আগামীকাল শুরু হতে পারে পবিত্র রমজান মাস। রমজানের সময় ইফতারের জনপ্রিয় রসালো ফল তরমুজ। অনেকেই রোজা ভাঙেন তরমুজের শরবত দিয়ে। অনেকে ইফতারে খাদ্যতালিকায় তরমুজের মতো ফল রাখতে চান। এদিকে ধীরে ধীরে শীতের আমেজ শেষে গরম পড়তে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে রমজানের প্রাক্কালে তরমুজের দেখা মিলছে। তরমুজ বেচাকেনায় হাঁকডাক বাড়ছে।
এক সপ্তাহ ধরে বাজারে পুরোদমে নতুন তরমুজ আসতে শুরু করেছে। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা দরে। তবে খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এখনো তরমুজের বাজার জমে ওঠেনি। রোজা শুরু হলে বাজার জমবে, এমন আশা তাঁদের।
আজ শনিবার রাজধানীর আগারগাঁও, তালতলা, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল মার্কেট ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, তরমুজের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় অপেক্ষাকৃত বেশি। দরদাম করে কেউ তরমুজ কিনে ফিরছেন, আবার অনেক দাম শুনে চলে যাচ্ছেন।
সাধারণত ডিসেম্বর মাসে তরমুজের আবাদ শুরু হয়। এপ্রিল-মে মাসজুড়ে থাকে তরমুজের ভরা মৌসুম। তবে ফেব্রুয়ারির শেষে বা মার্চের শুরুতে বাজারে কিছু আগাম (আগে আবাদ করা) তরমুজ আসে। বর্তমানে বাজারে এ ধরনের আগাম তরমুজই বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, এখন তরমুজের সরবরাহ মোটামুটি রয়েছে; সামনে আরও বাড়বে। বর্তমানে বাজারে যে তরমুজগুলো দেখা যাচ্ছে, তা আকারে ছোট বা মাঝারি। ওজনে এগুলো তিন থেকে পাঁচ কেজির আশপাশে। বড় তরমুজ খুবই কম দেখা যায়।
বর্তমানে বরিশাল অঞ্চল, বিশেষ করে পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা ও ঝালকাঠিতে উৎপাদিত তরমুজ বাজারে বেশি আসছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের স্বল্প কিছু তরমুজও পাওয়া যায়। আর খুলনা অঞ্চলের তরমুজের এখনো বাজারে আসতে শুরু করেনি। মৌসুম পুরোপুরি শুরু হলে সব এলাকার তরমুজ বাজারে পাওয়া যাবে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে আজ প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। সে হিসাবে মাঝারি আকারের পাঁচ কেজির একটি তরমুজের দাম পড়বে ৩০০-৩৫০ টাকা। অবশ্য কারওয়ান বাজারে কিছুটা কমে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। এই বাজারে এক কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের তরমুজ বিক্রেতা আরশাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর প্রথম রমজানের আগে প্রতি কেজি তরমুজ ৮০ টাকায় বিক্রি করেছি। এ বছর বিক্রি করছি ৫০-৫৫ টাকায়। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় কেজিতে ২৫-৩০ টাকা দাম কম রয়েছে।
কয়েক দিনের মধ্যে এ দাম আরও কমবে বলে জানান আরেক বিক্রেতা আবু সাঈদ। তিনি বলেন, এখন তরমুজের চাহিদা বেশি। ভরা মৌসুম শুরু হলে দাম কমে ৪০-৪৫ টাকায় নেমে আসবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আজ সকালে তরমুজ কিনতে যান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী জয়নাল আবেদীন। দোকানে এক কেজি তরমুজের দাম চাওয়া হয় ৭০ টাকা। পরে দরাদরি করে সেটি ৬৫ টাকা দরে কেনেন তিনি। জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ভেবেছিলাম, দাম আরও কিছুটা কম হবে। যেহেতু রোজা শুরু হয়ে গেছে, তাই প্রথম ইফতারের জন্য আগ্রহ করেই কিনেছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তরম জ ব ক র তরম জ র দ ন তরম জ রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দ্রব্যমূল্য নানাভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্ট
দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষ কষ্টে আছে স্বীকার করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন তারা নানাভাবে দাম নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ‘‘বাজার পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের কষ্ট আছে। আমরা দ্রব্যমূল্য নানাভাবে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। আমরা মনে করি, শুধু শাস্তি দিয়ে বা অভিযান চালিয়ে এ ধরনের নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আমরা উদ্যোগ নিয়ে করতে পারি, সেটাও প্রমাণ হয়েছে।’’
রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘খামারিদের উৎপাদিত পণ্য ভোক্তা পর্যন্ত আনতে হাত বদলের কারণে যে দাম বাড়ে, সেখান থেকে যদি আমরা বের হতে চাই, তাহলে আমাদের কিছু প্রক্রিয়া রাখতে হবে। সেই জন্য সুলভ মূল্যে ডিম, দুধ, মুরগি ও গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। এটা ভর্তুকির বিষয় না। আসল খরচে আমরা করছি। রোজার মাসে মাছের চেয়ে মাংসের চাহিদা বেশি থাকে। সেই কারণে এ তালিকায় মাছ রাখা হয়নি।’’
সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা শহর এবং বিভিন্ন জেলায় প্রতিদিন সুলভমূল্যে ডিম, দুধ, মুরগি ও গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
রোজার নিয়ত ও সাহরির মাসয়ালা
নোয়াখালীর ৪ গ্রামে রোজা শুরু
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে টাঙ্গাইলে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘‘বর্তমানে বাজারের যে চাহিদা, এটা কোনোভাবে সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব না। কিন্তু আমরা এটা করতে পারি, যে জরুরি প্রয়োজনীয় ডিম, দুধ, মাংসসহ যেগুলো রমজান মাসে বেশি চাহিদা থাকে; সেইগুলো যদি আমরা কম দামে বিক্রি করে দেখাতে পারি, তাহলে ব্যবসায়ীদের কাছে একটা ম্যাসেজ চলে যাবে।’’
শিক্ষার্থীদের নতুন সংগঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘জুলাই আন্দোলনে যারা অংশ নিয়েছিল, যারা নেতৃত্ব দিয়েছিল; তাদের অবদানও তো আমাদের স্বীকার করতেই হবে। তারা একটা নতুন বাংলাদেশ দিয়েছে। রাজনৈতিক যে পরিস্থিতি, তাতে নতুন চিন্তা, নতুন ধারণা আসুক। তাদের যদি ভুলভ্রান্তি থাকে, সেটা দেখা যাবে। এই দল করা এটা ভুল কিছু না। এটা আগামী নির্বাচনের আগে একটা নতুন মাত্রা যোগ করবে।’’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল্যাহ আল মামুন, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল রানা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ প্রমুখ।
টাঙ্গাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সপ্তাহে এক দিন ৬৫০ টাকা দরে ১০০ কেজি করে গরুর মাংস বিক্রি করা হবে। এছাড়াও পাঁচ দিন ৮০ টাকা লিটার দরে দুধ, ১১৪ টাকা ডজন ডিম, ২৫০ টাকা কেজি ড্রেসিং করা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করা হবে।
ঢাকা/কাওছার/বকুল