চলতি মাসে রোডম্যাপ না দিলে রাজনৈতিক শক্তিগুলো সিদ্ধান্ত নেবে: সালাহউদ্দিন
Published: 1st, March 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
একমাসের (চলতি মাস) মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ না দিলে রাজনৈতিক শক্তিগুলো বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ত্যাগ ও নেতৃত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ‘নন্দিত নেত্রী খালেদা জিয়া’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, এই গণ-অভ্যুত্থানের পর সুস্থ ধারার রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ আর কখনও ফিরতে পারবে না। দলটি যদি আবারও রাজনীতির সুযোগ পায়, তবে সেটা আমাদের রাজনৈতিক ব্যর্থতা।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট নির্ধারণ হয়ে গেছে দেশে আর মানুষ আওয়ামী লীগের রাজনীতি চায় না। সেই দলটিকে এখনও বিচারের আওতায় আনা হয়নি, শুধু মুখেই বলছে অন্তর্বর্তী সরকার।
অন্তর্বর্তী সরকার ইনিয়ে-বিনিয়ে নির্বাচন দেয়ার কথা বলছে অভিযোগ করে সালাহউদ্দিন বলেন, বিদেশে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের কথা বলেন। যদি সৎ উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে দেশে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনের রোডম্যাপ দিন। আপনাকে অতিশিগগিরই নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে হবে। একমাসের মধ্যে না দিলে রাজনৈতিক শক্তিগুলো বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
সার্বভৌম স্বাধীন রাষ্ট্রে গণপরিষদ নির্বাচন নয় উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যারা গণপরিষদের বিষয় সামনে আনছে, দ্বিতীয় রিপাবলিকের কথা আনছে। হয় তারা বোঝে না, নয়তো জেনেশুনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করার ষড়যন্ত্র করছে।
যারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছেন, তাদের উদ্দেশ্যে সালাহউদ্দিন বলেন, ৫ আগস্ট কি মেম্বার চেয়ারম্যান করার জন্য হয়েছিল। এগুলো মূলত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করতে চায় একটি গোষ্ঠী।
এম জি
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন র জন ত ক র র জন
এছাড়াও পড়ুন:
২০৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি, রিফাত রশীদের পদত্যাগ
নতুন ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’-এর আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে ২০৫ সদস্যের। এই কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরও যুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ নামের এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেওয়া হয়। সে সময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির ছয় নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কয়েকজন নেতার নাম প্রকাশ করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার একই জায়গায় সংবাদ সম্মেলন করে অন্য সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার, সদস্যসচিব জাহিদ আহসান, মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আবদুল কাদের, সদস্যসচিব মহির আলম, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাইম আবেদীনসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বুধবার এই কমিটি ঘোষণার সময় পদ পাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। তখন পাল্টাপাল্টি স্লোগান ও অন্তত দুই দফায় মারধরের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনা পরিকল্পিত ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আবু বাকের মজুমদার বলেন, আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরীকে প্রধান করে সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৌহিদ সিয়াম ও জ্যেষ্ঠ সংগঠক নাঈম আবেদীনকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। এরপর অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুধবারের বিক্ষোভকারীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশীদকে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার দাবি করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিফাত রশীদকে নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব করা হয়েছিল।
আজ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন রিফাত রশীদ। তিনি এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘এই কমিটিতে আমার নাম ঘোষণা করার আগে আমার থেকে কনফারমেশন (অনুমতি) নেওয়া হয়নি। দফায় দফায় আলোচনা হয়েছিল, কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। ফলত অনুমতি ব্যতীত আমার নাম কমিটিতে রাখায় আমি এই পদ থেকে সরে এসেছি।’
রিফাত রশীদের জায়গায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল মাশনূনকে সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব মনোনীত করা হয়েছে এবং বেসরকারি ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নাঈম আবেদীনকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সংগঠক করা হয়েছে বলে আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার জানান।
যেমন হবে এই ছাত্রসংগঠন
সংবাদ সম্মেলনে আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ কোথাও লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি চায় না। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিই, আমাদের এই ছাত্রসংগঠন কখনো লেজুড়বৃত্তি করবে না। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক উপায়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করবে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে সর্বোচ্চ বয়স ২৮ বছর হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিগুলোতে ভর্তি হওয়া থেকে সর্বোচ্চ সাত বছরের মধ্যে নেতৃত্বে আসতে পারবে। এ ছাড়া আমাদের সংগঠন থেকে নারীদের জন্য কমফোর্ট জোনের (স্বস্তিদায়ক পরিবেশ) ব্যবস্থা করা হবে।’
আবু বাকের মজুমদার আরও বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করছি। এটা যেহেতু আহ্বায়ক কমিটি। এখানে হাজার লোক রাখা সম্ভব নয়। আহ্বায়ক কমিটি শুধু কমিটি আহ্বান করবে, ইউনিটভিত্তিক কমিটি প্রস্তুত করবে। পরবর্তী কাউন্সিলের ভিত্তিতে কমিটি প্রস্তুত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নতুন ছাত্রসংগঠনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিভাজন করা হয়নি; বরং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে সংগঠনের সদস্যসচিব জাহিদ আহসান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রাইভেটে কিংবা মাদ্রাসায় কে পড়ে, এটা নিয়ে আমরা বিভাজন জুলাইয়ে করিনি। ফলে আমরা ছাত্রসংগঠনেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিভাজন করিনি।’
আরও যাঁরা পদ পেলেন
আহ্বায়ক কমিটিতে কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক পদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নুরুল গণি সগীর ও খান তালাত মাহমুদ (রাফি), ঢাকা কলেজের জুবায়ের হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল করিম ও নুরনবী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেহেদী সজিব, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারাবী জিসান, ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার তুহিন আহমেদকে রাখা হয়েছে। আর যুগ্ম সদস্যসচিব পদ পেয়েছেন সালাউদ্দিন আম্মার, সানজানা আফিফা অদিতি, আজিজুল হক এবং হাটহাজারী মাদ্রাসার আবরার কাউসার। এ ছাড়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারদিন হাসানকে সহমুখপাত্র করা হয়েছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের জ্যেষ্ঠ সংগঠক ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাঈম আবেদীন বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে এমন ভুল বুঝিয়ে বুধবার তাঁদের মধুর ক্যানটিনের সামনে আনা হয়েছিল। ভুল–বোঝাবুঝির কারণে ‘মব’ তৈরি হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ জনকে কমিটিতে রাখার বিষয়টি তাঁদের জানানো হলে তাঁরা বুঝতে পেরেছেন।
বুধবারের মারামারির ঘটনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে যে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ বিষয়ে সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক এম জে এইচ মঞ্জু গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকালের (বুধবারের) ঘটনাটি যেহেতু মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং (ভুল–বোঝাবুঝি) ছিল, তাই আমরা যে কর্মসূচিগুলো দিয়েছিলাম, সেগুলো সাময়িকভাবে তুলে নিয়েছি। তবে আহতদের সঙ্গে কথা বলে আমরা পরবর্তী সময়ে কেমন কর্মসূচি দেব, তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।’