শরীয়তপুরের কীর্তিনাশা নদীতে ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় আরো এক ডাকাতকে গণপিটুনি শেষে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় একটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ হয়।

শনিবার (১ মার্চ) সকালে সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের আড়িগাঁও এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, “ডাকাতির ঘটনায় মোট আটজনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে দুইজন মারা গেছেন।”

আরো পড়ুন:

শরীয়তপুরে গণপিটুনিতে ২ ডাকাতের মৃত্যু, গুলিবিদ্ধ ৪

টঙ্গীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

আরো পড়ুন: শরীয়তপুরে গণপিটুনিতে ২ ডাকাতের মৃত্যু, গুলিবিদ্ধ ৪

এদিকে, ডাকাতির ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজনকে আটক করা হয়েছে। তারা আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সদস্য এবং তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

আটককৃতদের মধ্যে চারজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- মুন্সীগঞ্জের মহেষপুর এলাকার সানাউল্লাহ গাজীর ছেলে রাকিব গাজী (৩৮), একই জেলার কালিরচর এলাকার বাচ্চুর ছেলে রিপন (৪০), শরীয়তপুরের জাজিরার কুণ্ডেরচর এলাকার মোহাম্মদ দেওয়ানের ছেলে আনোয়ার দেওয়ান (৫০) ও মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুর এলাকার হারুন তালুকদারের ছেলে সজিব তালুকদার (৩০)। এদের মধ্যে রিপন ও সজিব তালুকদার গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা গেছেন।

স্থানীয়, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার রাতে মাদারীপুরের রাজারচর এলাকায় বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা করে ডাকাতরা। পরে তাদের ট্রলার নিয়ে ধাওয়া দেয় স্থানীয়রা। এসময় ডাকাতরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে পালিয়ে শরীয়তপুরের তেঁতুলিয়া এলাকায় যায়। সেখানে তাদের গতিপথ বাল্কহেড দিয়ে রোধ করেন স্থানীয়রা। এসময় ডাকাতরা পুনরায় হাতবোমা ও এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে আহত হন কয়েকজন। পরে ডাকাতরা স্পিডবোট ফেলে পালানোর সময় সাতজনকে আটকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। পরে তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আজ শনিবার সকালে আরো এক ডাকাতকে গণপিটুনি শেষে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। বর্তমানে তিনি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ওই ঘটনায় ডাকাতদের ছোড়া গুলিতে চারজন আহত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। 

পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, “ডাকাতির ঘটনায় একটি কাটা রাইফেল ও শর্টগানসহ দুটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর আটক ড ক ত র ঘটন য় র এল ক র গণপ ট ন

এছাড়াও পড়ুন:

রিকশাচালককে জুতাপেটা করলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা

রাজশাহীর পবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসান রাসেল একজন রিকশাচালককে জুতাপেটা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পায়ের জুতা খুলে রিকশাচালককে পিটিয়েও তার ক্ষোভ মেটেনি। গাড়ির ব্যাকডালা থেকে লাঠি বের করে তিনি ওই রিকশাচালককে লাঠিপেটাও করেন। 

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঘটনার সিসি টিভি ফুটেজ ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে ঘটনা গত ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরের।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একটি রিকশায় চড়ে জাহিদ হাসান বাসার সামনে নামেন এবং ৩০ টাকা ভাড়া দেন। তখন ওই রিকশাচালক তাকে বলেন, ‘‘বলে উঠবেন’’ (ভাড়া ঠিক করে)। এসময় জাহিদ হাসান বলেন, ‘‘বলে উঠবোনি, কিন্তু ভাড়া ৩০ টাকার বেশি কেউ চায় না।’’ এসময় রিকশাচালক কিছু একটা বলেন। তখন পেছনে ঘুরে এসে জাহিদ হাসান বলেন, ‘‘...আরেকবার বলতেছো কেন? আরেকবার বল।’’ এরপরই তিনি পায়ের জুতা খুলে রিকশাচালকের মাথায় ও গালে মারতে থাকেন। হতবিহ্বল চালক রিকশার ওপরেই বসে থাকেন।

জাহিদ হাসান এসময় জুতা পরে নিয়ে পাশেই রাখা তার প্রাইভেটকারের দিকে যান। গাড়ির ব্যাকডালা থেকে লাঠি বের করে রিকশাচালককে মারতে থাকেন। কয়েকটি আঘাত রিকশায় লাগে। 

এসময় তিনি বলতে থাকেন, ‘‘আগা, আগা” (চলে যা)। তখন রিকশাচালক রিকশা নিয়ে দ্রুত চলে যান।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে শুক্রবার দিনভর সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসানের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে পবা উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে খোলা একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জাহিদ হাসান নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।

জাহিদ হাসান লেখেন, ‘‘আমি জাজেস কোয়ার্টার ফাল্গুনির তিনতলায় থাকি। রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর থেকে বাসায় গেটে এসে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়েছি। সে আরও ১০০ টাকা লুঙ্গি কিনতে চায়। আমি তাকে নাই বলে নিষেধ করি। সে বার বার বলে। শেষে ভাড়া দিয়ে নেমে আসার সময় আমাকে ছোট ছোট করে লাট সাহেব বলে গালি দিলে আমি পরবর্তী ঘটনা ঘটাই। আমি অত্যন্ত অন্যায় করেছি। পরবর্তীতে আমি রিকশায় বেত দিয়ে আঘাত করি। তারপরও সে ভয় পাই নাই।”

জাহিদ হাসানের স্ত্রী রাজশাহীর একজন বিচারক। নগরের রাজপাড়া থানা এলাকার ওই কোয়ার্টারে বিচারকেরা পরিবারসহ থাকেন। ওই ঘটনার ফুটেজ একজন বিচারক তার ব্যক্তিগত সিসি ক্যামেরা থেকে ফাঁস করেছেন বলে জাহিদ হাসান দাবি করেন। 

তিনি লেখেন, “ঘটনার ফুটেজ ওই বিচারক সমাজসেবা অধিদপ্তরকে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি ব্যক্তিগত ইস্যু বলে ‘ডিপার্টমেন্ট’ এগোয়নি। ওই বিচারক এটি ভাইরাল করেন।”

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ওসি) আরাফাত আমিন আজিজ বলেন, ‘‘বিষয়টা অবশ্যই দুঃখজনক। সমাজসেবা অফিস অন্য ডিপার্টমেন্টে। তারপরও বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এখন তারা যেভাবে চিন্তা করে সেভাবে করবে।’’

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানান, এ রকম কোনো বিষয় তার জানা নেই। রিকশাচালক কোনো অভিযোগ করেননি।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরা খাতুন বলেন, ‘‘ভিডিওটা একটু আগেই দেখলাম। বিষয়টা নিয়ে জাহিদ হাসানের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এখনও কথা বলিনি।” 

এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘দেখি, আগে কথা বলি। আমাদের বিভাগীয় পরিচালক স্যারও আছেন। আলাপ করে দেখি।’’

ঢাকা/কেয়া/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাবনায় সড়কে গাছ ফেলে ৪০ গাড়িতে ডাকাতি
  • শরীয়তপুরে গণপিটুনিতে ২ ডাকাতের মৃত্যু, গুলিবিদ্ধ ৪
  • হবিগঞ্জে হাজার কেজি পচা ছোলাবুট ফেলা হলো নদীতে
  • ঘোড়াঘাটে মাজারে ভাঙচুর-আগুন তৌহিদি জনতার
  • রমজানকে স্বাগত জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে জামায়াতের মিছিল
  • রিকশাচালককে জুতাপেটা করলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা
  • বাংলাদেশ থেকে এক হাজার টন ইলিশ নিতে চায় চীন
  • পার্বত্য উপদেষ্টার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন, সহযোগিতার আশ্বাস
  • খুলনায় পৃথক দুর্ঘটনায় শিশুসহ নিহত ২