চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছে আফগানিস্তান। তবে বৃষ্টির কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ায় তাদের সেমিফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে গেছে। তবু সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার ডেল স্টেইনের বিশ্বাস, আগামী এক দশকের মধ্যেই কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টের শিরোপা জিততে সক্ষম হবে আফগানরা।

স্টেইনের মতে, ধৈর্যের অভাব আফগান ক্রিকেটারদের অন্যতম বড় দুর্বলতা। তিনি বলেন, ‘আগে খেলোয়াড়রা দক্ষতা ও ধৈর্য বাড়াতে কাউন্টি বা প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলতেন। কিন্তু এখনকার যুগে মানুষ দীর্ঘসময় মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না। আমরা ইন্সটাগ্রাম স্টোরির মতো দ্রুত কিছু দেখতে চাই, যা ক্রিকেটারদের মানসিকতায়ও প্রভাব ফেলছে।’

আফগানিস্তানের ব্যাটাররা শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে চান, যা স্টেইনের দৃষ্টিতে ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, ‘তারা খুব দ্রুত ফল পেতে চায়। ব্যাটাররা প্রথম ওভারেই ছক্কা মারার চেষ্টা করে, বোলাররা বল হাতে নিয়েই উইকেট নিতে চায়। ধৈর্য ধরার মানসিকতা তাদের মধ্যে অনুপস্থিত।’

স্টেইন আশাবাদী, যদি আফগান ক্রিকেটাররা ধৈর্য রপ্ত করতে পারে, তাহলে এক দশকের মধ্যেই তারা আইসিসির শিরোপা জয়ের সক্ষমতা অর্জন করবে। তার ভাষায়, ‘আফগান ক্রিকেটাররা বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি খেলছে, যা আর্থিকভাবে লাভজনক এবং শেখার জন্য দারুণ। তবে টেস্ট বা চারদিনের ক্রিকেটে অংশ নিলে তারা আরও উন্নতি করবে। ওয়ানডে ক্রিকেট মূলত টেস্টের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ, যেখানে মাঝে মাঝে টি-টোয়েন্টির কৌশল দরকার হয়, তবে ধৈর্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংও আফগানিস্তানকে বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী দল বলে উল্লেখ করেছিলেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ কোনো ম্যাচ জিততে না পারলেও আফগানিস্তান সেমিফাইনালের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল। সব ঠিক থাকলে, স্টেইনের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি করতেই পারে আফগানরা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন ড ল স ট ইন আইস স আফগ ন স ত ন স ট ইন র

এছাড়াও পড়ুন:

এনবিআরকে প্রতিদিন গড়ে ২২৭৫ কোটি টাকা আদায় করতে হবে

চলতি অর্থবছরের শেষ তিন মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা আদায় করতে হবে। এ বছরের সংশোধিত লক্ষ্য অর্জনে শেষ তিন মাসে এমন চাপে থাকবে এনবিআর।

চলতি অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) এনবিআরকে ২ লাখ ৭ হাজার ১৩ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য আছে। চলতি অর্থবছরের পুরো সময়ের জন্য এনবিআরের সংশোধিত শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য হলো ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ৯ মাসের শুল্ক-কর আদায়ের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। এই সময়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে অর্থবছরের শেষ তিন মাসের রাজস্ব আদায়ের চাপের চিত্রটি উঠে এসেছে।

ঋণের শর্ত হিসেবে শুল্ক-কর আদায় বাড়ানোর জন্য শর্ত দিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, দেশের কর-জিডিপি অনুপাত ৭ দশমিক ৪ থেকে বাড়িয়ে চলতি অর্থবছরের মধ্যে ৭ দশমিক ৯-এ উন্নীত করার কথা বলেছে আইএমএফ। কিন্তু এনবিআর এ বছরও বড় ধরনের ঘাটতির মুখে পড়তে যাচ্ছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ঘাটতি হয়েছে ৬৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা। এই সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আদায় করেছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা। এই সময়ে ৩ লাখ ২২ হাজার ১৫২ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য ছিল।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে গড়ে প্রতিদিন সাড়ে নয় শ কোটি টাকার মতো আদায় হয়। এখন পুরো বছরের লক্ষ্য অর্জনে প্রতিদিন আগের চেয়ে আড়াই গুণ বেশি শুল্ক কর আদায় করতে হবে।

চলতি অর্থবছরে এনবিআরে জন্য মূল লক্ষ্য ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় না হওয়ায় লক্ষ্য কমানো হয়।

এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়ে। এ ছাড়া অর্থনীতি তথা ব্যবসা-বাণিজ্য শ্লথগতিও রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে পড়ার কারণ। আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট আদায় বিঘ্ন হয়েছে। আয়কর কর কম আদায় হয়েছে। তাঁরা আরও বলেন, প্রতিবছর এনবিআরের ওপর যৌক্তিকভাবে বিশাল লক্ষ্য দিয়েছে। এ জন্য লক্ষ্য অর্জিত হয় না।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, জুলাই-মার্চ মাসে আমদানি, ভ্যাট ও আয়কর—এই তিন খাতের মধ্যে কোনোটিতেই সাত মাসের লক্ষ্য পূরণ হয়নি।

পরিসংখ্যান

জুলাই-মার্চ সময়ে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি আয়কর খাতে। এই খাতে লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা। এই সময়ে আদায় হয়েছে ৮৬ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। আয়করে ঘাটতি হয়েছে ২৯ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা।

অন্যদিকে ৯ মাসে আমদানি খাতে ৯০ হাজার ৭২৭ কোটি টাকার লক্ষ্যের বিপরীতে ৭৪ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। এই খাতে ঘাটতি হয়েছে ১৬ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

গত জুলাই-মার্চ সময়ে ভ্যাট খাতে আদায় হয়েছে ৯৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকা। এই সময়ে এই খাতে লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। এ খাতে ঘাটতি হয়েছে সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ