বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করা সৈয়দ জামিল আহমেদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে মুখ খুললেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক দীর্ঘ বক্তব্যে তিনি দাবি করেছেন, সৈয়দ জামিল আহমেদের অভিযোগের সবকিছু সত্য নয়, কিছু বিষয় সম্পূর্ণ মিথ্যা, আর কিছু তাঁর ব্যক্তিগত হতাশা থেকে আসা।

ফারুকী বলেন, ‘সৈয়দ জামিল আহমেদের কাজের একজন গুণমুগ্ধ আমি। সম্ভবত উনার কাজ নিয়ে বাংলাদেশে কোনো পত্রিকায় ছাপা হওয়া সবচেয়ে বিস্তারিত লেখাটা আমি লিখেছিলাম। এখনও আমি তাঁকে বাংলাদেশের থিয়েটারের সবচেয়ে মেধাবী নির্দেশক মনে করি। কয়দিন আগেও জামিল আহমেদের সামনেই একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেছি উনাকে দিয়ে তাদের দেশে একটা থিয়েটার প্রোডাকশন করাতে।’

যোগ করে বলেন, ‘কিন্তু ভালো শিল্পী হওয়া আর আমলাতন্ত্রকে কনফিডেন্সে নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালানো দুইটা দুই রকম আর্ট। দ্বিতীয় কাজটা করবার জন্য লাগে ধৈর্য এবং ম্যানেজারিয়াল ক্যাপাসিটি। কলিগদের বুলিং না করে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা দিয়ে অনেক কাজ আদায় করে নেওয়া যায়। পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গেলে যে কম্পোজার লাগে, সেটার সাথে কোনো একটা থিয়েটার দলে নির্দেশনা দেওয়ার টেম্পারামেন্ট এক না। আমার ফিল্ম ইউনিটে আমি যা করতে পারি, একটা সরকারি প্রতিষ্ঠানে আমি তা করতে পারি না।’

জামিল আহমেদের পদত্যাগ বিষয়ে ফারুকীর ভাষ্য, ‘আমি জামিল ভাইয়ের নাটকীয় পদত্যাগ নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলাম না, কারণ তাতে আমাকে এমন কিছু রেফারেন্স টানতে হবে যেটা তাঁর জন্য অস্বস্তিকর হবে। আমি চাচ্ছিলাম না কারণ আমি তাঁকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু ফর রেকর্ডস আমাকে আসলে এগুলো বলতেই হবে। আজকে আমাদের অনেকগুলা কাজ আছে। এটা শেষ করে সময় পেলে লিখব।’

সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু এইটুকু আপাতত বলে রাখি, উনার বলা অনেকগুলা কথা পুরো সত্য নয়, অনেকগুলা কথা ডাহা মিথ্যা, এবং কিছু কথা পরিস্থিতি ডিল না করতে পারার হতাশা থেকে বের হয়ে আসা বলে মনে হচ্ছে। আমার বিস্তারিত লেখা হয়তো উনাকে বিব্রত করতে পারে। কিন্তু আমাকে আপনি এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন যেখানে আমাকে বিব্রতকর হলেও সত্য বলতে হবে, জামিল ভাই।’

এর আগে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সৈয়দ জামিল আহমেদ পদত্যাগপত্র জমা দেন। এ ছাড়াও মুনীর চৌধুরী ১ম জাতীয় নাট্যোৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামিল আহমেদ। বক্তৃতাতেও তাঁর ইস্তফার বিষয়টি উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানের মঞ্চে থাকা শিল্পকলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেনের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন এই নাট্যব্যক্তিত্ব। 

পরে মঞ্চের সামনে এলে অনেকেই তাঁর এই পদত্যাগপত্রের বিরোধিতা করেন। সেসময় তিনি তাঁর অবস্থান ব্যাখ্যা করতে থাকেন। একপর্যায়ে প্রশ্নবিদ্ধ করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম ল আহম দ র পদত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

নাটোরের শিশুর লাশ উদ্ধারের মামলায় পাঁচ কিশোর আটক

নাটোরের বড়াইগ্রামের নিখোঁজ হওয়া শিশু হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক সবাই বয়সে কিশোর। তাদের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। পুলিশের কাছে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে নাটোরের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। গত শুক্রবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও বড়াইগ্রাম থানা–পুলিশ।

আরও পড়ুননিখোঁজের পরদিন শিশুর মুখ ঝলসানো লাশ উদ্ধার১৫ এপ্রিল ২০২৫

আটক শিশুদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শিশুটিকে হত্যা করা হয় এবং ব্যাটারিতে ব্যবহৃত অ্যাসিড দিয়ে শিশুটির মুখ ঝলসে দেওয়া হয়। জড়িতরা সবাই এলাকার বখাটে বা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।

নাটোর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৪ এপ্রিল নিখোঁজ হওয়া শিশুটির মরদেহ পরের দিন বাড়ির পাশ লাগোয়া পাবনার চাটমোহর উপজেলায় একটি ভুট্টাখেত থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় চাটমোহর থানায় শিশুটির মা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি।

তবে নাটোরের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও বড়াইগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনার পর থেকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের শনাক্তে মাঠে নামে। এরই অংশ হিসেবে তারা বড়াইগ্রামের চান্দাই ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ কিশোরকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশের কাছে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। মামলাটি চাটমোহর থানায় হওয়ায় তাদের সেখানে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে।

নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন জানান, আটক পাঁচজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে তারা শিশুটিকে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। তাদের মধ্যে একজন মাদ্রাসাছাত্র ও একজন কলের লাঙলের চালক। আগে থেকেই তারা শিশুটিকে উত্ত্যক্ত করত। ঘটনার সময় শিশুটির সঙ্গে থাকা অন্য এক শিশুও ঘটনাটি দেখেছে। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে আইন অনুসারে আটক শিশুদের চাটমোহর থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সেখানকার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিধি অনুসারে তাদের আদালতে সোপর্দ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপের কাজ কী?
  • ক্ষমতার প্রথম ১০০ দিনে ট্রাম্পের যত আলোচিত উক্তি
  • আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি গোলরক্ষক হুগো গাত্তি আর নেই
  • ‘বিসিবি আমার ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছে’
  • শিক্ষকদের বিচারক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ কতটা যৌক্তিক
  • প্রাণনাশের ভয় নিয়ে পালাতে হয়েছিল, দাবি হাথুরুসিংহের
  • খাল–নালায় পড়ে মৃত্যুর দায় নেয় না, তদন্তও করে না
  • ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • নোয়াখালীতে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টি 
  • নাটোরের শিশুর লাশ উদ্ধারের মামলায় পাঁচ কিশোর আটক