২০১৭ সালে ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেন কিষানি অঞ্জু মজুমদার (৫০)। কৃষি কার্যালয় থেকে ২৫০ গ্রাম কেঁচো দেওয়া হয় তাঁকে। এখন অঞ্জু মজুমদারের কাছে কেঁচো রয়েছে পাঁচ কেজি। বাড়িতে পালন করা ২টি গরুর গোবর থেকে এসব কেঁচো দিয়ে প্রতি দেড় মাসে ৫০০ কেজি সার উৎপাদন করেন তিনি। নিজেদের দুটি মিশ্র সবজি ও ফলের বাগানে ব্যবহারের পর উদ্বৃত্ত হিসেবে সার বিক্রিও করেন অঞ্জু।

অঞ্জু মজুমদারের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সুখছড়ি গ্রামের মজুমদারপাড়া এলাকায়। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমার সারের চেম্বারের সংখ্যা চারটি। পাঁচ সদস্যের পরিবারে একসময় আর্থিক টানাপোড়েন ছিল। নিজের বাগানে কেঁচো সারের ব্যবহার এবং উদ্বৃত্ত সার বিক্রির মাধ্যমে এখন আমি সচ্ছল।’

অঞ্জু মজুমদারের মতো সুখছড়ি গ্রামের বিভিন্ন পাড়ায় কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করেন প্রায় অর্ধশত মানুষ। তাঁদের অধিকাংশই নারী। টঙ্কাবতী নদীর পাশে গড়ে ওঠা সুখছড়ি গ্রামটিকে ২০২০ সালে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ভার্মি কম্পোস্ট গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

উপজেলা সদর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে গ্রামটির অবস্থান। বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকা থেকে টঙ্কাবতীর বয়ে আনা উর্বর পলিমাটি সুখছড়িকে করেছে সুজলা-সুফলা। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিনির্ভর জীবনযাপন করেন। সিকদারপাড়া, কালীবাড়ি, বারেক চৌকিদারপাড়া, শাহ মোহাম্মদপাড়া, সাইরাপাড়া ও কালা মিয়া বাপের বাড়ির সমন্বয়ে গঠিত এই গ্রাম।

অঞ্জু মজুমদারের বাড়ির সামনে স্থাপন করা কেঁচো সারের চেম্বার.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানীর তালিকায় অধ্যাপক সাইদুর

সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

আবারও বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন মালয়েশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি অধ্যাপক সাইদুর রহমান। অসাধারণ গবেষণাকর্মের জন্য চলতি বছর (২০২৫) এডি সায়েন্টিফিক র‍্যাঙ্কিংয়ের সাত নম্বরে রয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ‘এডি সায়েন্টিফিক ইনডেক্স’ বিশ্বের ৩৩ হাজার ৫১১ বিজ্ঞানী এইচ-ইনডেক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি/মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং র‍্যাঙ্কিং ২০২৫ প্রকাশ করে। এর মধ্যে তালিকায় সাত নম্বরে থাকলেও এশিয়ার মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছেন অধ্যাপক সাইদুর।

এর আগে ২০২৪ সালের স্কলারজিপিএস অনুসারে সানওয়ে ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সাইদুর রহমান সাসটেইনেবল এনার্জি বিষয়ক গবেষণার ক্ষেত্রে বিশ্বের বিজ্ঞানীদের তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেন। একই বছরে স্ট্যানফোর্ড/এলসেভিয়ারের বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায় মালয়েশিয়ার বিজ্ঞানীদের মধ্যেও এনার্জি বিষয়ক গবেষণাক্ষেত্রে প্রথম স্থান অর্জন করেন তিনি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বিশ্বের প্রথম সারির চিকিৎসা ও বিজ্ঞানবিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশনা সংস্থা ‘এলসেভিয়ার’-এর সমন্বিত জরিপে এ তালিকা প্রকাশ করে। বিজ্ঞানীদের প্রকাশনা, এইচ-ইনডেক্স, সাইটেশন ও অন্যান্য সূচক বিশ্লেষণ করে তালিকাটি প্রস্তুত করা হয়।

গুগল স্কলারের বিশ্লেষণ অনুসারে তার এইচ-ইনডেক্স ১৩৯ এবং ৭৬ হাজারেরও বেশি উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহ জেলার কৃতী সন্তান সাইদুর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়ার সানওয়ে ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন।

২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাইদুর রহমান বিশ্বসেরা গবেষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

সাইদুর রহমান ২০২৪ সালে ‘এডি সায়েন্টিফিক ইনডেক্স’-এর প্রকাশিত তালিকায় মালয়েশিয়ার বিজ্ঞানীদের মধ্যে ছিলেন ১ নম্বরে। তিনি রিসার্চ ডটকম এবং স্কলার জিপিএস গবেষণা বিশ্লেষণেও এক নম্বর গবেষক হিসেবে তালিকাভুক্ত আছেন।

তার অসামান্য গবেষণা দক্ষতার জন্য সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডিসটিঙ্গুইশড রিসার্চ প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে, যা শুধু শীর্ষ গবেষকদের মধ্যে দেওয়া একটি মর্যাদাপূর্ণ পদ। ওয়েব অব সায়েন্স ন্যানোফ্লুয়েড গবেষণায় তিনি বিশ্বের গবেষকদের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

অধ্যাপক সাইদুর রহমান সানওয়ে ইউনিভার্সিটিতে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে ল্যাব তৈরি করেছেন।

এই ল্যাবটি অ্যাডভান্সড ম্যাটারিয়াল ডেভেলপমেন্ট এবং এনার্জি ট্রান্সফার, সৌর এনার্জি, এনার্জি স্টোরেজ, ক্লিন ওয়াটার ডেভেলপমেন্টে ব্যবহার করা হয়।

২০২২ সালে দেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমানকে সিআইপি সম্মাননাও প্রদান করে।

এনজে

সম্পর্কিত নিবন্ধ