শেকৃবিতে গভীর রাতে শিক্ষার্থীদের র্যাগিং, উদ্ধার করলেন উপাচার্য
Published: 1st, March 2025 GMT
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) গত শুক্রবার গভীর রাতে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বারবার ফোন করেও প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও ছাত্র পরামর্শকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। তবে ফোন পেয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করেন।
সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮২তম ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী ৮৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের ডাইনিংয়ে নিয়ে র্যাগিং শুরু করেন। এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শেকৃবির কয়েকজন সদস্যকে খবর দেন। তারা বিষয়টি নিয়ে প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও ছাত্র পরামর্শককে একাধিকবার ফোন করলেও কেউ সাড়া দেননি। পরে উপাচার্য ড.
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেকৃবি শাখার আহ্বায়ক মো. আসাদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে, নির্দিষ্ট রাজনৈতিক প্রোগ্রামে না গেলে শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের শিকার এবং সিট বাতিলের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ২৩ ব্যাচের কিছু শিক্ষার্থী এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। শুক্রবার রাত ৪টা পর্যন্ত এমন মিটিং চলেছে। ঘটনা জানতে পেরে আমরা প্রক্টর, প্রভোস্ট ও ছাত্র পরামর্শকদের কল করি। কিন্তু কেউ ফোন ধরেননি। বাধ্য হয়ে উপাচার্যকে ফোন দেই।’
অভিযোগ বিষয়ে শেকৃবি ছাত্রদল সভাপতি আহমেদুল কবির তাপস বলেন, যদি কোন হেনস্থার ঘটনা ঘটে থাকে তবে অবশ্যই অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ছাত্রদলের নাম জড়িয়ে যেসব কথা বিভিন্ন জায়গায় প্রচারিত হচ্ছে; যার কোনটাই সত্য না। ছাত্রদলের কেউ এতে জড়িত ছিল না। ছাত্রদল সবসময়ই এসবের বিরুদ্ধে।
ফোন না ধরার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আশাবুল হক বলেন, রাতে আমাকে একজন ফোন করেছিল। কিন্তু বিকেল থেকে আমি জ্বর ঠাণ্ডায় আক্রান্ত থাকায় রাতে ফোন সাইলেন্ট করে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। সকালে উঠে ফোন দেখার পর আমি তাকে আবার ফোন ব্যাক করেছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাকে ফোন করে র্যাগিংয়ের অভিযোগ জানায়। সঙ্গে সঙ্গে আমি ট্রেজারারকে জানিয়ে দ্রুত বের হয়ে আসি। নজরুল হলে গিয়ে দেখি, ২৩ ও ২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা রাত ২টায় মিটিং করছে। আমি তাদের রুমে পাঠিয়ে দেই। এরপর নবাব সিরাজ উদ-দৌলা হলে গিয়ে দেখি, সেখানে কেউ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটি রয়েছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। র্যাগিং কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপ চ র য উপ চ র য ছ ত রদল ফ ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমি আওয়াজ দিয়ে মরতে চাই’
গাজায় বসবাসকারী একজন তরুণ আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসেবে ফাতিমা হাসোনা জানতে, মৃত্যু সবসময় তার দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে। যুদ্ধের গত ১৮ মাস ধরে তিনি বিমান হামলা, তার বাড়ি ধ্বংস, অবিরাম বাস্তুচ্যুতি এবং পরিবারের ১১ জন সদস্যের হত্যার কথাগুলো লিখেছেন। কিন্তু স্বজন, বাড়িঘর হারানোর পরেও তিনি চুপ হয়ে যাবেন না বলে জানিয়েছিলেন ফিলিস্তিনি এই সাংবাদিক।
ফাতিমা তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, “যদি মরন আসেই তাহলে আমি উঁচু আওয়াজ দিয়ে মরতে চাই। আমি কেবল ব্রেকিং নিউজ বা কোনো দলের সংখ্যা হতে চাই না, আমি এমন একটি মৃত্যু চাই যা বিশ্ব শুনবে, এমন একটি প্রভাব যা সময়ের সাথে সাথে থাকবে এবং একটি চিরন্তন চিত্র যা সময় বা স্থান দিয়ে চাপা দেওয়া যাবে না।”
আর কয়েক দিন পরেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা ছিল ২৫ বছর বয়সী ফাতিমার। বুধবার উত্তর গাজায় তার বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন ফাতিমা। তার পরিবারের দশজন সদস্য নিহত হয়েছেন এই হামলায়। নিহতদের মধ্যে মধ্যে তার গর্ভবতী বোনও ছিলেন।
ফাতিমাকে হত্যার চব্বিশ ঘন্টা আগে ঘোষণা করা হয়েছিল যে ইসরায়েলি আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় তারর জীবনকে কেন্দ্র করে একটি তথ্যচিত্র ফরাসি স্বাধীন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রকাশ করা হবে।
ইরানি পরিচালক সেপিদেহ ফারসি নির্মিত ‘পুট ইওর সোল অন ইওর হ্যান্ড অ্যান্ড ওয়াক’ ছবিটিতে ফাতিমা ও ফারসির মধ্যে ভিডিও কথোপকথনের মাধ্যমে গাজার অগ্নিপরীক্ষা এবং ফিলিস্তিনিদের দৈনন্দিন জীবনের গল্প বলা হয়েছে।
ফাতিমা সেই তথ্যচিত্রে বলেছিলেন, “গাজা আমার চোখ... জ্বলন্ত ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। আমি তার হাসি, তার কান্না, তার আশা এবং তার বিষণ্ণতার ছবি তুলেছিলাম।”
ফাতিমা সম্পর্কে ফারসি বলেন, “তিনি অনেক আলোকজ্জল, অনেক প্রতিভাবান ছিলেন। ছবিটি দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন। কয়েক ঘন্টা আগে আমি তার সাথে কথা বলেছিলাম যে ছবিটি কানে আসছে এবং তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম।”
ফ্রান্সে নির্বাসিত জীবনযাপনকারী ফারসি বলেন, ফাতিমাকে একজন ফটোসাংবাদিক হিসেবে তার বহুল প্রচারিত কাজের জন্য এবং সম্প্রতি তথ্যচিত্রে অংশগ্রহণের জন্য লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক ইতিহাসে গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক সংঘাতময় স্থান। ২০২৩ সাল থেকে ১৭০ জনেরও বেশি সাংবাদিক ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ