বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ফুটবলের প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পর ১ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে মধ্যবর্তী দলবদল। সর্বশেষ গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত ১০টি ক্লাব তাদের খেলোয়াড়তালিকা বাফুফেতে জমা দিয়েছে, যার মধ্যে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস তিন বিদেশি নাম নিবন্ধন করিয়েছে।

প্রথম পর্ব শেষে তৃতীয় স্থানে থাকা কিংস দ্বিতীয় পর্বের জন্য আনছে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড হুয়ান লেসকানোকে। ৩২ বছর বয়সী এই ফুটবলার ২০১০ সালের লিভারপুলের অনূর্ধ্ব–১৮ এবং ২০১১ সালে রিয়াল মাদ্রিদের অনূর্ধ্ব–১৯ দলে খেলেছিলেন। এরপর সংযুক্ত আর আমিরাত, সুইজারল্যান্ড, রাশিয়া, ফিনল্যান্ড ঘুরে সর্বশেষ খেলেছেন চীনের চংকিং টংলিয়াংলংয়ে।

এক যুগের সিনিয়র টিম ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৯টি দলের হয়ে ২৪৩ ম্যাচে ৬০ গোল করেছেন লেসকানো।

কিংসে নিবন্ধিত হওয়া নতুন অন্য দুই খেলোয়াড় ব্রাজিলিয়ান সেন্টারব্যাক দাসিয়েল সান্তোস ও ঘানার ফরোয়ার্ড ইভান্স ইট্টি।

তিন নতুন বিদেশির সঙ্গে রক্ষণদেয়াল আগলে রাখার জন্য আসরোর গফুরভকেও ফিরিয়ে আনছে ভ্যালেরিও তিতার দল। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব ও বসুন্ধরা কিংসে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে উজবেকিস্তানের এই ডিফেন্ডারের।

এদিকে প্রথম লেগে তুমুল লড়াইয়ের পর দ্বিতীয় লেগে শক্তি বাড়িয়েছে দুই ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও আবাহনী লিমিটেডও। মোহামেডানের নতুন মুখ পুলিশ এফসিতে খেলে যাওয়া ভেনেজুয়েলার ফরোয়ার্ড এডওয়ার্ড মরিও। আর প্রথম পর্বে শতভাগ দেশি খেলোয়াড় নিয়ে চমক দেখানো আবাহনী দ্বিতীয় লেগের জন্য আনছে দুজন বিদেশি। যাঁদের মধ্যে আছেন ব্রাজিলের রাফায়েল সিলভা, ২০২০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত আবাহনীর হয়ে খেলেছিলেন এই মিডফিল্ডার। এ ছাড়া আক্রমণে গতি বাড়াতে নাইজেরিয়ার ফরোয়ার্ড এমেকা ওগবাহর সঙ্গেও নিবন্ধন সেরেছে আকাশি–নীলেরা।

১৫ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের চারে থাকা রহমতগঞ্জও এক বিদেশির নাম চূড়ান্ত করেছে। দ্বিতীয় লেগে প্রতিপক্ষের গোলমুখে চাপ তৈরি করার জন্য গাম্বিয়ার ফরোয়ার্ড সলোমন কিংকে দলভুক্ত করেছে পুরান ঢাকার ক্লাবটি। নতুন খেলোয়াড় নিবন্ধনে পিছিয়ে নেই টেবিলের তলানির দল চট্টগ্রাম আবাহনীও।

মাঝমাঠের শক্তি বাড়াতে ২৭ বছর বয়সী প্যারাগুয়ের উইলসন মেদিনাকে নিবন্ধন করেছে বন্দরনগরীর দলটি। পাশাপাশি ঘানার ডিফেন্ডার কফি জুনিয়রের নামও জমা দিয়েছে বাফুফের কাছে।

ফকিরেরপুল ইয়ংমেনস নিবন্ধন করেছে ফরাসি ফরোয়ার্ড মোহামেদ ফোফানা আর আইভরিকোস্টের ফরোয়ার্ড ইব্রাহিম আউত্তারাকে। পুলিশ এফসিতে আসছেন ব্রাজিলের দানিলো কুইপাপা। এই দুই ক্লাবের পাশাপাশি আক্রমণভাগ শক্তিশালী করেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ক্লাবটির সঙ্গে নিবন্ধন সেরেছেন গাম্বিয়ায় ফরোয়ার্ড ইদ্রিসা জালো ও নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমফোন উদোহ।

দশম রাউন্ড শেষে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগে শীর্ষস্থান দখলে রেখেছে মোহামেডান। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মোহামেডানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর অর্জন ২৩ পয়েন্ট। আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস তৃতীয় স্থানে আছে ২০ পয়েন্ট নিয়ে।

তিন সপ্তাহ বিরতির পর গত ২১ ফেব্রুয়ারি প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় লেগ শুরু হয়েছিল। কিন্তু এক রাউন্ড হয়েই লিগে প্রায় দেড় মাস বিরতি। ২৫ মার্চ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এরপর পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ দুই কারণেই মূলত লম্বা সময় মাঠে খেলা নেই। সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় লেগের দ্বিতীয় রাউন্ড পুনরায় শুরু হবে ১১ এপ্রিল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ফর য় র ড র জন য প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

স্রোতের বিপরীতে

ক্রমেই টিভি নাটক থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন টিভি নাটকের তারকা অভিনয়শিল্পীরা। তাদের শিডিউল মিলছে না বলে অনেক নির্মাতার অভিযোগ। বিশেষ করে ধারাবাহিক নাটকের ব্যাপারে নাক ছিটকানো ভাব অনেকের মধ্যেই। এমন অবস্থার মধ্যেও উল্টোপথে হাঁটছেন অনেক অভিনেত্রী। তাদের মধ্যে অন্যতম তানজিকা আমিন। মানসম্পন্ন গল্প ও চরিত্র পেলে তাঁকে দেখা যায় ধারাবাহিকে।

স্রোতের বিপরীতে হাঁটা এ অভিনেত্রীর নতুন ধারাবাহিক শুরু হয়েছে মাছরাঙা টেলিভিশনে। সাগর জাহান পরিচালিত ‘অনলাইন, অফলাইন-সিজন টু’ ধারাবাহিক দিয়ে নতুন করে আলোচনায় এখন তিনি। বৈশাখী টিভির ‘হাবুর স্কলারশিপ’ নাটকটিও তাঁকে অন্যরকম পরিচিতি পাইয়ে দিয়েছে।

‘অনলাইন, অফলাইন-সিজন টু’ নাটকে অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘চার বছর আগে মাছরাঙা টেলিভিশনে ‘অনলাইন অফলাইন’ নাটকটি প্রচার হয়েছিল। নাটকে আমার অভিনীত ‘রুমা ভাবি’ চরিত্রটি আজও দর্শক মনে রেখেছে। ভালো কাজ দর্শক সবসময়ই মনে রাখেন। দর্শকের চাহিদার কারণে এবার এ ধারাবাহিকের সিজন ২ পর্দায় এনেছেন নির্মাতা। এটি মূলত একটি ট্রেন্ডি প্রোডাকশন। গল্পে অনেক টুইস্ট আছে। প্রথম সিজনের মতো এ সিজনেও দর্শক আনন্দ পাবেন বলে আশা প্রকাশ করছি।’

বিনোদন জগতের অসংগতি নিয়ে কথা বলে থাকেন তানজিকা আমিন। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি হাঁটছি, কী খাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি– এ নিয়ে রিলস হচ্ছে। এখন তো রিলস বানিয়েই অনেকে তারকা হয়ে যাচ্ছেন। তারপর দুই লাখ, চার লাখ টাকা করে পারিশ্রমিক হাঁকাচ্ছেন। এতদিন যারা অভিনয় শিখে এসেছেন, তারা পাচ্ছেন এক নাটকে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তাদের কোনো মূল্য নেই! আর যাদের ভিউ বেশি তাদের কাজে নেওয়া হচ্ছে। তাদের অভিনীত ফিকশনের ছোট ছোট রিলস করে যখন ফেসবুক বা অন্যান্য মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে, ভিউ বেড়ে যাচ্ছে।’ 

এই দুরবস্থার কারণে অনেক অভিনয়শিল্পী অভিনয় থেকে দূরে চলে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তানজিকা আরও বলেন, ‘একটি প্ল্যাটফর্ম ধরুন ‘এক্স’, সেখানে একজন অভিনয়শিল্পী কাজ করেছেন, তার নামও ‘এক্স’। ওই প্ল্যাটফর্মের বানানো তিনটি প্রোডাকশন ফ্লপ। অডিয়েন্স দেখল না। তারপরও পরবর্তী প্রোডাকশন ওই শিল্পীকে নিয়ে করা হচ্ছে। ভিউ চক্রের কারণেই এমনটি হচ্ছে। এই ব্যাপারটার জন্য অনেক ভালো অভিনয়শিল্পী পেছনে পড়ে যাচ্ছেন। অনেকে আবার রাগে ক্ষোভে ইন্ডাস্ট্রি থেকে চলে যাচ্ছেন।’

তানজিকা আমিন অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘বকুল ফুলের মালা’। দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর পরিচালনায় এ সিনেমায় তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেন নায়ক রিয়াজ। এরপর নাটকে অভিনয় করলেও দীর্ঘদিন তাঁকে সিনেমায় দেখা যায়নি। লম্বা বিরতির পর তাঁকে পাওয়া যায় ‘গহীনের গান’ সিনেমায়। ‘১৯৭১ সেইসব দিন’ সিনেমায় ক্যামেরার পেছনে কাজ করেছিলেন। এরপর সেভাবে আর বড় পর্দায় দেখা না গেলেও ব্যস্ত আছেন ছোট পর্দা ও ওয়েবমাধ্যমের কাজ নিয়ে। দীর্ঘদিন নতুন কোনো সিনেমায় তাঁকে দেখা যায়নি। বড় পর্দায় আবার কবে দেখা যাবে।

এমন প্রশ্নে তাঁর ভাষ্য ‘এটা আগেভাগেই বলতে পারছি না। ছোট পর্দা, বড় পর্দা যেটাই হোক, আমি সেই কাজটি করতে চাই, যা নিজের ভালো লাগবে। কাজের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য মনের ওপর জোর খাটিয়ে প্রতিদিন অভিনয় করে যেতে হবে, এটা আমি মানি না। খেয়াল করলে দেখবেন, অন্য সবার চেয়ে আমার কাজের সংখ্যা অনেক কম। অনেক যাচাই-বাছাই করে কাজ করি বলে আমার কাজের সংখ্যা কম, তা কিন্তু নয়। আসলে যে কাজটি ভালো লাগে, সেটিই করি। ভালো কাজ যেহেতু প্রতিদিন হয় না, আমাকেও তাই প্রতিদিন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হয় না। 

টিভি নাটক ও সিনেমায় অভিনয়ের বাইরে ওয়েবে ব্যস্ততা রয়েছে তাঁর। কিছুদিন আগে অমিতাভ রেজা চৌধুরীর ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’র সিরিজের কাজ শেষ করেছেন তিনি। এতে তিনি অভিনয় করেছেন নুরজাহান চরিত্রে। 
গত বছরের শেষ দিকে নতুন জীবন শুরু করেছেন তানজিকা। বিয়ে করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাইফ বসুনিয়াকে। ছয় বছর আগে তাদের পরিচয়। এরপর বন্ধুত্ব, পরে বিয়ে। তানজিকার স্বামী দুই যুগেরও বেশি সময় অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে থাকেন। 

অভিনয় ছাড়বেন কিনা, এমন প্রশ্নও ওঠে। এ বিষয়ে তাঁর ভাষ্য, ‘অভিনয় আমার প্রাণের জায়গা, এটি আত্মার সঙ্গে মিশে আছে। ঢাকা আমার প্রাণের শহর। ফলে দুটোর কোনোটিই ছাড়ছি না। তবে আমাকে তো যাওয়া-আসার মধ্যেই থাকতে হবে।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গান-নৃত্যে ছায়ানটের বসন্তবন্দনা
  • সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, রোজা শুরু শনিবার
  • চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রোজা শুরু শনিবার
  • সৌদি আরবে শনিবার প্রথম রোজা
  • চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ব্যর্থতার পর দায়িত্ব ছাড়লেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক
  • হাঁসের মাংসের ‘মোড়কে’ পাখির মাংস বিক্রি, কেন–কীভাবে
  • ক্রেতার পছন্দমতো শিশু চুরি করেন দুলাল
  • সিলেটি নাগরি লিপিতে উইকিপিডিয়া চালু
  • স্রোতের বিপরীতে