শৈলকুপায় পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৫০
Published: 1st, March 2025 GMT
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পাওনা টাকা নিয়ে সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার ১৩নং উমেদপুর ইউনিয়নের রয়েড়া গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে।
আহতদের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনে।
স্থানীয়রা জানান, রয়েড়া গ্রামের আকমল হোসেন ও হাসান আলী একে-অপরের নিকট পাওনা টাকার দাবি করে। শুক্রবার সন্ধ্যায় রয়েড়া বাজারে আকমল হোসেন হাসান আলীর নিকট তার পাওনা টাকা পরিশোধের কথা বলে। এ টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়ে হাতাহাতি ও সংঘর্ষে জড়ায়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় সামাজিক আধিপত্য ধরে রাখতে শনিবার সকালে আকমলের সামাজিক দলেন নেতা মিজানুর রহমান ও হাসানের সামাজিক দলের নেতা ক্ষিরার সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রয়েড়া এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিভক্ত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় রেজাউল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, গোলজার হোসেন, আজিজুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন, আবু কালাম, পিকুল মন্ডল, পরশ মোল্যা, সাইদুল ইসলাম, আব্বাস আলী, সাইদুর রহমান, হেলাল উদ্দিন, নাসিমা খাতুন, অমিত হোসেন, আলামিন হোসেন, মহিদুল ইসলাম, আজিজুল, কামরুল হোসেন, ওয়াজেদ আলী, হোসেন মোল্যা, জায়েদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, নুরুল ইসলাম, মহিদুল মোল্যা, মাজিদুল মোল্যাসহ অন্তত ৫০ ব্যক্তি আহত হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, রয়েড়া গ্রামের আকমল হোসেন ও হাসান আলী একে অপরের নিকট পাওনা টাকার দাবি করে। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় রয়েড়া বাজারে দু’জনে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। তারই জেরে এ সংঘর্ষের ঘটনা।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুম খান বলেন, শৈলকুপার রয়েড়া গ্রামে পাওনা টাকা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কয়েক ব্যক্তি আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রয়েড়া এলাকায় আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ঝ ন ইদহ ল ইসল ম স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষী রাস্তার ওপর সবজি চাষ আওয়ামী লীগ নেতার
চারঘাটের সরদহ ইউনিয়নের খোর্দগোবিন্দপুর মাঠপাড়ার গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে শত বছর ধরে গ্রামের মানুষ চলাচল করছেন। রাস্তাটি পাকা করতে দরপত্রও করা হয়েছে। সেই রাস্তার জমি নিজের দাবি করে পটোল রোপণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী। এতে মানুষের চলাচল ও মাঠের ফসল পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এক যুগে কয়েক দফা কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় শতবর্ষী মাটির রাস্তাটির সংস্কার করা হয়। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ থেকে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দরপত্র হয়েছে। এর মধ্যে পাশের জমির মালিক সমজান আলী শ্রমিক দিয়ে রাস্তা কেটে ফসলি জমি বানিয়েছেন। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হলেও গত পাঁচ আগস্টের পর থেকে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনের সঙ্গে চলাফেরা করছেন।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, দৈর্ঘ্যে ১২০ ফুট ও প্রস্থে ৪ ফুট অংশ কেটে নিজের জমির সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন সমজান আলী। সেখানে পটোল রোপণ করা হয়েছে। ১৩ ফুট প্রস্থের সড়ক থেকে আরও ৪ ফুট কেটে নেওয়া হবে বলে স্থানীয়দের জানিয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় প্রকৌশল বিভাগের রাস্তা পাকাকরণ কাজ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। স্থানীয়রা বাধা দিলেও রাস্তা কাটা বন্ধ না করে উল্টো হুমকি দেন সমজান আলী।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব রেজাউল করিম বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের দরপত্র হয়েছে। এখন সেই রাস্তার বেশির ভাগ অংশ নিজের দাবি করে কেটে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী।
নাইমুর রহমান বলেন, বাবা-দাদা সবাই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেছেন। এখন শত শত মানুষের চলাচল। মাঠপাড়ার ফসল ভ্যান, ট্রলি ও মিনি ট্রাকে করে এই রাস্তা দিয়ে বাজারে নেওয়া হয়। কাউকে কিছু না জানিয়ে রাস্তাটি কেটে ফেলা হলো। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।
সমজান আলী বলেন, রাস্তার বেশির ভাগ অংশই আমার জমিতে। এ জন্য কিছু অংশ কেটে নিয়েছি। শুধু আমি রাস্তায় জমি দেব– তা হবে না। অন্যদেরও দিতে হবে। জমির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজপত্র এখন কাছে নেই। তবে স্থানীয় আমিন সুবল চন্দ্র ছয় মাসে দুই দফা জমি পরিমাপ করেছে। মাপ অনুযায়ী রাস্তার বেশির ভাগ অংশ আমার জমিতে পড়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় আমিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র বলেন, জমিটি দেড় থেকে দুই বছর আগে পরিমাপ করেছি। কিছু অংশ রাস্তার ভেতরে ছিল। রাস্তাটি এখন সরকারি সম্পদ। তাই সমজান আলী জমি নিতে পারবে না– এ তথ্য তাঁকে জানানো হয়েছিল।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য শুনানির নোটিশ করা হয়েছে। কাগজপত্র নিয়ে সমজান আলীকে আসতে বলা হয়েছে। তবে কোনো জমি ব্যক্তির সম্পত্তি হলেও ২০ বছর সেখানে মানুষজন হাঁটলেই তা সরকারি হয়ে যাবে।