পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বেড়া-সাঁথিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের তলট এলাকায় গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে গাছ ফেলে অন্তত ১০টি গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতদের মারধরে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গতকাল রাত একটার দিকে তলট বাজার থেকে কিছুটা দূরে ছেঁচানিয়া সেতুর কাছে গাছ কেটে সড়কের ওপর ফেলে রাখে ডাকাতরা। তারা প্রথমে একটি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখে। এতে কিছু সময়ের মধ্যেই বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ প্রায় ৪০টি গাড়ি আটকে পড়ে। ডাকাত দলে ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি।

ডাকাতেরা হাঁসুয়া, রামদা, ছুরি, চাকুসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে পর্যায়ক্রমে গাড়িগুলোতে হানা দেয়। অন্তত ১০টি গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গাড়ির দরজা খুলতে দেরি করায় কিছু গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি যাত্রীদের মারধর করা হয়। এ সময় পরিবহনশ্রমিক ও যাত্রীদের সঙ্গে থাকা মুঠোফোন, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায় ডাকাত দল। ঘণ্টাব্যাপী লুট চালায় ডাকাত দল।

ডাকাতির কবলে পড়া সাঁথিয়ার দৌলতপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘রাত একটার দিকে বেড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সাঁথিয়ায় যাওয়ার পথে দেখি, ডাকাতেরা গাছ ফেলে সড়ক বন্ধ করে রেখেছে। আমাদের অটোরিকশা আটকে গেলে তারা আমার কাছে এসে মারধর করে। টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। বিদেশগামী একটি মাইক্রোবাস এলে ডাকাতেরা গাড়িটি থামিয়ে তাদের কাছ থেকে সব কিছু কেড়ে নেয়। ডাকাতদের অস্ত্রের কোপে ওই গাড়ির কয়েকজন আহত হন। আমি সেখানে পাঁচ থেকে ছয়টি গাড়িতে ডাকাতি হতে দেখেছি। পরে পুলিশ এলে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়।’

আবদুস সালাম নামের এক ইসলামি বক্তা ফেসবুকে এক ভিডিও বক্তব্যে বলেছেন, ‘কিছুক্ষণ আগে এই সড়কে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে গাড়িগুলোতে ডাকাতি করেছে। আমাদের গাড়িতে আক্রমণ করে ডাকাত দলের সদস্যরা।’

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। তবে সেখানে যতগুলো গাড়ির ডাকাতির কথা বলা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। সেখানে প্রকৃতপক্ষে তিন থেকে চারটি গাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। আমরা ডাকাতদের ধরার চেষ্টা করছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড ক ত দল

এছাড়াও পড়ুন:

স্বপ্ন পূরণে যে পরামর্শ দিলেন শাহরুখ খান

বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ খান। তাকে ‘কিং খান’ও বলা হয়। কিন্তু এই মানুষটি বিশ্বাস করেন, মানুষের দেওয়া কোনো ‘ট্যাগ’ জীবনে খুব একটা কাজে আসে না। জীবনকে তিনি খুবই ছোট মনে করেন, এই ছোট জীবনে নিজের বড় স্বপ্ন পূরণে কি করা উচিত—সেই বিষয়ে একটি বক্তব্যে বিস্তারিত বলেছেন। 

শাহরুখ খানের বক্তব্যের সংক্ষিপ্ত অনুবাদ: মানুষ আপনার জীবনে যে ‘ট্যাগ’ই দিক, সেটা জীবনে খুব একটা কাজে আসে না। জীবন  খুব ছোট। মানুষ আপনাকে স্বপ্নকে বড় ভাবে কিন্তু আপনার চুপ করে থাকাকে ভাবে দুর্বলতা। মানুষ আপনার সততা দেখে মনে করে আপনি নিষ্পাপ। সত্যিকার অর্থে শুধুমাত্র আপনিই জানেন, আপনি কে।

আমি যখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসি তখন আমার মাথার ওপর কেউ ছিল না। এক জোড়া ছেঁড়া জুতা, একটি স্যুটকেস, সেকেন্ড হ্যান্ড জামাকাপড় আর বুকভর্তি স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম। মানুষ আমাকে দেখলে বলতেন, এই ছেলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারবে! মানুষ আমাকে দেখলে হাসতেন। কিছু মানুষ আমাকে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল প্রধান হিরো হবো। আপনি দেখবেন যে, কোনো মানুষকে আপনার স্বপ্নের কথা বললে, তিনি বলবেন, এটা যথেষ্ট ভালো নয়, স্মার্ট নয়, ট্যালেন্টেড নয়। যখনই আপনি কারও কাছে আপনার স্বপ্নের কথা বলবেন, তার অর্থ আপনি তাদেরকে আপনাকে সংজ্ঞায়িত করার সুযোগ দিয়ে দিচ্ছেন। এটা খুবই বিদপজনক।  

আরো পড়ুন:

ষাটের দশকের হেঁশেলের চিত্র ‘খাদ্যবিলাস’

যে রং দেখা যায় না

আপনি আপনার স্বপ্নের দিকে যাত্রা শুরু করুন। এরপর আপনার পাশে অন্য অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে যাবে। আপনি যদি আপনার লক্ষ্য থেকে সরে দাঁড়ান, তাহলে আপনি ভুলে যাবেন, আপনার স্বপ্নের কথা। মনে রাখবেন, আপনি কারও কাছ থেকে ‘বৈধ্যতা’ পাওয়ার জিনিস নন। আপনি কারও সেকেন্ড চয়েস নন। আপনি কারও ব্রেকআপ প্ল্যান নন। আপনি আপনার পরিকল্পনার প্রধান চরিত্র।

স্বপ্ন পূরণের পথে যাত্রা শুরু করুন। যে মানুষেরা আপনাকে অপমান করেনে, ছোট করেন তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। যেখানে আপনার মূল্যায়ন নেই, সেখান থেকে সরে যান। সেই সম্পর্ক থেকে সরে যান, যে সম্পর্ক আপনাকে কেবল ‘ছোট’ অনুভব করায়। এরপরে মানুষ আপনাকে বড় ভাবতে শুরু করবে। এর অর্থ এই নয় যে, আপনি মানুষকে ভয় পাবেন। এর অর্থ হলো, সেই সব মানুষের কাছ থেকে সরে থাকা; যারা আপনাকে মূল্য দেয় না। 

নিজেকে গড়ে তোলার জন্য সময় নিন। শিক্ষা অর্জন করুন। নিজেকে নির্মাণ করুন। দয়া করে নিজের সঙ্গে কথা বলুন। অহংকারী হয়ে উঠবেন না, সচেতন হয়ে উঠুন। এর অর্থ এই নয় যে, আমি অন্যদের চেয়ে বড়। এর অর্থ হলো, আপনি অন্যদের চেয়ে ছোট নন। 

অনেক সময় আমরা দ্বিধায় পড়ে যাই যে, নম্রতা হলো নিজেকে অবহেলা করা। মনে রাখবেন, আপনি উজ্জ্বলভাবে জ্বলে ওঠার জন্য জন্মেছেন। স্বপ্ন তাড়া করা থামিয়ে দেবেন না। এটি আপনার ডেইলি রুটিনে যুক্ত করে নিন। একদিন সকালে আপনি একজন সুপারস্টারের মতো জেগে উঠবেন আর অন্যদিনগুলোতে আপনি আপনার গল্পে একজন পার্শ্ব চরিত্রের মতো জেগে উঠবেন; এটাও ঠিক আছে। এটা কোনো ব্যাপার নয় যে, আপনি আপনার গল্পের বা ফিল্মের কোন চরিত্রটি অনুভব করছেন। কিন্তু নিজেকে এটা মনে করিয়ে দিন ‘আমি বিক্রির জন্য নই, আমার কোনো ডিসকাউন্ট নেই, আমার কোনো দর কষাকষি নেই।’ আয়নায় শুধু নিজের মুখ দেখবেন না, নিজের ভেতরে থাকা আগুন দেখুন। কারণ ওই আগুনই সত্য। 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ