যে গ্রামের অর্ধশত মানুষ কেঁচো সার উৎপাদন করেন
Published: 1st, March 2025 GMT
২০১৭ সালে ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেন কিষানি অঞ্জু মজুমদার (৫০)। কৃষি কার্যালয় থেকে ২৫০ গ্রাম কেঁচো দেওয়া হয় তাঁকে। এখন অঞ্জু মজুমদারের কাছে কেঁচো রয়েছে পাঁচ কেজি। বাড়িতে পালন করা ২টি গরুর গোবর থেকে এসব কেঁচো দিয়ে প্রতি দেড় মাসে ৫০০ কেজি সার উৎপাদন করেন তিনি। নিজেদের দুটি মিশ্র সবজি ও ফলের বাগানে ব্যবহারের পর উদ্বৃত্ত হিসেবে সার বিক্রিও করেন অঞ্জু।
অঞ্জু মজুমদারের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সুখছড়ি গ্রামের মজুমদারপাড়া এলাকায়। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমার সারের চেম্বারের সংখ্যা চারটি। পাঁচ সদস্যের পরিবারে একসময় আর্থিক টানাপোড়েন ছিল। নিজের বাগানে কেঁচো সারের ব্যবহার এবং উদ্বৃত্ত সার বিক্রির মাধ্যমে এখন আমি সচ্ছল।’
অঞ্জু মজুমদারের মতো সুখছড়ি গ্রামের বিভিন্ন পাড়ায় কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করেন প্রায় অর্ধশত মানুষ। তাঁদের অধিকাংশই নারী। টঙ্কাবতী নদীর পাশে গড়ে ওঠা সুখছড়ি গ্রামটিকে ২০২০ সালে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ভার্মি কম্পোস্ট গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
উপজেলা সদর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে গ্রামটির অবস্থান। বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকা থেকে টঙ্কাবতীর বয়ে আনা উর্বর পলিমাটি সুখছড়িকে করেছে সুজলা-সুফলা। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিনির্ভর জীবনযাপন করেন। সিকদারপাড়া, কালীবাড়ি, বারেক চৌকিদারপাড়া, শাহ মোহাম্মদপাড়া, সাইরাপাড়া ও কালা মিয়া বাপের বাড়ির সমন্বয়ে গঠিত এই গ্রাম।
অঞ্জু মজুমদারের বাড়ির সামনে স্থাপন করা কেঁচো সারের চেম্বার.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাঙামাটি কারাগারে কারাবন্দিদের ঈদ উদযাপন
ঈদের দিন পরিবারের সঙ্গে আনন্দ উদযাপনের সুযোগ সবার থাকে না; বিশেষ করে কারাগারে বন্দিদের। বিষয়টি ভেবে বন্দিদের জন্য বিশেষ আয়োজন করেছে রাঙামাটি কারা কর্তৃপক্ষ। কারাবন্দিরা যেন ঈদে নিজেদের মধ্যে আনন্দ ভাগ করে নিতে পারেন সেজন্য ঈদের বিশেষ নামাজ, উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা রেখেছেন কারা কর্তৃপক্ষ।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, সকাল সাড়ে আটটায় কারাবন্দিরা কারাগারের মধ্যেই আদায় করছেন ঈদের নামাজ। এরপর সবাই একসঙ্গে বসে ঈদের সেমাই খেয়েছেন। বন্দিদের জন্য দুপুর ও রাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়োজন।
ঈদের এই বিশেষ দিনে বন্দিরা যাতে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারে এ জন্য কারা কর্তৃপক্ষ স্বজনদের সুযোগ দিয়েছেন। যারা দেখা করতে এসেছেন তাদের ফুল ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন। এমন আয়োজনে খুশি স্বজনরাও।
কারাবন্দির সাথে দেখা করতে আসা স্বজন নূর মোহাম্মদ জানান, খুব সুন্দর আয়োজন করেছে এবার জেল কর্তৃপক্ষ। গত বছরও আমি এসেছিলাম আত্মীয়র সাথে দেখা করতে, কিন্তু এবারের আয়োজন ভিন্ন মনে হয়েছে। তারা আমাদের ফুল ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করেছে। আমি আত্মীয়র সাথে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন জেলের পরিবেশ ভালো, সবাই মিলে ঈদের নামাজ শেষে সেমাই খেয়েছেন। দুপুর ও রাতে ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারাগারে এ ধরনের পরিবেশ সত্যি খুব ভালো লাগছে।
রাঙামাটি কারাগারের জেল সুপার দিদারুল আলম বলেন, ‘‘স্বজনহীন কারাবন্দিদের মাঝে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে কারা কর্তৃপক্ষ এমন আয়োজন করেছে। আমরা চাই জেলের বিষয়ে মানুষের গতানুগতিক যে ধারণা, সেটা পরিবর্তন হোক।’’
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কারাবন্দি ও স্বজনদের নিয়ে ভিন্ন কিছু আয়োজনের নির্দেশনা দিয়েছেন বলেই এমন আয়োজন সম্ভব হয়েছে বলে জানান দিদারুল আলম।
শংকর//