সেকেন্ড রিপাবলিক এবং গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি আরেক ষড়যন্ত্র: সালাহউদ্দিন
Published: 1st, March 2025 GMT
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ এবং ‘গণপরিষদ নির্বাচন’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, যারা সেকেন্ড রিপাবলিক ও গণপরিষদের বিষয় সামনে আনছে- এটা হয় তারা বুঝে না অথবা বুঝে; এই রাষ্ট্রব্যবস্থাকে আরও দীর্ঘায়িত অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মধ্যে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র আছে।
আজ শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে ‘ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনে’র (এনআরএফ) উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ত্যাগ ও নেতৃত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং সৈয়দ আবদাল আহমেদে সম্পাদিত ‘নন্দিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এনসিপি’র নবযাত্রাকে স্বাগতম জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই দলটি লক্ষ্যের বিষয়ে বলেছে- ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠায় গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন। এটা নিয়ে সমালোচনা করতে চাই না। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই তার নিজস্ব কর্মপন্থা, আদর্শ থাকবে, গঠনতন্ত্র এবং ঘোষণাপত্রে এ রকম ঘোষণা থাকে। কেউ সমাজতন্ত্র চায়, কেউ অন্যকিছু, কেউ হয়ত ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এরকম অনেক কিছু থাকে; বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক ঘোষণাপত্রে।
তিনি বলেন, নতুন বন্ধুদের বলতে চাই, আমাদের বর্তমান রিপাবলিক কি অসুস্থ হয়ে গেছে? সেকেন্ড রিপাবলিক কখন হয়? রিপাবলিক হচ্ছে- যেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, তাদের একটা নমিন্যাল অথবা ‘ইলেক্টেড হেড দি স্টেট’ থাকবে। সেটা কি আমাদের নেই?
গণপরিষদ নির্বাচন নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, এনসিপি নতুন সংবিধানের জন্য কথা বলছে। নতুন সংবিধান যেটা হবে সেটা সংশোধনের মাধ্যমে ব্যাপক সংশোধনী প্রস্তাব আপনারা তো দিয়েছেন সংস্কার কমিশনে, আমরাও দিয়েছি। সেই সংবিধানের নাম যদি আপনারা নতুন সংবিধান দেন, ঠিক আছে। কিন্তু গণপরিষদ কেনো বললেন- তা বুঝলাম না। যে সময়ে দেশে কোনো সংবিধান থাকে না, একটা নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন গণপরিষদের প্রয়োজন হয়। গণপরিষদের সদস্যরা সংবিধান প্রণয়ন করেন। যে সংবিধানের ভিত্তিতে পরে পার্লামেন্ট ইলেকশন হয়।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য আমরা কি নতুনভাবে একটা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। রাষ্ট্র তো স্বাধীন আছে। আমাদের যেভাবেই হোক একটা সংবিধান আছে। এটার ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজন আছে। যে সংবিধানকে শেখ হাসিনা দলীয়করণ করে গণতন্ত্রের বিপক্ষে নিজেদের পক্ষে সাজিয়েছিলেন সেজন্য সেটার সংস্কার দরকার।
রোডম্যাপের জন্য এক মাসের আল্টিমেটাম
নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে এক মাসের আল্টিমেটাম দিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আপনাকে অতি শিগগিরই জাতীয় সংসদের নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রদান করতে হবে।
যদি আপনি কোনো বাহানায় এই মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রদান না করেন, তাহলে সেটা আমরা রাজনৈতিকভাবে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো বসে সিদ্ধান্ত নেবো। আমাদেরকে পুনরায় নির্ধারণ করতে হবে, আমরা কোন প্রক্রিয়ায় এগোব।
ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যকে টিকিয়ে রাখতে হবে
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা দলীয় ঘোষণাপত্রে সেকেন্ড রিপাবলিক আর গণপরিষদের মধ্যে দিয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে চান, সেটা আপনারা যখন পারবেন করবেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণে আর যাতে কোনো বিলম্ব না হয়, সেজন্য সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে- এটাই আমাদের আহ্বান। যে কোনো মূল্যে রাজপথে গড়ে উঠা ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যকে আমাদের টিকিয়ে রাখতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং এনআরএফ- এর সদস্যসচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, স্বেচছাসেবকবিষয়ক সহ-সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর সহধর্মিণী বিথীকা বিনতে হোসাইন, এনআরএফের আহ্বায়ক সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহম দ ব এনপ স ক ন ড র প বল ক স ল হউদ দ ন র জন ত ক র জন য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এসি বাসের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি) বাসভাড়া ৭০ থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকার প্রতিবাদ জানিয়েছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির (আরটিসি) সভাপতি জেলা প্রশাসকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার বিকেলে সংগঠনের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জে গণপরিবহন নিয়ে স্থানীয় অসাধু একটি চক্র প্রতিনিয়ত তৎপর রয়েছে। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসনামলে সরকার ও প্রশাসনের সহায়তায় শামীম ওসমানের মাফিয়া বাহিনী নারায়ণগঞ্জের জনগণকে জিম্মি করে নির্বিঘ্নে গণবিরোধী তৎপরতা চালিয়েছে। তারা গণপরিবহনকে চাঁদা আদায়ের অন্যতম খাত বানিয়েছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার বদলের পর নারায়ণগঞ্জের চাঁদাবাজ চক্র পালিয়ে যায়। পরে গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের জনতার আন্দোলনের মুখে নন-এসি বাসের ভাড়া কিছুটা কমে আসে। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি) বাসের নৈরাজ্য অব্যাহত আছে। যখন ইচ্ছা তখন বিভিন্ন নামে এখানে বাস নামছে। যা ইচ্ছা ভাড়া আদায় করছে। এসব বাসের রুট পারমিট আছে কি নেই, তা নজরদারির যেমন কোনো উদ্যোগ নেই, ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রেও কোনো প্রশাসনিক তৎপরতা নেই। ফলে এসি বাস নিয়ে এখনো এখানে গণপরিবহন চক্র যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছে। কার সঙ্গে যোগসাজশে, কাকে ম্যানেজ করে এসব অরাজকতা নারায়ণগঞ্জে চলছে, তা জনগণের বোধগম্য নয়।’
সরকার বদলের পর থেকে এত দিন ৭০ টাকায় বিভিন্ন নামে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এসি বাস চলেছে জানিয়ে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিন দিন আগে হঠাৎ ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে একটি কোম্পানি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এসি বাস চালু করে ৮০ টাকা ভাড়া আদায় করছে। যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আরটিসির (রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন) চেয়ারম্যান হিসেবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এসি বাসের ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী ভোগান্তি অবসানের জন্য নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসককে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।