সামাজিক নিরাপত্তা বিভাগের ৭ হাজার কর্মী ছাঁটাই করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
Published: 1st, March 2025 GMT
সামাজিক নিরাপত্তা প্রশাসনের (এসএসএ) সাত হাজার কর্মী ছাঁটাই করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী বাহিনীর আকার ছোট করার অংশ হিসেবে তাঁদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৭ কোটি ৩০ লাখ প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী মানুষকে প্রতি মাসে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা সরবরাহ করে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে এসএসএ জানায়, আমরা কর্মীর সংখ্যা ১২ শতাংশের বেশি কমাতে যাচ্ছি। বাড়তি কর্মী ও সংগঠনের কাঠামো সংকুচিত করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এটা করা হচ্ছে। সংস্থার কার্যকারিতা এবং যেসব কর্মী সংস্থার সেবা সরবরাহের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট নন, তাঁদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এসএসএর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সামাজিক নিরাপত্তা সংস্থার বর্তমানে প্রায় ৫৭ হাজার কর্মী রয়েছে। আমরা এটাকে কমিয়ে ৫০ হাজারে নিয়ে আসার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। পাশাপাশি সংস্থার আঞ্চলিক অফিস ১০ থেকে কমিয়ে চারে নামিয়ে আনা হবে।
এসএসএ যুক্তরাষ্ট্রের অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ ব্যক্তিদের সুযোগ-সুবিধা ও তাঁদের পেনশনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা দেশটির সেসব অল্পসংখ্যক সরকারি বিভাগের একটি, যেটাতে রাজনীতিবিদেরা সাধারণত হস্তক্ষেপ করেন না।
পুনরায় নির্বাচিত হলে সামাজিক নিরাপত্তা সংস্থায় হস্তক্ষেপ করবেন না বলে ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করতে চলছে ট্রাম্প প্রশাসন।
কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় কমানোর জন্য সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) চালু করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর প্রধান করা হয়েছে ধনকুবের ইলন মাস্ককে। এসএসএর কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা নিয়ে হোয়াইট হাউস বা ডিওজিই তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ। ডিওজিই এরই মধ্যে এক লাখের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিরাপদ পানিকে মৌলিক অধিকার ঘোষণা
নিরাপদ পানিকে মৌলিক অধিকার ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী এক বছরের মধ্যে আদালত, উপাসনালয়, হাসপাতাল, স্টেশন, হাটবাজার, এয়ারপোর্টসহ পাবলিক প্লেসে নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ১০ বছরের মধ্যে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপদ এবং পানযোগ্য পানি সাশ্রয়ী মূল্যে নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এই রায় দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপদ এবং বিশুদ্ধ পানি পাওয়া মৌলিক অধিকার। এই অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রায়ে আরও বলা হয়, ২০২৬ সালের মধ্যে সব পাবলিক প্লেসে বিনামূল্যে নিরাপদ পানি সরবরাহে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা বিবাদীদের (সরকার) প্রতিবেদন আকারে আদালতকে জানাতে হবে। এই রায়টি একটি চলমান আদেশ হিসেবে থাকবে। এ ছাড়া হাইকোর্ট ঘোষিত তুরাগ নদ, সোনারগাঁও ও হাতিরঝিলের নির্দেশনাগুলো এই রায়ে অন্তর্ভুক্ত হবে। দেশে যত পানির উৎস রয়েছে, এগুলো যাতে ক্ষয়িষ্ণু (শুষ্ক, অনিরাপদ ও দূষিত) না হয়, সেজন্য সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপদ খাবার ও ব্যবহারযোগ্য পানি নিশ্চিত করতে ২০২০ সালে সুয়োমটো রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। তখন নাগরিকের জন্য নিরাপদ পানযোগ্য পানি সরবরাহ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব কিনা, অথবা এই নিরাপদ পানি পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করা যায় কিনা, সে বিষয়ে রুল জারি করা হয়। গতকাল ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে জারি করা এই মামলায় রুলের শুনানিতে আদালত কয়েকজন অ্যামিকাস কিউরি (আইনি বিষয়ে মতামত প্রদানকারী বন্ধু) নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, মানবাধিকার সংগঠন বেলার পক্ষ থেকে মিনহাজুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মঞ্জুর আলম, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. ওবায়দুর রহমান (তারেক), সোয়েব মাহমুদ ও আবুল হাসান।
রায়ের পর ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী রায়। রায়টি বাস্তবায়িত হলে দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে এবং পানিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পাবে।