ঢাকার ধামরাইয়ে লিকেজ থেকে গ্যাস বিস্ফোরণে স্বামী ও স্ত্রী দগ্ধ হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে ধামরাই পৌরসভার কুমড়াইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাঁদের ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছে।

দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাসিন্দা আসিফ (২৪) ও তাঁর স্ত্রী শান্তা (২১)। তাঁরা ধামরাই উপজেলার কুমড়াইলে ভাড়া বাসায় থাকতেন। আসিফ রিকশাচালক ও তাঁর স্ত্রী একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন।

স্থানীয় লোকজন বলেন, রাত পৌনে ১২টার দিকে কুমড়াইল এলাকায় কুববাত হোসেন নামের এক ব্যক্তির দ্বিতল ভবনের নিচতলার বাসার একটি কক্ষে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দুই কক্ষবিশিষ্ট ওই বাসায় আসিফ ও তাঁর স্ত্রী শান্তা থাকেন। বিস্ফোরণে দুটি কক্ষের তিনটি পাকা দেয়ালের বেশ কিছু অংশ ভেঙে যায়। বিস্ফোরণের পর আগুনে কিছু আসবাব পুড়ে যায়। আগুন লাগার পরপরই কক্ষ থেকে আসিফ-শান্তা দম্পতি বের হয়ে আসেন। এ সময় তাঁদের শরীরের বিভিন্ন অংশ আগুনে ঝলসানো ছিল। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নেভান।

একই ভবনের অপর ভাড়াটে রজ্জব আলী বলেন, ‘রাতে বিকট শব্দ শুনে সেখানে গিয়ে আগুন দেখতে পাই। পরে আগুন নিভিয়ে ফেলি। আগুনে দগ্ধ দুজনকে রিকশায় করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

ধামরাই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তা সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, বাড়িটিতে তিতাস গ্যাসের সংযোগ আছে। তবে ওই দম্পতি কক্ষে সিলিন্ডার গ্যাসও ব্যবহার করতেন। সিলিন্ডারটি অক্ষত পাওয়া গেছে এবং সিলিন্ডারে গ্যাসও রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিতাসের গ্যাসের সংযোগ লিকেজ থেকে ঘরে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে এ দুর্ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। দগ্ধ ব্যক্তিদের ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভোলায় সংঘর্ষ ঠেকাতে যাওয়া বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

ভোলায় জমির বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষে এক বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের কুঞ্জপট্টি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই বিএনপি নেতা সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের পর নিহত ব্যক্তির স্বজন, এলাকাবাসী, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ভোলা-ভেলুমিয়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।

নিহত ব্যক্তির নাম জামাল উদ্দিন হাওলাদার (৬০)। তিনি ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।

এলাকাবাসী, নিহতের স্বজন, গ্রাম পুলিশ ও ভোলা সদর থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কুঞ্জপট্টি মৌজায় মো. ইব্রাহীম রাঢ়ি নামের এক ব্যক্তি ৫ শতক জমি কেনেন। তবে পাশের জমির মালিক মো. আলম ব্যাপারী ওই জমি তাঁর বলে দাবি করেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কয়েক বছর ধরে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে অনেকবার সংঘর্ষ-সংঘাত হয়েছে। গতকাল সোমবার ঈদের দিনেও এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে আজ বেলা ১১টার দিকে দুই পক্ষ লাঠিয়াল ভাড়া করে জমি দখল করতে যায়। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে গুরুতর আহত হন স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন হাওলাদার। বিকেলে বরিশালে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘তোমরা মারামারি বন্ধ করো, আমি তোমাদের সমস্যা সমাধান করে দেব।’ এ সময় জামাল উদ্দিনের মাথায় ও শরীরে এলোপাতাড়ি পেটানো শুরু করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু বাড়ি আনার সময় পথে নড়ে উঠলে তাঁকে আবার বরিশালের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানের চিকিৎসক বিকেল ৫টার দিকে পরীক্ষা করে তাঁকে আবার মৃত ঘোষণা করেন।

ভেলুমিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জামাল উদ্দিন দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ইব্রাহীম রাঢ়ির ছেলে তাঁর মাথায় প্রথম আঘাত করেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে স্থানীয় লোকজন ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।

ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ বলেন, এ ঘটনায় কোনো পক্ষের অভিযোগ পাননি। পেলে ব্যবস্থা নেবেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ