নি। এই তথ্য জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসরীন সুলতানা। তিনি বলেন, এটা অনাকাঙ্ক্ষিত।
আজ রোববার দুপুরের দিকে ‘ওয়াসার দূষিত পানি, ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নগরবাসী’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন নাসরীন সুলতানা। এবি পার্টির বিজয়নগরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, রাজধানীর কল্যাণপুর, তেজগাঁও, মালিবাগ, মগবাজার, মধুবাগ, বাসাবো, মানিকনগরসহ বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে ওয়াসার পানির সঙ্গে পোকা আসছে।
এবি পার্টির আজকের সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্যে নাসরীন সুলতানা বলেন, প্রতিবছরই গ্রীষ্মের শেষ এবং বর্ষার শুরুতে ওয়াসার পানি হয়ে ওঠে নোংরা ও পোকামাকড়ের প্রজননক্ষেত্র। দূষণের পরিমাণ এতটাই বাড়ে যে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। কিন্তু এ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমাধান চিন্তা করা হয়নি।
স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও উন্নয়নের ডামাডোল আর স্মার্ট বাংলাদেশের ভিড়ে সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপন করা যায়নি, যা সামগ্রিক ব্যর্থতা—এমন মন্তব্য করে এবি পার্টির এই নেত্রী বলেন, হাজার হাজার নাগরিকের যেখানে ই-কোলাই জীবাণু ও পোকামাকড় দিয়ে পূর্ণ পানি খেয়ে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় তখন ওয়াসার এমডির পক্ষ থেকে সমাধান তো দূরের কথা, কোনো বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।
নাসরীন সুলতানা বলেন, জুরাইন, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের এ নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এই এলাকার বাসিন্দারা। জুরাইনের স্থানীয় মসজিদের গভীর নলকূপ এখন শেষ ভরসা। সেখান থেকে নামমাত্র মূল্যে পানি কিনে তাঁরা চলছেন বছরের পর বছর। ওয়াসার বিল দেওয়ার পরেও এ রকম নাগরিক ভোগান্তি জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটের সম্পূর্ণ বিপরীত।
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে কেঁচো বা এ ধরনের পোকামাকড় পাওয়া যাচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে ময়লা ও দুর্গন্ধ। গত সরকারের সময় ২২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পুরোটাই পানি শোধনের পরিবর্তে আওয়ামী লুটেরাদের পকেটে ঢুকেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কোনো সরকারই জনগণের মৌলিক অধিকার বিশুদ্ধ সুপেয় পানির নিশ্চয়তা তৈরি করতে পারেনি দাবি করে আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ওয়াসার পানিতে ভয়াবহ ই–কোলাই ভাইরাস পাওয়ার পরও ওয়াসা নির্বিকার। ওয়াসার কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মধ্যে যেসব দুর্নীতিবাজ কেঁচো বা পোকামাকড় বসে আছে তাদের অপসারণ ছাড়া নগরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব আহমেদ বারকাজ নাসির, সহকারী প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, আজাদুল ইসলাম আজাদ, সহকারী দপ্তর সম্পাদক শরণ চৌধুরী, সহকারী অর্থ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, নারীবিষয়ক সহকারী সম্পাদক শাহিনুর আক্তার শীলা প্রমুখ।