ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে পারেন ট্রাম্প
Published: 1st, March 2025 GMT
ইউক্রেনে সব ধরনের সামরিক সহায়তা বন্ধের কথা বিবেচনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। ওভাল অফিসে স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পরে ওয়াশিংটন পোস্টকে এমনটাই বলেছেন হোয়াইট হাউজের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
শনিবার (১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কিয়েভ পোস্ট।
শুক্রবার হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে বৈঠকে বাগবিতণ্ডায় জড়ান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার চুক্তি স্বাক্ষরের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। বাতিল করা হয় দুই নেতার যৌথ সংবাদ সম্মেলন। এর পরপরই হোয়াইট হাউজ থেকে জেলেনস্কিকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।
আরো পড়ুন:
ট্রাম্পের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা
জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউজ থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয়েছিল
ট্রাম্প-জেলেনস্কির বাগবিতণ্ডা, প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন বিশ্ব নেতারা
এদিনই হোয়াইট হাউজের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনে সমস্ত সামরিক সহায়তা বন্ধ করার কথা বিবেচনা করছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এই সিদ্ধান্তের ফলে ইউক্রেনে পাঠানোর অপেক্ষায় থাকা কোটি কোটি ডলারের রাডার, যানবাহন, গোলাবারুদ এবং ক্ষেপণাস্ত্র বন্ধ হয়ে যাবে।’
ওই কর্মকর্তা জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল, এমন দাবিও খারিজ করে দিয়েছেন। জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, বৈঠকের আগে ‘ইতিবাচক সুর দেওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা করা হয়েছিল।”
ওয়াশিংটন পোস্টের সূত্র অনুসারে, ট্রাম্প তাদের বৈঠকের আগে জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে তার মন্তব্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার মাধ্যমে এটি প্রতিফলিত হয়েছিল।
ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, বাইডেন প্রশাসনের অধীনে ইউক্রেনের জন্য অনুমোদিত গোলাবারুদ এবং সরঞ্জামের চূড়ান্ত চালানসহ সব ধরনের মার্কিন সহায়িতা ট্রাম্প প্রশাসন শিগগির সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে পারে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ হামলার পর, বাইডেন প্রশাসন মার্কিন সামরিক সাহায্য প্রায় প্রতি দুই সপ্তাহ পরপর ঘোষণা করেছিল, কখনও কখনও মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে। সূত্রের বরাতে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেন্টাগনের মজুদ থেকে ইউক্রেনের জন্য প্রায় ৩ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার এখনও অনুমোদিত থাকায়, ট্রাম্প প্রশাসন এই চালানগুলো সরবরাহের আগেই তা প্রত্যাহার করতে পারে।
সাবেক বাইডেন প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলো থেকে ইউক্রেন সর্বশেষ যেসব অস্ত্র কিনেছে, তা আগামী ছয় মাসের মধ্যে পাঠানো হবে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের জন্য পরোক্ষ সহায়তাও বন্ধ করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে: সামরিক অর্থায়ন, গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি, ইউক্রেনীয় সেনা ও পাইলটদের প্রশিক্ষণ এবং জার্মানির একটি ঘাঁটি থেকে আন্তর্জাতিক সাহায্যের মার্কিন সামরিক সমন্বয়।
নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, ওভাল অফিসে শুক্রবারের ঘটনার পরে ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ সহায়তাও বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।”
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন কর মকর ত র একজন বল ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিসিবি আমার ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছে’
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক প্রধান কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে বিসিবির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন। অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম কোড স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই তাকে বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), যা তার কোচিং ক্যারিয়ারের ভবিষ্যত ধ্বংস করে দিয়েছে।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ চলাকালে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাকে বরখাস্ত করে বিসিবি। তবে শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন হাথুরুসিংহে। তার ভাষায়, ‘তারা আমাকে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার কোনো সুযোগ দেয়নি। শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে আমার ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছে।’
সেই সময়কার রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগও তুলে ধরেছেন হাথুরুসিংহে। জানান, বরখাস্ত হওয়ার পর তিনি নিজেকে চরম নিরাপত্তাহীন মনে করছিলেন। ‘সাধারণত আমার সঙ্গে একজন ড্রাইভার ও একজন বন্দুকধারী থাকত। কিন্তু ওই দিন শুধু ড্রাইভার ছিল। তখনই বুঝেছিলাম, কিছু একটা ঘটেছে।’
ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে গিয়ে টিভিতে নিজের চাকরিচ্যুতির খবর দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। ব্যাংক ম্যানেজারও তাকে সতর্ক করে বলেন, রাস্তায় বের হলে বিপদ হতে পারে। পরে এক বন্ধুর সহায়তায় টুপি ও হুডি পরে মধ্যরাতের ফ্লাইটে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এই শ্রীলঙ্কান কোচ। নাসুমের ঘটনার ব্যাখ্যায় হাথুরু বলেন, ‘আমি কাউকে চড় মারিনি। আসলে আমি ব্যাটসম্যানদের গ্লাভস পাঠাতে বলছিলাম, তাই পিঠে হালকা টোকা দিই। এটাকে চড় বলা সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা।’
এই ঘটনার সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক সহকারী কোচ নিক পোথাস ও স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথও। হেরাথ বলেন, ‘বিশ্বকাপে তার চারপাশে সবসময় ক্যামেরা ছিল। এমন কিছু ঘটলে তার ভিডিও বের হতোই।’ পোথাস যোগ করেন, ‘এটা খুবই স্পষ্ট যে, কেউ হয়তো তার প্রতি ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে এ ধরনের অভিযোগ এনেছে।’
হাথুরুসিংহে মনে করেন, তাকে বরখাস্ত করা ছিল বিসিবির বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদের পরিকল্পিত পদক্ষেপ। ‘আমি জানি না, গত ছয় মাসে কতগুলো চাকরির সুযোগ হারিয়েছি। বিসিবি শুধু আমার চাকরি নয়, আমার পুরো কোচিং ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছে,’ বলেন তিনি।