রাতে শাশুড়ি ও স্বজনদের নিয়ে স্বামীর জন্মদিনের কেক কাটেন আঞ্জুমান মায়া। এরপর মধ্যরাত থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সকালে পদ্মা নদীতে তাঁর ভাসমান লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের কালোয়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

দুপুরে সুরতহাল শেষে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় নৌ পুলিশ। আঞ্জুমান মায়া ওই এলাকার আজিজ শেখের ছেলে আসিফ শেখের (১৮) স্ত্রী। আসিফ কয়া মহাবিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ও একটি বেসরকারি কোম্পানির খাদ্য পরিবেশক। আঞ্জুমান কুষ্টিয়া পৌরসভার ত্রিমোহনী এলাকার আজিম উদ্দিনের একমাত্র মেয়ে।

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ভাষ্য, আঞ্জুমান প্রায়ই রাতের বেলা আনমনা হয়ে বের হয়ে যেতেন। শুক্রবার রাতে বের হলে আর পাওয়া যায়নি। তবে বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, ব্যবসার টাকা না পেয়ে আঞ্জুমানকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন স্বামী আসিফ।

স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রাধানগর এলাকায় আঞ্জুমানের নানাবাড়ি। প্রায় সাত মাস আগে নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আসিফের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এ সম্পর্কের প্রায় দুই মাস পর পালিয়ে বিয়ে করেন তাঁরা। এক সপ্তাহ পর বউ নিয়ে নিজ বাড়িতে যান আসিফ। পারিবারিকভাবে মেনে নেওয়ার পর ভালো চলছিল তাঁদের সংসার।

স্বজনেরা জানান, গতকাল আসিফের জন্মদিন ছিল। বাড়িতে ছিল বন্ধু ও স্বজনদের আনাগোনা। বিকেলে আঞ্জুমান তাঁর স্বামীকে নিয়ে বাজার থেকে কেক কিনে আনেন। রাত আটটার দিকে স্বামী ও শাশুড়িকে নিয়ে কেক কাটেন। রাতে স্বজনদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া শেষে ১০টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েন স্বামী। এরপর রাত একটার দিকে আসিফ জেগে দেখেন, স্ত্রী ঘরে নেই। দরজা খোলা। তখন স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে রাতভর সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও স্ত্রীকে পাননি। পরে আজ সকাল ছয়টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে পদ্মা নদীতে তাঁর ভাসমান লাশ দেখতে পান এলাকাবাসী।

আঞ্জুমানের শাশুড়ি ফেরদৌসি খাতুন বলেন, ‘প্রেম করে বিয়ে করলেও সংসারে কোনো অশান্তি ছিল না। শুক্রবার রাতেও সবাই মিলেমিশে জন্মদিন উদ্‌যাপন করল। সবাই একসঙ্গে রাতে খেয়েছিলাম। পরে রাত একটার দিকে ছেলের কাছ থেকে শুনি বউ ঘরে নেই। এরপর সবাই মিলে সারা রাত খুঁজেও কোথাও পাইনি। পরে সকালে নদীতে লাশ পাইছি। আঞ্জুমানের উপসর্গজনিত রোগ ছিল। প্রায়ই ঘর থেকে হারিয়ে যেত। উপসর্গই তাঁকে মারেছে।’

স্বামী আসিফ শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংসার খুবই ভালো চলছিল। রাতে ধুমধাম করে আমার জন্মদিন উদ্‌যাপন করি। খাবার খেয়ে রাত ১০টার দিক শুয়ে পড়ি। এরপর রাত একটার দিকে জেগে দেখি, আঞ্জুমান নেই। রাতে খোঁজাখুঁজি করে না পেলেও সকালে নদীতে লাশ পেয়েছি। স্ত্রীর উপসর্গজনিত রোগ ছিল।’

কয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, রাতে নিখোঁজ ছিলেন ওই গৃহবধূ। সকালে নদীতে স্থানীয় লোকজন দেখতে পান, মাছ ধরা জালের সঙ্গে আটকে আছে তাঁর লাশ। কী ঘটেছে, তা ময়নাতদন্ত করলেই জানা যাবে।

মেয়ে হারানোর শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আঞ্জুমানের মা পারভিন খাতুন। বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আসিফ আমার মেয়েকে ছলাকলা করে বিয়ে করেছে। তিন দিন আগে ব্যবসা করার জন্য তিন লাখ টাকা চেয়েছিল। টাকা না পেয়ে মেয়েকে নদীতে ডুবিয়ে হত্যা করেছে। আমার মেয়ের কোনো উপসর্গ ছিল না। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

সোলায়মান শেখ বলেন, খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নৌ পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপসর গ

এছাড়াও পড়ুন:

হল্যান্ডের ইনজুরিতে ম্লান সিটির সেমিতে ওঠার আনন্দ

এফএ কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বোর্নমাউথকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা সপ্তমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠেছে ম্যানচেস্টার সিটি। তবে সিটিজেনদের এই জয় ম্লান করে দিয়েছে স্ট্রাইকার আর্লিং হল্যান্ডের ইনজুরি। ম্যাচে সমতাসূচক গোল করেছিলেন হালান্ড, কিন্তু চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। বদলি হিসেবে নেমে দলের জয় নিশ্চিত করেন ওমর মারমুশ।  

ভাইটালিটি স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে বোর্নমাউথ। ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগ আসে দশম মিনিটে, তবে বের্নার্দো সিলভার ক্রসে হলান্ডের হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১৪ মিনিটে পেনাল্টি পায় সিটি, ডি-বক্সে বল হাতে লাগায় বোর্নমাউথ ডিফেন্ডার অ্যাডামস। কিন্তু স্পটকিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন হালান্ড, তার শট রুখে দেন কেপা আরিজাবালাগা।  

এরপর ২১ মিনিটে ম্যানসিটি রক্ষণভাগের ভুলে এগিয়ে যায় বোর্নমাউথ। সিটির ডিফেন্সে গড়ে ওঠা জটলার সুযোগ নিয়ে স্ট্রাইকার এভালিসন গোল করেন, ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেয় স্বাগতিক দলকে। এরপর সিটি একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি, ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় তারা।  

বিরতির পর ফিরে ম্যাচে সমতা ফেরান হল্যান্ড। ৪৯ মিনিটে তার দুর্দান্ত গোলেই ম্যাচে ফিরেছিল সিটি। কিন্তু ৫৬ মিনিটে বোর্নমাউথ রাইটব্যাক লুইস কুকের সঙ্গে সংঘর্ষে গোড়ালিতে ব্যথা পান তিনি। প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে খেলা চালিয়ে গেলেও কিছুক্ষণ পর ব্যথা বাড়ায় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন নরওয়েজিয়ান তারকা।  

হল্যান্ডের বদলি হিসেবে নামা ওমর মারমুশ ৬৩ মিনিটে গোল করে ম্যানসিটিকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। এরপরও আক্রমণ চালিয়ে যায় পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। ৮২ মিনিটে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন ইলকাই গুন্ডোয়ান, ৯২ মিনিটে একইভাবে ব্যর্থ হন মাকিতি। শেষ মুহূর্তে সময়ক্ষেপণের জন্য হলুদ কার্ড দেখেন ম্যাথিয়াস নুনেজ ও মাকিতি।  

শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে ২-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ম্যানসিটি, আর প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ভেঙে যায় বোর্নমাউথের। সেমিফাইনালে নটিংহ্যাম ফরেস্টের মুখোমুখি হবে ম্যানচেস্টার সিটি, আর অন্য সেমিফাইনালে লড়বে ক্রিস্টাল প্যালেস ও অ্যাস্টন ভিলা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে: তথ্য উপদেষ্টা
  • ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচার হবে’
  • ঈদের রাতে নৈশ প্রহরীকে গুলি করে হত্যা
  • অভিষিক্ত অশ্বিনীর বলে, রায়ানের ব্যাটে মুম্বাইর প্রথম জয়
  • রাঙামাটি কারাগারে কারাবন্দিদের ঈদ উদযাপন
  • ঘোরাঘুরি শেষে বাসায় ফিরে ত্বকের যত্নে করণীয়
  • ঈদে কারাবন্দীদের জন্য কী কী খাবার থাকছে
  • হল্যান্ডের ইনজুরিতে ম্লান সিটির সেমিতে ওঠার আনন্দ
  • মুঠোফোন বেজে চললেও কোনো জবাব আসছে না: ভবনের বাইরে উদ্বিগ্ন স্বজনদের অপেক্ষা
  • কারাগারে ঈদ কাটবে যেসব নেতার, পাবেন যে খাবার