আফগানিস্তান এক দশকের মধ্যে আইসিসি টুর্নামেন্ট জিততে পারে, বললেন স্টেইন
Published: 1st, March 2025 GMT
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে গতকাল দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রায় বিদায়ই নিয়েছে আফগানিস্তান। আগে ব্যাট করে ২৭৩ রান তোলার পর অস্ট্রেলিয়া তাড়া করতে নেমে ১ উইকেটে ১০৯ রানে থাকতে বৃষ্টির কারণে ম্যাচে আর খেলা হয়নি। আগেই ১ পয়েন্টে এগিয়ে থাকা আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলে সেমিফাইনালে উঠে গেছে অস্ট্রেলিয়া।
রশিদ খানদের সেমিফাইনালে ওঠার সুযোগ আছে শুধু কাগজে–কলমে। আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা অন্তত ২০৭ রানে হারলেই শুধু শেষ চারের টিকিট পাবে আফগানিস্তান, যেটা বাস্তবে প্রায় অসম্ভব।
আরও পড়ুনতোমাদের বেতন হয় ভারতের কারণে—সমালোচকদের পাল্টা তোপ গাভাস্কারের২ ঘণ্টা আগেকিন্তু চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আফগানিস্তানের খেলা অনেকেরই নজর কেড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে লড়াকু পুঁজি গড়ার আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২৫ রান তুলে ম্যাচ জিতেছিল আফগানিস্তান। এর আগে ২০২৩ বিশ্বকাপেও একই দলকে হারিয়েছিল রশিদ–হাশমতদের দল। জাগিয়েছিল সেমিফাইনালের সম্ভাবনা। ২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তো নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেমিফাইনালেও খেলেছে দলটি। এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে শেষ চারে না যেতে পারলেও দলটির ধারাবাহিক সাফল্যে ভবিষ্যতে ভালো কিছুই দেখছেন অনেকে। যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি পেসার ডেল স্টেইন।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার ডেল স্টেইন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন স ম ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
চরাঞ্চলের ভাগ্য বদলাবে বাকৃবি উদ্ভাবিত নতুন তিন পদ্ধতি
বাংলাদেশের চরাঞ্চলের মাটি সাধারণত বেলে বা বেলে-দোঁয়াশ প্রকৃতির, যা পানির ধারণক্ষমতা ও জৈব পদার্থের পরিমাণ কম। পাশাপাশি, সেচের সমস্যা, আকস্মিক বন্যা, খরা ও আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে চরাঞ্চলের কৃষি উৎপাদনশীলতা তুলনামূলক কম।
তবে এসব প্রতিকূলতা মোকাবিলায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষিতত্ত্ব বিভাগের একদল গবেষক।
গবেষকরা নতুন তিন শস্যবিন্যাস পদ্ধতির মাধ্যমে একই জমিতে বছরজুড়ে তিন ধরনের ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে সাফল্য পেয়েছেন। এতে ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকদের জন্য লাভজনক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চর গুজিমারী এলাকায় এ গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
কাশিয়ানীতে ৫ মাসে ২৩ ট্রান্সফরমার চুরি, সেচ ব্যাহত
‘টমেটো এখন পাখিদের খাদ্য’
গবেষণাটি ‘ফসলের উৎপাদনের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পরীক্ষণ এবং জলবায়ু সহনশীল ফসল ব্যবস্থার অভিযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের চরাঞ্চলের ফসলের উৎপাদনশীলতার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে।
এর নেতৃত্বে রয়েছেন বাকৃবির কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ খায়রুল হাসান। গবেষণা দলে আছেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও বাকৃবির পিএইচডি গবেষক পরেশ চন্দ্র দাস ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ইকরামুল হক।
গবেষকরা চরাঞ্চলের কৃষকদের জন্য তিনটি লাভজনক শস্যবিন্যাস পদ্ধতি নির্ধারণ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে, ভুট্টা-পাট-রোপা আমন, আলু-পাট-রোপা আমন এবং মরিচ-চিনাবাদাম-রোপা আমন পদ্ধতি। আধুনিক জাত, উন্নত প্রযুক্তি ও কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সবচেয়ে লাভজনক পদ্ধতিটি চিহ্নিত করে কৃষকদের জন্য সুপারিশ করা হবে।
প্রধান গবেষক ড. আহমেদ খায়রুল হাসান বলেন, “আকস্মিক বন্যা মোকাবিলায় জলমগ্ন সহনশীল বিনাধান-১১ এবং কম বয়সী চারা ভালো ফলন দিয়েছে। পাশাপাশি ভুট্টা ও মরিচ চাষের সঙ্গে আন্তঃফসল হিসেবে আলু, পেঁয়াজ, রসুন, গাজর, কালোজিরা, মেথি, ধনিয়া ও মটরশুঁটি চাষ করায় একক ফসলের তুলনায় অধিক লাভ হয়েছে।”
তিনি বলেন, “গবেষণায় দেখা গেছে, মালচিং ও ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করে আলুর উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। পাটের বীজ প্রাইমিং করায় অঙ্কুরোদগমের হার বেড়েছে। আগাছা দমনে আগাছানাশক ও হ্যান্ড উইডিংয়ের সমন্বিত ব্যবহারে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। এছাড়াও বারি সরিষা-১৪, রঙিন ফুলকপি, বাঁধাকপি, মটরশুঁটি, গম, রসুন, কাউন ও সূর্যমুখীর ফলন সন্তোষজনক ছিল।”
গবেষণার সফল প্রয়োগ ইতোমধ্যে চরাঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চর গুজিমারী এলাকার কৃষাণী নাছিমা খাতুন জানান, গবেষকদের পরামর্শে ৩৩ শতাংশ (১ বিঘা) জমিতে সূর্যমুখী, ভুট্টা ও রোপা আমন চাষ করে তিনি ভালো ফলন পেয়েছেন। ভবিষ্যতে আরো বেশি জমিতে এ শস্যবিন্যাসের মাধ্যমে চাষের পরিকল্পনা করছেন তিনি।
গবেষণা দলের সদস্য কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সালাম বলেন, “নির্দিষ্ট শস্যবিন্যাস অনুসরণ করলে একই জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে আগাছার প্রভাব কমে, মাটির পুষ্টি উপাদান সংরক্ষিত থাকে এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। ইতোমধ্যে গবেষণার ক্ষেতে প্রতি আধা শতাংশ জমিতে ৭৬ কেজি পর্যন্ত আলু উৎপাদনের নজির পাওয়া গেছে, যা কৃষকদের জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।”
ঢাকা/মেহেদী