ধীরে ধীরে বাংলাদেশের আকাশ থেকে শীতের মেঘ কেটে যাচ্ছে। মার্চে পুরো সময়টা স্পষ্টভাবে সন্ধ্যার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত আকাশ পর্যবেক্ষণ করা যাবে। হুটহাট বৃষ্টি হানা না দিলে সন্ধ্যার পর থেকে ব্যস্ত ঢাকার বুকে দারুণ আকাশ দেখা যাবে। ঢাকা ও ব্যস্ত শহর থেকে যত গ্রামীণ এলাকায় যেতে থাকবেন, তত দারুণ আকাশ দেখা যাবে মার্চের প্রথম সপ্তাহে।

১ মার্চ

সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশে একটি অর্ধচন্দ্র চাঁদ (প্রায় ১৫ শতাংশ আলোকিত) দৃশ্যমান হবে। রাত ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চাঁদের এমন অবস্থা দেখা যাবে। আজকের আকাশে শুক্র গ্রহ, মঙ্গল গ্রহ ও বৃহস্পতি গ্রহ খালি চোখেই দেখা যাবে। সন্ধ্যার পর থেকেই আকাশে দেখা যাবে এদের। অন্যদিকে ইউরেনাস ও নেপচুন শক্তিশালী টেলিস্কোপ ছাড়া পর্যবেক্ষণ করা বেশ কঠিন হবে। আজ সূর্যাস্তের পর পশ্চিমে সন্ধ্যার আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখা যাবে শুক্র গ্রহকে। এটি আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল বস্তুগুলোর মধ্যে একটি হবে। লালচে রঙের উজ্জ্বল মঙ্গল গ্রহকে অ্যালডেবারান তারকার পাশে দেখা যাবে। পশ্চিম আকাশে রাত ১০টার দিকে সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে।

২ মার্চ

আকাশে প্রশস্ত অর্ধচন্দ্র দেখা যাবে। আজ চাঁদ শুক্র গ্রহের কাছাকাছি থাকবে। পশ্চিমে সূর্যাস্তের ঠিক পরেই শুক্র গ্রহকে সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে। আকাশে মঙ্গল গ্রহ রাত ৩টায় ঠিক মাঝ আকাশে দেখা যাবে। পশ্চিম আকাশে বৃহস্পতি গ্রহ রাত ১১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত দৃশ্যমান থাকবে। বিখ্যাত ওরিয়ন’স বেল্ট দক্ষিণ আকাশে দৃশ্যমান থাকবে।

৩ মার্চ

এদিন আকাশে ৩০ শতাংশ আলোকিত অর্ধচন্দ্র দেখা যাবে রাত ১১টা পর্যন্ত। মঙ্গল গ্রহ ও আলদেবারান তারা নিকটবর্তী অবস্থানে থাকবে। এদের পশ্চিম আকাশে যমজ তারার মতো দেখাবে। সূর্যাস্তের পরে পশ্চিম আকাশে শুক্র গ্রহ উজ্জ্বলভাবে জ্বলজ্বল করবে। এদিন রাত ১২টা ৩৯ মিনিটে মধ্য আকাশে চোখ রাখলেই দেখতে পাবেন বৃহস্পতি গ্রহ।

৪ মার্চ

সন্ধ্যা ৭টা ৫৭ মিনিটে মধ্য আকাশে অবস্থান করবে শুক্র গ্রহ। এদিন চাঁদের প্রথম চতুর্থাংশে অবস্থান করবে। মধ্যরাত পর্যন্ত দৃশ্যমান হবে। আর শুক্র ও বৃহস্পতি সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশে প্রায় সরলরেখায় দেখা যাবে। ওরিয়ন ও সাইরাস তারকা আকাশে দেখা যাবে। রাত ৯টার দিকে ওরিয়ন তার সর্বোচ্চ বিন্দুতে থাকবে। আর রাতের আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে সাইরাস দক্ষিণ-পূর্বে দৃশ্যমান হবে।

৫ মার্চ

রাত ১২টা ৩১ মিনিটে মাঝ আকাশে দেখা যাবে বৃহস্পতি গ্রহ। এদিন আকাশে ৪৫ শতাংশ আলোকিত চাঁদ দেখা যাবে। এদিন শুক্র, বৃহস্পতি ও শনির অবস্থান থাকবে আকাশে। উজ্জ্বল নক্ষত্র রেগুলাস ও সিংহ রাশি পূর্ব দিকে দেখা যাবে।

৬ মার্চ

এদিন চাঁদ প্রায় অর্ধ-আলোকিত অবস্থায় দেখা যাবে রাত ১টা ৩০ মিনিটের পরে। এদিন মঙ্গল গ্রহ কালপুরুষের বলয়ের কাছাকাছি অবস্থান করবে। রাত ৩টা ৯ মিনিটে মঙ্গল গ্রহ মাঝ আকাশে অবস্থান করবে। যার ফলে এটি সহজেই দেখা যাবে। শনি প্লিয়েডস স্টার ক্লাস্টারের কাছে দেখা যাবে, যা সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত।

৭ মার্চ

কেউ বুধ গ্রহ দেখতে চাইলে ছোট টেলিস্কোপ বা বাইনোকুলার দিয়ে সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটে মধ্য আকাশে চোখ রাখতে পারেন। এদিন শুক্রবার, বৃহস্পতি ও মঙ্গল আকাশে দেখা যাবে। পশ্চিমে শুক্র গ্রহ উজ্জ্বলভাবে থাকবে। মধ্যরাত পর্যন্ত বৃহস্পতি দৃশ্যমান থাকবে। আর মঙ্গল গ্রহ অ্যালডেবারানের কাছে ভালোভাবে অবস্থান করবে।

সূত্র: বিবিসি স্কাই অ্যাট নাইট ম্যাগাজিন, অ্যাস্ট্রোনমি, স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ ও স্কাই ম্যাপস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র য স ত র পর অবস থ ন করব আল ক ত সবচ য

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতারণা করে মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় চাকরি, সাবেক পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার

প্রতারণা করে মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় সরকারি চাকরি করার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার মো. সুমন (৩১) নামের পুলিশের এক সাবেক কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার রাতে আখাউড়া সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি মুক্তিযোদ্ধার নাতির পরিচয়ে এক যুগ পুলিশ কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

গ্রেপ্তার মো. সুমন আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা। ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর আখাউড়ার মোগড়া গ্রামের যুবক মো. ফরহাদ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সুমনের প্রতারণার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। তদন্তে তাঁর প্রতারণার বিষয়টি পুলিশের কাছ ধরা পড়ে। গত বছরের ২১ ডিসেম্বর পুলিশের পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় সুমনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মো. সুমন ২০১২ সালে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পরীক্ষায় অংশ নেন। নিয়োগের সময় মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় চাকরির জন্য প্রতিবেশী সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মো. হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা পুরুষ (নাতি) কোটায় চূড়ান্তভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি ট্রেনিং সেন্টারে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ নেন সুমন। ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগ দেন তিনি। ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর স্থানীয় যুবক মো. ফরহাদ মিয়া এ প্রতারণার বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগটি তৎকালীন কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেনকে তদন্তের নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার। পুলিশ কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিবেদন দেন। সেখানে কনস্টেবল সুমনের প্রতারণার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সুমন শুক্রবার ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন, এমন সংবাদের ভিত্তিতে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ