ইলন মাস্কের সম্পদমূল্য কমেছে ৫২০০ কোটি ডলার, তারপরও শীর্ষ ধনী
Published: 1st, March 2025 GMT
নতুন বছরের শুরু থেকেই সম্পদমূল্য কমতে শুরু করেছে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের। সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ইলন মাস্কের সম্পদমূল্য ২০২৫ সালে কমেছে ৫ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
বিপুল পরিমাণ মূল্য কমলেও বিশ্বের ধনকুবেরদের তালিকার শীর্ষস্থানে বদল হয়নি। মাস্ক এখনো বিশ্বের সবচেয়ে ধনী। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্যানুসারে, আজ ১ মার্চ দিনের শুরুতে ইলন মাস্কের সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ৩৫৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৩৫ হাজার ৯৪০ কোটি ডলার। অবশ্য তাঁর সম্পদমূল্য দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ৬২০ কোটি ডলার বেড়েছে।
টেসলা, স্পেসএক্স, এক্সের (সাবেক টুইটার) মতো একাধিক কোম্পানির মালিকানা আছে ইলন মাস্কের হাতে। তবে মাস্কের সবচেয়ে বিখ্যাত কোম্পানি হচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারী টেসলা। এই টেসলার শেয়ার দর গত এক মাসে অনেকটা কমেছে। গত মাসে তা কমেছে ২০ শতাংশের বেশি। শেয়ার দর কমার জন্য ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে টেসলার বাজার মূলধন কমেছে এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলার। তারপরও মাস্ক নিজের শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখেত সক্ষম হন।
গত মাসে ইউরোপের বাজারে টেসলার বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ইউরোপে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা ভালোই। টেসলা সেই বাজারের অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। কিন্তু তারপরও গত মাসে ৪৫ শতাংশ বিক্রি কমেছে টেসলার। এর প্রভাব টেসলার শেয়ার দরেও পড়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
মূলত চীনের সস্তা বৈদ্যুতিক গাড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কুলিয়ে উঠতে পারছে না টেসলা। সে কারণে টেসলার বিক্রি কমে যাচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই আমেরিকার প্রশাসনে ইলন মাস্কের গুরুত্ব কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। ডিপার্টমেন্ট অব গভর্মেন্ট এফিসিয়েন্সির প্রধান পদে বসেছেন মাস্ক। পাশাপাশি বিশ্বের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও মাস্কের সক্রিয়তা কয়েক গুণ বেড়েছে।
সম্প্রতি টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে বিশেষ ক্ষমতা পাওয়া ইলন মাস্ককে দেখা গেছে। লাল রঙে আচ্ছাদিত প্রচ্ছদে দেখা যাচ্ছে, ইলন মাস্ক হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্টের রেজল্যুট ডেস্কের পেছনে বসে আছেন, হাতে কফির পেয়ালা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক র
এছাড়াও পড়ুন:
তরুণদের দলকে স্বাগত জানালেন জ্যেষ্ঠরা
গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজনীতিবিদরা। তবে এই দলের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করেছেন কেউ কেউ।
নানামুখী আলোচনার পর জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে আজ শুক্রবার। দলটির আহ্বায়ক হচ্ছেন সদ্য উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগকারী নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব হচ্ছেন আখতার হোসেন। যারা জুলাই অভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
নতুন দলের আত্মপ্রকাশ প্রসঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার বর্ধিত সভার বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি সব নতুন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে স্বাগত জানায়। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রহণ কিংবা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে জনগণ।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সমকালকে বলেছেন, ‘নতুন দল যারা গঠন করছেন, তাদের আদর্শ-উদ্দেশ্য, লক্ষ্য এবং গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে কিছুই জানি না। তারা কী পুঁজিবাদ না-কি সমাজতন্ত্রের পক্ষে? শোষক না-কি মেহনতি শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে? এগুলোর কিছুই তারা পরিস্কার করেননি। আগামীদিনে তাদের পথচলার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হবে তারা কোন ধরনের রাজনীতি করতে চান। তারপরও আমি মনে করি, প্রতিটি নাগরিকের রাজনৈতিক দল করার অধিকার আছে। এই বিবেচনা ও রাজনীতির মানুষ হিসেবে আমি এটাকে স্বাগত জানাই।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, নতুন দল গঠনের উদ্যোগকে একটা দিক দিয়ে ইতিবাচক বলবো। সেটা হচ্ছে- এতদিন যারা বলে এসেছেন, রাজনীতি ও রাজনীতিবিদরা খুবই খারাপ কিংবা তারাই দেশের বর্তমান দুর্দশার জন্য দায়ী, এখন তাদের মাধ্যমেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হচ্ছে। তারপরও আশা করবো- তারা যেন সাধারণ ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য রাজনীতি করেন এবং সেভাবে কর্মসূচি নেন। তাহলে জনগণও তাদের ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করবে।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক ভিপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আমরা নতুন দল গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তারা দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমরা সেখানে যাবো। একইসঙ্গে তারা ইতিবাচক রাজনীতি করবেন বলেও আমরা প্রত্যাশা করছি।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও ডাকসুর আরেক সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘তারা যদি রাজনীতি করতে চান, তাহলে সেটা প্রকাশ্য হতে এতদিন লাগলো কেন, সেটা আমি বুঝতে পারি না। তাছাড়া তারা তো একটা নয়, ছাত্র সংগঠন ও রাজনৈতিক দল গঠন এবং আগের নাগরিক কমিটিকে বহাল রাখার মাধ্যমে একইসঙ্গে তিনটা সংগঠন গঠনের কথা বলছেন। আমরা যেভাবে ট্রাডিশনালি রাজনৈতিক দল গঠন করি, এটা তার সঙ্গে ঠিক যাচ্ছে না। তারপরও বলবো- আমি যেকোনো রাজনৈতিক উদ্যোগের পক্ষে। যত বেশি মানুষ রাজনীতি করবেন, ততই দেশের মঙ্গল। কিন্তু সেই রাজনীতিটা যেন ইতিবাচক হয়, সেটাই আশা করবো।’
তিনি বলেন, যারা এই দলটি গঠন করছেন, তাদের ন্যারেটিভ কী, রাজনৈতিক বক্তব্যটাই বা কী- সেটা এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি। আপাতত এটুকু বলবো- তারা যাত্রা শুরু করেছেন এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে শুভাকাঙ্খী হিসেবে তাদের সাফল্য কামনা করবো। একইসঙ্গে দেখতে থাকবো- তারা কীভাবে কতদূর যান।
নতুন ছাত্র সংগঠনের কমিটি ঘোষণা নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে সহিংসতার প্রশ্নে মান্না বলেন, দ্বন্দ্ব নিরসন করতে পারেননি তারা। এটাও একটা ভাববার বিষয় বটে।