কুমিল্লার ষাটোর্ধ্ব মোতাসিনের প্রেমের টানে ছুটে এলেন ইউক্রেনের মনোবিদ
Published: 1st, March 2025 GMT
কুমিল্লা নগরের চর্থা বড় পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা মোতাসিন বিল্লাহ চৌধুরীর বয়স এখন ৬৩। তাঁর প্রেমের টানে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন চেক প্রজাতন্ত্রে বাস করা ইউক্রেনের নাগরিক সালো নাদিয়া। ৫০ বছর বয়সী এই নারী একজন মনোবিদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঁচ বছরের পরিচয় ও তিন বছরের প্রেমের সম্পর্কের অবশেষে তাঁরা পূর্ণতা দিয়েছেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসেন নাদিয়া। ২৫ ফেব্রুয়ারি নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করে দুজন দাম্পত্যজীবনে আবদ্ধ হন। প্রেমিক মোতাসিন বিল্লাহ চৌধুরী পেশায় একজন ব্যবসায়ী। বিয়ের পর নাদিয়াকে নিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন তিনি। দাম্পত্যজীবনে সুখী হতে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তাঁরা।
সালো নাদিয়াকে বিয়ে করার আগে মোতাসিন বিল্লাহ অবিবাহিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন। তবে নাদিয়ার আগে বিয়ে হয়েছিল। অনেক আগেই তাঁর বিচ্ছেদ হয়েছে। পরিবারে নাদিয়ার ছোট দুই বোন আছে। তাঁদের একজন শিক্ষক, অন্যজন চিকিৎসক।
মোতাসিন বিল্লাহ আজ শনিবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাইকোলজিস্ট নাদিয়ার সঙ্গে ২০১৯ সালে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরে দুজনের মধ্যে মাঝেমধ্যে ফেসবুকের মেসেঞ্জারে কথা হতো। বছর দুয়েক কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে নাদিয়াকে প্রেম নিবেদন করি। আর তাতেই সম্মতি দেন নাদিয়া। দুজনের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া হওয়ায় সিদ্ধান্ত নেন দাম্পত্যজীবনে জড়ানোর। সেই সূত্রে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন নাদিয়া। এরপর তাঁকে কুমিল্লায় নিয়ে আসি।’
সালো নাদিয়া ইউক্রেনের নাগরিক হলেও ১৫ বছর ধরে তিনি চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগে বসবাস করছেন বলে জানান মোতাসিন বিল্লাহ। সেখানে মনোবিদ হিসেবে মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেন। নাদিয়া ইউক্রেনীয় ও স্প্যানিশ ভাষায় কথা বললেও ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। মোতাসিন বিল্লাহর সঙ্গে ইংরেজিতেই মনের ভাব আদান-প্রদান করেন তিনি।
স্ত্রী নাদিয়া বাংলায় কথা বলতে জানেন না উল্লেখ করে মোতাসিন বিল্লাহ জানান, তিনি ধীরে ধীরে সব শিখিয়ে দেবেন তাঁকে। এ ব্যাপারে তাঁর আগ্রহ আছে। বাংলাদেশের কী কী পছন্দ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাদিয়া খুবই ভালো একজন মানুষ। তিনি বাংলাদেশকে খুবই পছন্দ করেন। তবে বাংলাদেশের জলবায়ু ও জনসংখ্যা নিয়ে তাঁর কিছুটা আপত্তি আছে। বাংলাদেশের পোশাক তাঁর প্রিয়। কুমিল্লার রসমালাই খেতে পছন্দ করেন। তবে বাংলাদেশের অতিরিক্ত ঝাল দিয়ে রান্না তাঁর ভালো লাগে না।
মোতাসিন বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, নাদিয়া কয়েক দিন বাংলাদেশে থাকবেন। এরপর আবার চেক প্রজাতন্ত্রে ফিরে যাবেন। সেখানে যাওয়ার পর তাঁর (মোতাসিন) ভিসার জন্য চেষ্টা করবেন। ভিসা পেলে তিনিও আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকবেন। নাদিয়াও বাংলাদেশে যাওয়া-আসার মধ্যে থাকবেন। দাম্পত্যজীবনে সুখী হতে তাঁরা সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনে যৌন হয়রানির ঘটনার বিবরণ দিলেন অভিনেত্রী
বলিউড, মারাঠি এবং তামিল ছবির পাশাপাশি ওয়েব সিরিজেও নিজের অভিনয়ের ছাপ রেখেছেন অভিনেত্রী অদিতি পোহনকার। ‘লাই ভারি’ ছবিতে রিতেশ দেশমুখের বিপরীতে কাজ করার পর দর্শকের নজরে আসেন তিনি। এরপর ‘শি’ এবং ‘আশ্রম’ ওয়েব সিরিজে তার চরিত্র তাকে নিয়ে যায় নতুন উচ্চতায়।
সম্প্রতি বলিউড বাবলকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন অদিতি। সাক্ষাৎকারে মুম্বাই লোকাল ট্রেনের যৌন হয়রানির এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি।
অদিতি বলেন, ‘যদি কেউ সত্যিকারের জীবনের অভিজ্ঞতা নিতে চায়, তাহলে তাকে মুম্বাই লোকালে তুলে দিন। অভিজ্ঞতা ছাড়া তিনি ফিরে আসবেন কিনা, তার কোনো গ্যারান্টি নেই!’
তিনি জানান, ট্রেনে সফর করার সময় এক কিশোর তাঁকে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি করে। বিষয়টি একা সামলাননি তিনি—সরাসরি পুলিশ ডেকে অভিযুক্তকে ধরে মারধরও করেন। অদিতির কথায়, ‘সে এতটাই নির্লজ্জ ছিল যে পুলিশের সামনেও নিজের কাজ থামায়নি, ভুল স্বীকারও করেনি।’
তিনি জানান, সেই ছেলেটির বয়স ছিল মাত্র ১৩ বা ১৪ বছর, সম্ভবত সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তবুও অদিতির সাহসিকতা দেখে অনেকেই বিস্মিত। তিনি বলেন, ‘ভয় পেও না, সাহস নিয়ে মোকাবিলা করো। সোজাসাপ্টা কথা বলো।’
তিনি বলেন, একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি একবার ফার্স্ট ক্লাস মহিলা কামরায় যাত্রা করছিলেন। ওই কামরায় ১৮ বছরের কমবয়সী স্কুল ড্রেস পরা ছেলেদেরও ওঠার অনুমতি ছিল। ট্রেনটি যখন দদার স্টেশন থেকে ছাড়ে, তখন তাঁর পাশে দাঁড়ানো এক স্কুলপড়ুয়া ছেলেটি হঠাৎ করেই তাঁর বুকে হাত দেয়। এ ঘটনার পর আমি সম্পূর্ণভাবে হতবাক হয়ে যাই।’
তিনি বলেন, পরের স্টেশনে নেমে বিষয়টি পুলিশকে জানাই। আশ্চর্যের বিষয়, ছেলেটি তখনও সেই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল এবং আরেকজন মেয়ের সঙ্গেও একই কাজ করার চেষ্টা করছিল।
পুলিশ তখন মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করে, ‘তোমার কাছে কী প্রমাণ আছে?” উত্তরে সে জানায়, “আমি বলছি, ও এটা করেছে। আমি কেন মিথ্যা বলব?’
“একজন মহিলা কনস্টেবল আমার সাথে এসে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি কি তার সাথে কিছু করেছ? তিনি তা অস্বীকার করলেন। তারপর, যখন আমি তাকে আঘাত করার মতো অঙ্গভঙ্গি করলাম, তখন সে আতঙ্কিত হয়ে বলল, হ্যাঁ, দুঃখিত, দুঃখিত।’
এরপর অন্য কারো সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দেন সেই ছেলেটি।