২৭ বছর পর দিল্লির ক্ষমতায় এসেই এখান থেকে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ বিতাড়নে বিজেপি কোমর কষে নামছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গতকাল শুক্রবার এই বিষয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত ও পুলিশের বড় কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন।

অমিত শাহ অভিযোগ তুলে বলেন, আম আদমি পার্টির (আপ) জন্য এত দিন যা করা সম্ভব হয়নি, এবার তা করতে হবে। অবৈধভাবে দিল্লিতে বসবাস করা বাংলাদেশি এবং মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠাতে হবে। এই বিষয়ে দিল্লি পুলিশ ও রাজ্য সরকারকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

দিল্লির সরকার ও দিল্লি পুলিশের সঙ্গে ওই বৈঠকে অমিত শাহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বড় কর্মকর্তাদেরও যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, অবৈধভাবে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় স্তরে পাওয়া যাবতীয় তথ্য সময়মতো রাজ্য সরকারকে দেওয়া হবে। সরকারকে ও দিল্লি পুলিশকে উদ্যোগী হয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই কাজে বিজেপির সংগঠনকে ব্যবহার করতে হবে।

অমিত শাহ বৈঠকে বলেন, এটা দিল্লি তথা দেশের নিরাপত্তার জন্য জরুরি। সবাইকে সতর্ক করে তিনি বলেন, কিছু অসাধু চক্র রয়েছে, যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বৈধতা প্রমাণে বৈধ পরিচয়পত্র পেতে সাহায্য করে। এসব চক্র ভেঙে দিতে হবে।

দিল্লিতে বিজেপি সরকার গড়তে পারল ২৭ বছর পর। দেশের রাজধানী হওয়ায় দিল্লির পুলিশ রাজ্যের অধীনে রাখা হয়নি। তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে। দিল্লির জমির অধিকারও কেন্দ্রীয় নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের। ফলে দিল্লির নির্বাচিত সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকারের মুখাপেক্ষী থাকতে হয়।

আম আদমি পার্টির (আপ) রাশ টানতে কেন্দ্রীয় সরকার আইন করে দিল্লির উপরাজ্যপালকে আরও ক্ষমতাশালী করে তুলেছে। উপরাজ্যপালের সম্মতি ছাড়া রাজ্য সরকার কোনো সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন করতে পারে না। এ জন্য আপ সরকারের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে প্রতি পদে উপরাজ্যপালের দ্বন্দ্ব দেখা গেছে।

বিজেপির অভিযোগ, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার এত বছর রাজ্য সরকারের সহযোগিতা পায়নি। রাজনৈতিক সমর্থনের স্বার্থেও আপ নেতারা অবৈধ অনুপ্রেবেশকারীদের বৈধতার প্রমাণপত্র পাইয়ে দিয়েছে। এখন দিল্লি ও কেন্দ্রে বিজেপির ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার হওয়ায় অমিত শাহ রোহিঙ্গা ও কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত ও ফেরত পাঠানোর বিষয়টি ত্বরান্বিত করতে চাইছেন।

বৈঠকে অমিত শাহ বলেছেন, দিল্লির আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যার সমাধানসহ কোনো বিষয়েই ব্যর্থতার কোনো অজুহাত এখন আর দেওয়া যাবে না। ফলে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ থেকে কথিত অনুপ্রবেশের বিষয়টি বিজেপির রাজনৈতিক হাতিয়ার। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খন্ডসহ আসাম, ত্রিপুরায় অনুপ্রবেশ বিজেপির প্রচারে বড় হয়ে ওঠে। অনুপ্রবেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তাদের ধর্মীয় মেরুকরণেরও সহায়ক। বিজেপি চাইছে শুধু চিহ্নিতকরণই নয়, অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রেও কার্যকর ভূমিকা নিতে।

সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্টও এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করে জানতে চান, যুক্তরাষ্ট্র বিমানবোঝাই করে অবৈধভাবে সে দেশে যাওয়া ভারতীয়দের ফেরত পাঠাতে পারলে ভারত কেন অবৈধভাবে ভারতে আসা ‘বাংলাদেশিদের’ফেরত পাঠাতে পারে না?

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জ য সরক র অন প র

এছাড়াও পড়ুন:

এপ্রিলে কালবৈশাখী ও ঘূর্ণিঝড়ের আভাস

বঙ্গোপসাগরে চলতি এপ্রিল মাসে ১ থেকে ২টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এর ফলে তিন দিন তীব্র কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানতে পারে। এছাড়া, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।    

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ মো. মমিনুল ইসলামের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিভিন্ন মডেল পূর্বাভাস, আবহাওয়া উপাত্ত, ঊর্ধ্বাকাশের আবহাওয়া বিন্যাস, বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের বিশ্লেষিত আবহাওয়ার মানচিত্র ও জলবায়ু মডেল বিশ্লেষণ করে এপ্রিল মাসের জন্য এ পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিসের বিশেষজ্ঞ কমিটি। 

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এপ্রিল মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ সময় দেশে ৫ থেকে ৭ দিন বজ্র এবং শিলাবৃষ্টিসহ হালকা বা মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া, ১ থেকে ৩ দিন তীব্র কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে।

এতে জানানো হয়, এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি নিম্নচাপ অথবা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
 
এপ্রিলে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এ সময় দেশে ২ থেকে ৪টি মৃদু অথবা মাঝারি এবং ১ থেকে ২টি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
 

ঢাকা/হাসান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ