Prothomalo:
2025-03-31@20:44:15 GMT

রোজার আগে বাজারে এল তরমুজ

Published: 1st, March 2025 GMT

আগামীকাল শুরু হতে পারে পবিত্র রমজান মাস। রমজানের সময় ইফতারের জনপ্রিয় রসালো ফল তরমুজ। অনেকেই রোজা ভাঙেন তরমুজের শরবত দিয়ে। অনেকে ইফতারে খাদ্যতালিকায় তরমুজের মতো ফল রাখতে চান। এদিকে ধীরে ধীরে শীতের আমেজ শেষে গরম পড়তে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে রমজানের প্রাক্কালে তরমুজের দেখা মিলছে। তরমুজ বেচাকেনায় হাঁকডাক বাড়ছে।

এক সপ্তাহ ধরে বাজারে পুরোদমে নতুন তরমুজ আসতে শুরু করেছে। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা দরে। তবে খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এখনো তরমুজের বাজার জমে ওঠেনি। রোজা শুরু হলে বাজার জমবে, এমন আশা তাঁদের।

আজ শনিবার রাজধানীর আগারগাঁও, তালতলা, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল মার্কেট ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, তরমুজের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় অপেক্ষাকৃত বেশি। দরদাম করে কেউ তরমুজ কিনে ফিরছেন, আবার অনেক দাম শুনে চলে যাচ্ছেন।

সাধারণত ডিসেম্বর মাসে তরমুজের আবাদ শুরু হয়। এপ্রিল-মে মাসজুড়ে থাকে তরমুজের ভরা মৌসুম। তবে ফেব্রুয়ারির শেষে বা মার্চের শুরুতে বাজারে কিছু আগাম (আগে আবাদ করা) তরমুজ আসে। বর্তমানে বাজারে এ ধরনের আগাম তরমুজই বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, এখন তরমুজের সরবরাহ মোটামুটি রয়েছে; সামনে আরও বাড়বে। বর্তমানে বাজারে যে তরমুজগুলো দেখা যাচ্ছে, তা আকারে ছোট বা মাঝারি। ওজনে এগুলো তিন থেকে পাঁচ কেজির আশপাশে। বড় তরমুজ খুবই কম দেখা যায়।

বর্তমানে বরিশাল অঞ্চল, বিশেষ করে পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা ও ঝালকাঠিতে উৎপাদিত তরমুজ বাজারে বেশি আসছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের স্বল্প কিছু তরমুজও পাওয়া যায়। আর খুলনা অঞ্চলের তরমুজের এখনো বাজারে আসতে শুরু করেনি। মৌসুম পুরোপুরি শুরু হলে সব এলাকার তরমুজ বাজারে পাওয়া যাবে।

খুচরা বিক্রেতারা জানান, রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে আজ প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। সে হিসাবে মাঝারি আকারের পাঁচ কেজির একটি তরমুজের দাম পড়বে ৩০০-৩৫০ টাকা। অবশ্য কারওয়ান বাজারে কিছুটা কমে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। এই বাজারে এক কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা।

কারওয়ান বাজারের তরমুজ বিক্রেতা আরশাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর প্রথম রমজানের আগে প্রতি কেজি তরমুজ ৮০ টাকায় বিক্রি করেছি। এ বছর বিক্রি করছি ৫০-৫৫ টাকায়। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় কেজিতে ২৫-৩০ টাকা দাম কম রয়েছে।

কয়েক দিনের মধ্যে এ দাম আরও কমবে বলে জানান আরেক বিক্রেতা আবু সাঈদ। তিনি বলেন, এখন তরমুজের চাহিদা বেশি। ভরা মৌসুম শুরু হলে দাম কমে ৪০-৪৫ টাকায় নেমে আসবে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আজ সকালে তরমুজ কিনতে যান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী জয়নাল আবেদীন। দোকানে এক কেজি তরমুজের দাম চাওয়া হয় ৭০ টাকা। পরে দরাদরি করে সেটি ৬৫ টাকা দরে কেনেন তিনি। জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ভেবেছিলাম, দাম আরও কিছুটা কম হবে। যেহেতু রোজা শুরু হয়ে গেছে, তাই প্রথম ইফতারের জন্য আগ্রহ করেই কিনেছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: তরম জ ব ক র তরম জ র দ ন তরম জ রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঢেকে রাখা সেই মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরালে শেখ মুজিবের স্মৃতিচিহ্ন ভেঙে ফেলা হলো   

লালমনিরহাট শহরের শিশুপার্ক সংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিমঞ্চে স্থাপিত ম্যুরালের কিছু অংশ ভেঙে ফেলেছে জেলা প্রশাসন। ২৬ মার্চ জেলা প্রশাসন ওই ম্যুরালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে অনুষ্ঠান পরিচালনা করে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি ও গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। কাপড় দিয়ে ম্যুরাল ঢেকে দেওয়ার ঘটনায় মুখোমুখি অবস্থান নেয় জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম পার না হতেই রোববার জেলা প্রশাসন মুক্তিযুদ্বের স্মৃতিচিহ্ন  ম্যুরাল ভাঙার কাজে হাত দেয়। 

এর আগে শনিবার দুপুুরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মঞ্চে দু’টি পক্ষ একই সময়ে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দুপুর সাড়ে ১১টায় ওই এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করলেও জাতীয় নাগরিক পার্টি করতে পারেননি। 

মুক্তিযুদ্ব স্মৃতি মঞ্চে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালমনিরহাট শাখার প্রধান সমন্বয়ক হামিদুর রহমান ম্যুরাল অপসারণ ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরাতে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন। এ সময় তিনি দাবি করে বলেন, ‘এই ম্যুরালটি স্বাধীন বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস বহন করে না। বাকশাল প্রতিষ্ঠাকারী স্বৈরাচার শেখ মুজিবুর রহমানকে অতিরঞ্জিত উপস্থাপন ও ইতিহাস বিকৃতি করায় এর আগেও ১৬ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসন ম্যুরালটি ঢেকে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫২, ৭১ এর সকল সত্য ইতিহাস অক্ষুণ্ণ রেখে অতিরঞ্জিত অংশ ও স্বৈরাচারের চিহ্ন ঢেকে দেওয়ার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট তা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পুরো দেয়াল ঢেকে দেয়, যা অনাকাঙ্খিত। কিছু স্বৈরাচারের দোসর তাদের ব্যক্তিগত  আক্রোশ, স্বার্থ উদ্ধার ও বর্তমান সরকারের কার্যক্রমকে বিতর্কিত করতে জেলা প্রশাসনের কার্যক্রমকে ভুলভাবে প্রচার করতে থাকে এবং বিদ্বেষবশত মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ম্যুরাল ঢেকে দেওয়ার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অবগত ছিল না, তাঁরা এমন কোনো দাবিও করে নাই। স্বৈরাচারের সকল চিহ্ন ও ম্যুরাল অপসারণ ছাত্রজনতার দাবি ও গণআকাঙ্খা।’ 

সংবাদ সম্মেলন শেষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের মুক্তিযোদ্ধারা স্মৃতিসৌধ এলাকায় যান। সেখানে জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি হাফিজুর রহমান হাফিজ জানান, ম্যুরালের মধ্যেই বৈষম্য রয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানে যেমন অবদান রয়েছে তেমনি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানেরও অবদান রয়েছে। অথচ ম্যুরালে জিয়াউর রহমানের কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই। এটা বৈষম্য। এই ম্যুরাল রাখা ঠিক নয়।   

শনিবার জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গেলে তোপের মুখে পড়েন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই ম্যুরালে ৫২ ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকার গঠন, চরমপত্র পাঠ, ৭১ এর গণহত্যা, বিজয় উল্লাসে মুক্তিযোদ্ধা, সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ ও পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্মৃতিচিহ্ন ঢেকে দিয়ে চরম ধৃষ্ঠতা দেখিয়েছেন জেলা প্রশাসন। পরে তাঁরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর দায় চাপিয়েছেন। ৭১ ও ২৪কে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে জাতিকে বিভাজিত করে আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র চলছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ৭১ এর অস্তিত্ব ধরে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ দিয়ে অন্যগুলোর সঙ্গে আমাদের কোনো মতানৈক্য নেই। 
 
২৬ মার্চ বুধবার সকালে সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্বাঞ্জলি দিতে গেলে কাপড় দিয়ে মুরাল ঢেকে রাখার বিষয়টি চোখে পড়ে। সনাক সদস্যরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফিরে যান। পরে লালমনিরহাট রেলওয়ে শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্বাঞ্জলি দেন তাঁরা। গত ১৬ ডিসেম্বরও একই রকম ঘটনা ঘটায় জেলা  প্রশাসন। ১৪০ ফুট দীর্ঘ ওই ম্যুরালে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ, মুজিবনগর সরকার গঠন, চরমপত্র পাঠ, উদিত সূর্য, ৭১ এর গণহত্যা, মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানি, সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ ও পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে।  

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দারের বক্তব্য জানতে তাঁর ফোনে মেসেজ এবং ফোন দিলে কোনো সাড়া মেলেনি।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ