সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য মিয়ানমারের আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে বাংলাদেশ যোগাযোগ রাখছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

শনিবার (১ মার্চ) বেলা সোয়া ১১টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, টেকনাফ স্থলবন্দরে মিয়ানমারের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য রয়েছে। কিন্তু আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্য দখলে নেওয়ার পর থেকে সীমান্ত বাণিজ্যের জাহাজ আসা যাওয়ায় তারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এরইমধ্যে অনেক জাহাজ তারা আটকে রেখেছিল। ধরে নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশি অনেক জেলেকে।

তিনি বলেন, এসব ঘটনা স্বাভাবিক বাণিজ্য পরিস্থিতি ব্যাহত করছে। এ কারণে দেশের সীমান্ত সুরক্ষা এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের স্বার্থে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিংহভাগ দখল নেওয়া আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ঢাকা।

তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারে অপহরণ ও মাদকের বিস্তার বেড়েছে। প্রায়ই এসব বিষয় গণমাধ্যমে আসছে। আপনারা (সাংবাদিকরা) এবং স্থানীয় সচেতনমহল জানেন কারা এসব করছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, মানবিক কারণে আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। কাগজে কলমে ১২ লাখ বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। তারা আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। তাদের প্রত্যাবাসন ছাড়া সীমান্ত এলাকার অপরাধ কর্মকাণ্ড থামানো মুশকিল। আবার তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনও সম্ভব নয়।

দলীয় পরিচয়ে পর্যটন এলাকায় দখল-বেদখল, মারামারি ও ছিনতাই বাড়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আমরা কোনো দলের বদান্যতায় কাজ করছি না। দেশের কল্যাণে যা যা করণীয় তাই করা হচ্ছে। প্রশাসনের কাউকে কোনো দপ্তর থেকে বলে দেওয়া হয়নি, অমুক দলের লোকজনকে সহানুভূতি দেখাতে। কোনো দলের নেতাকর্মী দখল বা অন্য কোনো অপরাধে জড়ালে প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা এ বৈঠকেই দিয়ে যাচ্ছি। দলীয় বিবেচনায় নয়, অপরাধ বিবেচনায় ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।

এম জি

.

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: আর ক ন আর ম

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় আবারও গাড়িতে ডাকাতি, মহাসড়ক এমন অনিরাপদ জানলে দেশে ফিরতাম না, বললেন প্রবাসী

কুমিল্লায় দুই দিনের ব্যবধানে মালয়েশিয়া ফেরত এক প্রবাসীর গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম থানার অর্ধ কিলোমিটার দূরে ফাল্গুনকরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই প্রবাসীর নাম বেলাল হোসেন, তিনি শাহজালাল বিমানবন্দরে নেমে ভাড়া করা প্রাইভেটকারযোগে তার গ্রামের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঁইয়ার শরিফপুর গ্রামে যাচ্ছিলেন। ডাকাত দল গাড়ি থেকে নগদ টাকা, মোবাইল সেট, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৬ লাখ টাকার মালামাল লুটে নিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। একই স্থানে গত বৃহস্পতিবার ভোরে কুয়েত থেকে ফেরা এক প্রবাসীর গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল।

পুলিশ জানায়, প্রবাসী বেলাল মালয়েশিয়া থেকে শুক্রবার রাত ১০টায় হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বিমানবন্দর থেকে ভাড়া করা প্রাইভেটকারে তিনি স্বজনদের নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা করেন। শনিবার ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে মহাসড়কের উপজেলা সদরের ফাল্গুনকরা নামক স্থানে পৌঁছলে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনের ডাকাত দল পিকআপে করে এসে প্রবাসীর ভাড়া করা প্রাইভেটকারটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় গাড়ির গতি কমানোর পর ডাকাত দল পিকআপ থেকে নেমে অস্ত্রের মুখে প্রবাসীসহ অপর স্বজনদের জিম্মি করে সব মালামাল লুটে নেয়।

প্রবাসী বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করার জন্য ৩ বছর পর প্রবাস থেকে দেশে আসি শুক্রবার রাতে। বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়ে মহাসড়কের মেঘনা ব্রিজ পার হয়ে যাত্রাবিরতি করি। বিরতি শেষে আবারও রওনা করলে দাউদকান্দি এলাকায় বিশাল যানজটে আটকা পড়ি। এ সময় চালক জাবেদ উল্টো লেন দিয়ে গাড়িটি অনেক দূর নিয়ে আসেন। ভোরে মহাসড়কের ফাল্গুনকরা এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে ত্রিপল মোড়ানো একটি পিকআপ ভ্যান এসে আমাদের বহনকৃত প্রাইভেটকারটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় চালক প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ রেখে গতি কিছুটা কমালে ডাকাত দল পিকআপ থেকে নেমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রাইভেটকারটিতে আঘাত করে ভাঙচুর করে। এ সময় অস্ত্রের মুখে ডাকাত দল গাড়িতে থাকা ৫টি মোবাইল ফোন, ১ ভরি স্বর্ণ, ৩ হাজার মালেশিয়ান রিঙ্গিত এবং ৪টি মালামালের লাগেজ লুটে নেয়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬ লাখ টাকা। এসময় তারা আমার পাসর্পোটটিও কেড়ে নেয়, পরে অনুরোধ করলে পাসপোর্টটি ফেরত দেয়। প্রবাসী বেলাল বলেন, ‘বিদেশে অনেক ঘাম ঝরিয়ে অর্থ কামাই করে দেশে ফিরে ডাকাতদের কবলে পড়ে সব হারাতে হলো। মহাসড়ক এমন অনিরাপদ জানলে দেশে আসতাম না।’

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহাসড়কে চলাচলকারী বেশ কয়েকজন মাইক্রোবাসের চালক বলেন, ডাকাত দল কখনও বিমানবন্দর ও কখনও মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে হোটেলে অবস্থান নিয়ে প্রবাসীদের গাড়ি ফলো করে। ভোর ৪টার পর মহাসড়ক যানবাহনের চাপ কম থাকে। পুলিশও টহলে থাকে না। এ সময় তারা ডাকাতির সুযোগ নেয়। গত দুই দিনের ডাকাতির বেলায়ও তাই হয়েছে। রমজানের তারাবি ও সেহেরীর সময় ডাকাতির আশংকা করছেন চালকরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার একই একই স্থানে সশস্ত্র ডাকাত দল হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে কুয়েত প্রবাসী নাইমুল ইসলামের সর্বস্ব লুটে নেয়। এ ঘটনায় মামলা হলেও কেউ আটক হয়নি।

চৌদ্দগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহাম্মেদ সমকালকে বলেন, এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ভুক্তভোগী ওই প্রবাসীকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। ডাকাতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। ওসি দাবি করেন, হাইওয়ে পুলিশের বিষয়টি জানি না, তবে থানা পুলিশ সকাল পর্যন্ত মহাসড়কে টহলে ছিল।

হাইওয়ের পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, মহাসড়কে চৌদ্দগ্রামে প্রবাসীর গাড়িতে ডাকাতির সংবাদ পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাতদের ব্যবহার করা গাড়ি শনাক্তের চেষ্টা চলছে। রমজানে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের টহল টিম আরও বৃদ্ধি করা হবে বলেও তিনি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ