জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের তরুণ নেতাদের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) লক্ষ্য দেশে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠা করা। গতকাল শুক্রবার নতুন এ দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এমনটাই জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। কিন্তু সেকেন্ড রিপাবলিক বলতে প্রকৃতপক্ষে তাঁরা কী বোঝাতে চাইছেন, সেটি অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়।

‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ধারণাটি ফ্রান্সের ইতিহাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। পোল্যান্ড, কোস্টারিকাসহ আরও কয়েকটি দেশের ইতিহাসের সঙ্গেও মিশে আছে এটি। এটি এমন একটি রাজনৈতিক ধারণা, যা বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সার্বিকভাবে এমন ধারণায় কোনো দেশে পূর্ববর্তী শাসনব্যবস্থার বদল ঘটিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বা শাসনকাঠামো গ্রহণ করাকে বোঝায়। বিপ্লব, অভ্যুত্থানসহ নানাভাবেই আসতে পারে এমন পরিবর্তন।

উদাহরণ হিসেবে ইউরোপের দেশ ফ্রান্সের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা যায়। এটি একসময় রাজতন্ত্রের অধীন ছিল। ১৭৮৯ থেকে ১৭৯৯ সাল পর্যন্ত ফরাসি বিপ্লব চলে। এর মধ্য দিয়ে রাজতন্ত্রের পতন ঘটে। তবে বিপ্লব চলার মধ্যেই ১৭৯২ সালে ফ্রান্সে প্রথম রিপাবলিক ঘোষণা করা হয়।

ফ্রান্সে ১৮০৪ সাল পর্যন্ত প্রথম রিপাবলিক টিকে ছিল। এরপর আবার রাজতন্ত্র শুরু হয়। এ পর্ব চলে ১৮৪৮ সাল পর্যন্ত। ওই বছর ফ্রান্সে দ্বিতীয় রিপাবলিক ঘোষণা করা হয়। এটি টিকে ছিল ১৮৫২ সাল পর্যন্ত। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হলেও ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ফ্রান্সের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়। দফায় দফায় শাসনব্যবস্থা বদলে ফ্রান্সে এখন চলছে পঞ্চম রিপাবলিক।

আরও পড়ুনজাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের কে কোন পদে১৭ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশেও আলোচনায় ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দলে দলে হাজির হন সমর্থকেরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ক ন ড র প বল ক

এছাড়াও পড়ুন:

পাকা ঘর পেলেন ভোলার পিঠা বিক্রেতা নাজমা বেগম

নাজমা বেগম (৫৫)। খালপাড়ে পিঠা বিক্রি করে কোনোমতে দুবেলা খাবার জোগাড় করেন। বাড়ি বলতে একটি টিনের জীর্ণ ঘর। বর্ষাকালে ঘরে পানি পড়ে, যার কারণে ঘরে থাকা কষ্টকর। হঠাৎ পাকা ঘর উপহার পেয়েছেন নাজমা বেগম। হয়তো তিনি কল্পনাও করেননি এমন একটি পাকা ঘর হবে তাঁর।

নাজমার বাড়ি ভোলা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোলা খালের পাড়ে। ২২ বছর আগে স্বামী আবুল কাশেম মারা যান। শুরু হয় তাঁর জীবনসংগ্রাম। নাজমা বেগম ছিলেন দ্বিতীয় স্ত্রী। স্বামী সচিবালয়ের গাড়ি চালাতেন। পেনশনের টাকাপয়সার বেশির ভাগ বড় স্ত্রী আর তাঁর সন্তানেরা নিয়ে যান।

নাজমা মেয়েকে নিয়ে এসে বাবার বাড়িতে ওঠেন। বাবা হাদীসুর রহমানের মৃত্যুর পর নাজমার জীবনে নেমে আসে ভয়ানক দুর্দশা। বাবার মৃত্যুর পর সবাই ঘর ভেঙে ভাগ করে নেন। ভাগে পাওয়া পুরোনো টিনে কোনো রকম রাত্রিযাপন করার জন্য একটি ঘর তোলেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে, কোনো রকম মেয়েকে বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। বয়স বাড়া আর নানা রকম অসুখে অন্যের বাড়িতে দিন–রাত কাজ শরীরে কুলায় না। তাই দুই বছর ধরে শীতের কয়েক মাস তিনি বিকেলে খালপাড়ে পিঠা বিক্রি করতে বসেন।

নাজমার দৈন্যদশার কথা জানতে পারেন নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নিজামউদ্দিন আহমেদ। তিনি ব্যবসার জন্য ছয় হাজার টাকা ও একটি পাকা ঘর তৈরি করে দেন। আজ শনিবার বেলা ১১টায় নাজমাকে ঘরে চাবি তুলে দেন তিনি।

নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা আমাকে খুব ভালো রেখেছেন। জানতে পারলাম নাজমা বেগমের ঘরের দরকার। আসলাম, দেখলাম, একটি নিরাপদ আবাস গড়ে দিলাম। নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অনেক ঘর, স্কুল, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম গড়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলো গড়ে আমি ও আমার স্ত্রী শান্তি পাই। এগুলো গড়ে দেওয়ার পেছনে আমার কোনো উদ্দেশ্য নেই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ