‘ডাকাতি হচ্ছে—এমন খবরে পেয়ে আমরা সবাই প্রস্তুতি নিয়ে ট্রলারে করে নদীতে নেমে যাই। আমরা ইটপাটকেল ছুড়লে ডাকাতেরা আমাদের ওপর গুলি ছোড়ে। এতে আমাদের ৭ থেকে ৮ জন আহত হয়। স্পিডবোটে ১০ জনের মতো ডাকাত ছিল। সবার হাতেই অস্ত্র ছিল।’

কীর্তিনাশা নদীতে ডাকাতদের প্রতিহতের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলার চরগোবিন্দপুরের বাসিন্দা রাজু ফরাজী এসব কথা বলেন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে মাদারীপুর-শরীয়তপুর দুই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা খোয়াজপুর-টেকেরহাট বন্দর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে একটি কাটারাইফেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, ডাকাতি করতে গিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার পিটুনির শিকার হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনায় ডাকাত দলের ছোড়া গুলিতে আটজন আহত হন। গণপিটুনিতে ডাকাত দলের আরও পাঁচ সদস্য আহত হয়েছে। ওই পাঁচজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

নিহত দুজন হলেন রিপন হোসেন (৩২) ও মো.

আনোয়ার (৩৫)। রিপনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের কালিরচর এলাকায় ও আনোয়ার দেওয়ানের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায়। গুলিবিদ্ধ আটজনের মধ্যে পাঁচজন মাদারীপুরের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন সদর উপজেলার চরগোবিন্দপুর এলাকার হেলাল মোল্লা (৪৪), অনিক সরদার (১৪), সালাউদ্দিন সরদার (৩৫), দুলাল সরদার (৩৭), সাইম হোসেন (১৮)। তাঁরা সবাই শুক্রবার রাতে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক রিয়াদ মাহামুদ বলেন, পাঁচজনের শরীরেই একাধিক রাবার বুলেট লেগেছে। এর মধ্যে হেলাল মোল্লার শরীরে ২০টির বেশি রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়েছে। অন্যদের শরীরেও পাঁচ থেকে সাতটি করে গুলি লাগে।

আরও পড়ুন‘ডাকাতি’ করে পালানোর সময় নদীতে নেমে ধাওয়া, পাল্টা গুলি-ককটেল, গণপিটুনিতে নিহত ২৩ ঘণ্টা আগে

গুলিতে আহত দুলাল সরদার বলেন, ‘আমরা কয়েকজন ট্রলারে ছিলাম। ডাকাতদের ধাওয়া দিলে তারা গুলি ছোড়ে। এতে আমি ও আমার সঙ্গে থাকা অনেকে গুলিবিদ্ধ হই।’

প্রত্যক্ষদর্শী সজীব সরদার বলেন, ‘প্রথমে ডাকাতি হচ্ছে—এমন বিষয় টের পেয়ে মসজিদে মাইকিং করা হয়। রাজারহাট এলাকায় আমরা প্রথমে ডাকাতদের গতিরোধের চেষ্টা করি। যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে এ সময় ডাকাতেরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এর আগেই ডাকাত দল মাদারীপুরের অংশ রেখে শরীয়তপুরের দিকে চলে যায়। আহত ব্যক্তিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক য় সরদ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের নামাজে মাইকের শব্দ নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১২

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় ঈদের নামাজ আদায়ের সময় মাইকের শব্দ বাড়ানো-কমানো নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১২ জন আহত হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।

সোমবার (৩১ মার্চ) দুপুরে উপজেলার দহকোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামে স্থানীয় মাতব্বর আবুল হোসেন কাবুল ও নওয়াব আলীর সমর্থকদের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সকালে গ্রামের ঈদগাহে নামাজ আদায়ের সময় মাইকের শব্দ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। পরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ১২ জন আহত হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

আরো পড়ুন:

বরিশালে প্রধান জামাতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের নামাজ আদায়

সাইপ্রাসে প্রবাসীদের ঈদ উদযাপন

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান জানান, এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়নি। কাউকে আটকও করা যায়নি।

ঢাকা/সোহাগ/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ