‘কে কী করেছে, কে আওয়ামী লীগ করেছে, সেটা বিষয় নয়। সবাই আমাদের মানুষ। চৌরঙ্গীর মানুষ। এদের পুলিশের অ্যারেস্ট করতে হলে আমাদের কাছে অনুমতি নিয়ে করতে হবে। এর বাইরে যদি একটা মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়, আমরা থানা ঘেরাও করব সবাই মিলে। কে কোন দল করেছে, ওটা দেখার বিষয় নয়।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিএনপি নেতার ভাইয়ের এমন বক্তব্য দেওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ব্যক্তির নাম শেখ রাসেল। তিনি কুমারখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলার চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ রেজাউল করিমের ছোট ভাই। তিনি বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক হিসেবে ময়মনসিংহে কর্মরত। গতকাল শুক্রবার রাতে ১ মিনিট ২২ সেকেন্ডের ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শেখ রাসেল। তখন অনেকেই তাঁর বক্তব্য ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার (লাইভ) করেন। রাতেই তা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিএনপি নেতা শেখ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো.

মিজানুর রহমান, যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী মোল্লা, যদুবয়রা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে আবেগাপ্লুত হয়ে রাসেলকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা অনেক অন্যায় করেছি। আমরা ছোট ছিলাম। আমরা বুঝিনি। আমাদের ক্ষমা করে দিন। আমাদের সাথে থাকেন। আর একটা অন্যায়ও আমাদের দ্বারা হবে না। মেহেদী রুমীর নেতৃত্বে শেখ সদর উদ্দিনের স্বপ্নের চৌরঙ্গী গড়ার ইচ্ছা আমার। আমাদের সাথে থাকেন। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি। সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী জিন্দাবাদ, চৌরঙ্গীবাসী জিন্দাবাদ।’ বক্তব্যের পর মঞ্চে বসার আগে সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর সঙ্গে করমর্দন করেন তিনি।

জানতে চাইলে শেখ রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার অনুমতি নিয়ে নয়, আমরা বলেছি, পুলিশ বিভিন্ন নিরপরাধ মানুষকে ধরে নিয়ে তাদের বলছে যে “ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ”। তাদের অ্যারেস্ট করে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এলাকায় এ রকম যাতে না ধরা হয়, এ জন্য এটা বলেছি।’

শেখ রাসেল তাঁর দেওয়া এই বক্তব্য নিজে রেকর্ড করে রাখলেন জানিয়ে এ প্রতিবেদককেও রেকর্ড করে রাখার পরামর্শ দেন। এরপর তিনি বলেন, ‘এসব ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আপনারা বড় করে দেখবেন না। ধরেন, আমার এটা স্লিপ অব টাং হয়ে যেতে পারে।’

তবে শেখ রাসেলের এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি। বিএনপি তা সমর্থন করে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আহম দ র ম ব এনপ র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে শেরপুরের ৯ গ্রামে রোজা পালন হলো আজ

সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে শেরপুরের ৯ গ্রামে আজ শনিবার রোজা পালন করা হয়েছে।

জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার চরখারচর উত্তর ও দক্ষিণ, মুন্সীরচর ও বামনেরচর, ঝিনাইগাতী উপজেলার বনগাঁও চতল, নকলা উপজেলার বানের্শ¦দী ও নালিতাবাড়ি উপজেলার চিনামারা ও নন্নী মধ্যপাড়া গ্রামের মানুষ গত কয়েক বছর ধরে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদ উদযাপন করছেন। এসব গ্রামের মানুষ সুরেশ্বর দরবার শরীফের মুরিদ বলে জানা গেছে।

শনিবার রোজা পালনের জন্য শুক্রবার রাতে কয়েক শত মুসল্লি তারাবি নামাজ আদায় ও সেহরি খাওয়ার মধ্য দিয়ে রোজার কার্যক্রম শুরু করেন।

এ ব্যাপারে নকলা উপজেলার রাজ্জাক মিয়া নামে এক ব্যক্তির ভাষ্য- তারা দীর্ঘদিন ধরে সৌদি ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদ উদযাপন করেন। এটাকেই তারা সঠিক দিন বলে মনে করেন।

শেরপুরের বমনেরচরের নূরন্নবী ও চরখার চরের আব্দুল হান্নান সমকালকে বলেন, যেহেতু সৌদি আরবসহ মুসলিম দেশগুলো শনিবার থেকে রোজা পালন করছে তাই আমরাও তাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করে তারাবি নামাজ ও সেহরি খেয়ে রোজা পালন শুরু করেছি এবং তারা যেদিন ঈদ উদযাপন করবেন সেদিন আমরাও ঈদ উদযাপন করব। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ