সাঁড়াশি অভিযানে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ২৮৩
Published: 1st, March 2025 GMT
রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) গত ২৪ ঘণ্টায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ২৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, ডাকাত, মাদক কারবারিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িতরা রয়েছেন।
শনিবার ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ডিএমপিসহ অন্য বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
ডিএমপি জানায়, রাজধানীর ৫০টি থানা এলাকায় ৫৮৬টি টহল টিম কাজ করেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ৬৫টি চেকপোস্ট বসানো হয়। এ সময় বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ এলাকায় সিটিটিসির ১৪টি, অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)-এর ১২টি এবং র্যাবের ১০টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করেছে। বিশেষায়িত ইউনিট এপিবিএনও ২০টি চেকপোস্ট পরিচালনা করেছে।
ডিএমপি আরও জানায়, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের বিশেষ অভিযানের ধারাবাহিকতার অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ মধ্যে ৮ জন ডাকাত, ২৬ জন সক্রিয় ছিনতাইকারী, ৬ জন চাঁদাবাজ, ২০ জন চোর চক্রের সদস্য, ১৬ জন চিহ্নিত মাদক কারবারি এবং ৩১ জন পরোয়ানাভুক্ত আসামি রয়েছে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩০০ রাউন্ড গুলি, তিনটি চাকু, তিনটি সুইচ গিয়ার, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও নগদ ১ হাজার ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও ১০ লিটার দেশি মদ, ১২১ পিস ইয়াবা, ১.
ডিএমপি জানায়, অভিযানে গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪৪টি মামলা রুজু হয়েছে এবং যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পাহাড়ি পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভের ডাক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী অপহরণের প্রতিবাদে রোববার তিন পার্বত্য জেলা, সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
শনিবার বিকেলে চাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি দেওয়া হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না অভিযোগ করে তিন দাবি তুলে ধরা হয়।
দাবিগুলো হলো– পাঁচ শিক্ষার্থীকে সুস্থ অবস্থায় দ্রুত মুক্তি, তাদের উদ্ধারে প্রশাসনের জোরালো ও কার্যকর ব্যবস্থা এবং অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
বিজু উৎসব শেষে চবি ক্যাম্পাসে ফেরার পথে গত বুধবার ভোরে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে রিশন চাকমা, অলড্রিন ত্রিপুরা, মৈত্রীময় চাকমা, দিব্যি চাকমা ও লংঙি ম্রোকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জেএসএস সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুন ত্রিপুরা ইউপিডিএফকে দায়ী করলেও, অস্বীকার করেছেন সংগঠনের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা।
শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনী খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত চালাচ্ছে। শনিবারও খাগড়াছড়ি সদরের ভাইবোন ছড়াসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়। তবে চার দিনেও অপহরণে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা জানান, তিনি প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে। সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভালো ভূমিকা নিয়েছে। শিক্ষার্থীরা মুক্ত হওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী জাল্লাং এনরিকো কুবি বলেন, অপহরণের পর শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে চবি প্রশাসন, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। চার দিনেও আমরা তাদের কোনো খোঁজ পাইনি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তিন পার্বত্য জেলা শহর, মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে সংহতি জানাতে সচেতন, মানবিক, প্রগতিশীল ছাত্র এবং নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চবি শাখার সভাপতি অন্বেষ চাকমা বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন সূত্রে আমরা এ অপহরণে ইউপিডিএফের জড়িত থাকার বিষয় জানতে পেরেছি। যে এলাকা থেকে অপহৃত হয়েছেন, সেটিও ইউপিডিএফ অধ্যুষিত।’
তিনি বলেন, ‘অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে অপহরণকারীরা কী বলেছে, তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি জেনেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক শাংথুই প্রু, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ভুবন চাকমা, পহেলা চাকমা, পালি বিভাগের উহ্লাথোয়াই মারমা প্রমুখ।