কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে জামায়াতের প্রার্থী সাবেক রাষ্ট্রপতির শ্যালক
Published: 1st, March 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের শ্যালক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল প্রফেসর ডাক্তার জিহাদ খান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শূরা সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মো.
অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল প্রফেসর ডাক্তার জিহাদ খান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কমিটির মজলিসে শূরা সদস্য এবং রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এর আগে, তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হৃদরোগ বিভাগের প্রধান হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ এলাকার সন্তান।
আরো পড়ুন:
নতুন দলের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ খোলা থাকবে: জামায়াত
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধের দাবিতে রাজশাহীতে জামায়াতের বিক্ষোভ
কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলী বলেন, “আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল প্রফেসর ডাক্তার জিহাদ খানকে মনোনীত করা হয়েছে। এর আগে, গত ১ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জের অন্য পাঁচটি সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল। এ নিয়ে জেলার ছয়টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা শেষ হল।”
এর আগে, কিশোরগঞ্জের পাঁচটি আসনে যাদের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে মনোনীত করা হয়েছিল তারা হলেন, কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে অধ্যক্ষ মোসাদ্দেক আলী ভূঁইয়া, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে কটিয়াদী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মোড়ল, কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম)আসনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক ও ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ রোকন রেজা, কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনে কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলী ও কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়াচর) আসনে ভৈরব উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা কবির হুসাইন।
এক প্রশ্নের জবাবে কিশোরগঞ্জ অধ্যাপক মো. রমজান আলী বলেন, “একই পরিবারে দুই ভাই দুই দল থেকে নির্বাচন করেন এমন নজির আমাদের দেশে বহু আছে। অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল প্রফেসর ডাক্তার জিহাদ খান সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শ্যালক এটা সত্যি। এতে কোন সমস্যা নেই। কারণ তিনি আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির মজলিসে শূরা সদস্য এবং খুবই গুণী মানুষ। চিকিৎসা সেবায় তার অনেক অবদান রয়েছে, এখনো তিনি মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।”
ঢাকা/রুমন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক শ রগঞ জ ইসল ম র র আম র
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প কেন পেন্টাগনের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছেন
নিজের প্রথম মেয়াদে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে তুমুল বিরোধে জড়িয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার সে পথে হাঁটেননি। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপরই পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।
আর তাতেই গত শুক্রবার পেন্টাগনের ওপর দিয়ে রীতিমতো বরখাস্তের ঝড় বয়ে গেছে।
ওই দিন রাতে ট্রাম্প মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল চার্লস ‘কিউ’ ব্রাউন জুনিয়রকে বরখাস্ত করেন। প্রেসিডেন্টের নির্দেশে সেদিনই সংস্থার আরও ৫ হাজার ৪০০ কর্মীকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এর আগের কয়েক সপ্তাহে পেন্টাগনে যে অস্থিরতা চলছিল, ট্রাম্প এ গণছাঁটাইয়ের মাধ্যমে হয়তো এক রাতেই তা শান্ত করে প্রতিরক্ষা দপ্তরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর প্রধান কর্মকর্তা অ্যাডমিরাল লিসা ফ্রানচেত্তিকেও চাকরিচ্যুত করা হয়। ট্রাম্পের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথও বলেছিলেন, তিনি বিমানবাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও নৌবাহিনীর শীর্ষ পদে পরিবর্তনের জন্য প্রার্থী খুঁজছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান পরিচালনার অনুমতি পেতে এ তিনজনের সই প্রয়োজন হয়।
পেন্টাগনের ওই কর্মকর্তাদের কেউই এ কারণে বরখাস্ত হননি যে যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁরা দক্ষতার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বা তাঁরা অবাধ্য। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচিতে (ডিইআই) জেনারেল ব্রাউনের অতিরিক্ত মনোযোগের কথা আলাদা। হেগসেথ গত বছর প্রকাশিত তাঁর একটি বইয়ে বলেছেন, জেনারেল ব্রাউন ডিইআইয়ের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগী।
ট্রাম্প (নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের দিয়ে) পেন্টাগন ঢেলে সাজাতে চাইছেন। এ কারণে সেটির ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টই পেন্টাগনের কমান্ডার ইন চিফ, তাই পদাধিকারবলে তাঁর সেই ক্ষমতা রয়েছে।
তবে জেনারেল ব্রাউন ও অ্যাডমিরাল ফ্রানচেত্তিকে চাকরিচ্যুত করা এ ইঙ্গিতই দিচ্ছে যে ট্রাম্পের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এসব পদে থাকার মূল যোগ্যতা তাঁর প্রতি প্রশ্নাতীত আনুগত্য। অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রেসিডেন্টের অবস্থান নিরপেক্ষ রাখতে তাঁরা কতটা ভালো পরামর্শ দিতে পারেন, সেটি পরে বিবেচ্য। অথচ প্রেসিডেন্টের শীর্ষ সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে তাঁদের মূল কাজ হওয়ার কথা এটাই।
প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প দ্রুত নিজের চারপাশে জ্যেষ্ঠ জেনারেলদের ভিড় জমিয়ে ফেলেছিলেন। সেবার চার তারকাবিশিষ্ট অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল জন কেলি ছিলেন ট্রাম্পের দ্বিতীয় চিফ অব স্টাফস।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহ অবশ্য নতুন নয়। শৈশব থেকেই তিনি সামরিক বাহিনীর প্রতি আসক্ত। তিনি নিউইয়র্কে সামরিক কায়দার একটি আবাসিক স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। তাঁর পছন্দের ব্যক্তিদের একজন জেনারেল জর্জ প্যাটন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে যুদ্ধক্ষেত্রে দারুণ আক্রমণাত্মক ছিলেন সাবেক এই মার্কিন কমান্ডার।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে শপথ গ্রহণের পর আরেক চার তারকাবিশিষ্ট অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল জেমস ম্যাটিসকে নিজের প্রথম প্রতিরক্ষামন্ত্রী করেছিলেন ট্রাম্প। তাঁর প্রশাসনের উচ্চপদে আরও বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা দেখা গিয়েছিল।
কিন্তু জেনারেলদের সঙ্গে ট্রাম্পের গভীর আস্থার সম্পর্ক একসময় তিক্ততার দিকে চলে যায়। কারণ, প্রশাসনে থাকাকালে কেলি, ম্যাটিস বা ম্যাকমাস্টার (সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল) প্রত্যেকে কোনো না কোনোভাবে ট্রাম্পের ইচ্ছা অনুযায়ী চলেননি।
ট্রাম্পের সঙ্গে ম্যাকমাস্টারের বিরোধ হয় আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা নিয়ে। ম্যাকমাস্টার আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার না করার পক্ষে ছিলেন। এমনকি তিনি দেশটিতে মার্কিন সেনা উপস্থিতি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন ট্রাম্পকে।
জেনারেল চার্লস কিউ ব্রাউন জুনিয়র আফ্রিকান বংশোদ্ভূত দ্বিতীয় মার্কিন নাগরিক, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন