উত্তপ্ত ১০ মিনিটের বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে ভেস্তে গেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও  ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির বৈঠকের আলোচনা। হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কি ও ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠকটি উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় আর বিশৃঙ্খলার মধ্যে শেষ হয়েছে। 

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠকে সংবাদ মাধ্যমের সামনেই বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এর জের ধরে জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস থেকে চলে যেতে বলা হয় এবং পূর্ব নির্ধারিত যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়। ট্রাম্প কথা কাটাকাটির সময় জেলেনস্কিকে কৃতজ্ঞ হওয়ার জন্য বলেন এবং একইসঙ্গে তিনি ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন’ বলে অভিযোগ করেন। তবে জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে কোনো আপস করবেন না।

বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেছেন, ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন জেলেনস্কি’। জবাবে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কোনো আপস করবেন না। শুধু ট্রাম্প নয়, জেলেনস্কির সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সও। ওভাল অফিসে বসে বিতণ্ডায় জড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জেলেনস্কি অসম্মান করেছেন মন্তব্য করে ভ্যান্স বলেন, ‘আপনি একবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন না।’ মাথা নেড়ে ভ্যান্সের কথায় সায় দেন ট্রাম্প। এ সময় গলার স্বর উঁচু করে জেলেনস্কি উত্তর দেন, ‘বহুবার বলেছি, আমেরিকার জনগণকে ধন্যবাদ।’

এ রকম উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ১০ মিনিটেই ভেঙে যায় ট্রাম্প-জেলেনস্কি আলোচনা। এর জের ধরে জেলেনস্কি হোয়াইট হাউস থেকে চলে যান। পরে পূর্ব নির্ধারিত যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়। জেলেনস্কির এবারের ওয়াশিংটন সফরে ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওভাল অফিসের বৈঠকটি বাকযুদ্ধে পরিণত হয়, যার একদিকে ছিলেন মি.

জেলেনস্কি আর অন্যদিকে ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।

ওই বৈঠকে সংবাদ মাধ্যমের সামনেই বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ভলোদিমির জেলেনস্কি। ডোনাল্ড ট্রাম্প কথা কাটাকাটির সময় জেলেনস্কিকে কৃতজ্ঞ হওয়ার জন্য বলেন এবং একইসঙ্গে তিনি ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন’ বলে অভিযোগ করেন। তবে জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কোনো আপস করবেন না।’ 

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের আশা ছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা করে হোয়াইট হাউস ছাড়বেন। এর মধ্যে খনিজ চুক্তিতে সই করবেন যা তার দেশের ভবিষ্যতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রকে একটি অংশীদারিত্ব দেবে এবং তিনি তার দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাইবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের জন্য আরও বেশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য তাকে চাপ দেওয়ার পর বিশ্ব গণমাধ্যমের সামনেই নজিরবিহীন এক পরিস্থিতিতে পড়লেন জেলেনস্কি। ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পর শক্তিশালী সহযোগীর চাপ সত্ত্বেও পিছিয়ে গেলেন জেলেনস্কি। ফলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এলো যে বৈঠকে তিনি ‘অসম্মানজনক’ আচরণ করেছেন।

এই ঘটনার পর ট্রাম্প ও তার যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আগেই তাকে হোয়াইট হাউস ছাড়তে বলা হয়। শেষ পর্যন্ত খনিজ চুক্তিও আর হলো না।

‘যখন শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন ফিরে আসবেন,’ ট্রাম্প লিখেছেন তার সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথে। জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র ও ওভাল অফিসকে ‘অপমান করেছেন’ বলেও লিখেছেন ট্রাম্প।

অন্যদিকে জেলেনস্কিও এই ঘটনা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটি প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান সেখানে। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার তিনি বলেন, প্রকাশ্যে যে বাদানুবাদ হলো সেটা ঠিক ছিল না, তবে ট্রাম্প ও তার সম্পর্কের পুনরুদ্ধার সম্ভব। তিনি বলেন, ‘কারণ এই সম্পর্ক শুধু দু’জন প্রেসিডেন্টের মধ্যকার সম্পর্কের চেয়েও বেশি কিছু। আমাদের দুই দেশের জনগণের মধ্যকার সম্পর্কের বিষয়ও আছে এখানে।’
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র জন য কর ছ ন হওয় র করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

সম্মানজনকভাবে বিদায় নেওয়ার ব্যাপারে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করব

‘এ বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচনের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। নির্বাচন ডিসেম্বরের পর গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হবে। এর অর্থ কিছু অস্থিরতা হতে পারে। সম্মানজনকভাবে বিদায় নেওয়ার ব্যাপারে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করব।’ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থানরত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল মঈন খান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন। 

তিনি বলেছেন, চলতি বছরের মধ্যেই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকার চায় বিএনপি। এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন না হলে ‘জনগণের মধ্যে জোরালো অসন্তোষ’ এবং দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করব যে তাদের জন্য সর্বোত্তম হলো যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া এবং সম্মানজনকভাবে বিদায় নেওয়া।
 
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ‘এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে’ এমন বক্তব্যের পর বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি এই সতর্কবার্তা দেন। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন তিনি। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ