বোতলের সয়াবিনের সংকট, চড়া দামে বিক্রি খোলা তেল
Published: 1st, March 2025 GMT
পবিত্র রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছেন ক্রেতারা। কিন্তু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল।
ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকটি বাজার ঘুরে গতকাল শুক্রবার দেখা গেছে, বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই বললেই চলে। বিশেষ করে পাঁচ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এই সংকট চলছে। এই সুযোগে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক মাসে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১৫ থেকে ১৭ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ১৮৫-১৯০ টাকা লিটার দরে। এই দর সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে লিটারে ২৮ থেকে ৩৩ টাকা বেশি। খোলা তেলের দাম বোতলের তেলকে ছাড়িয়ে গেছে। বোতলের সয়াবিন তেলের নির্ধারিত
দর লিটারপ্রতি ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলের দর ৮৫২ টাকা। বাজারে যতটুকু পাওয়া যাচ্ছে, তার মোড়কে এই দরই লেখা হচ্ছে। অবশ্য খুচরা ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষেত্রে বেশি নিচ্ছেন।
ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকটি বাজার ঘুরে গতকাল শুক্রবার দেখা গেছে, বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই বললেই চলে। বিশেষ করে পাঁচ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এই সংকট চলছে।ভোজ্যতেলের আমদানি বেড়েছে। বিশ্ববাজারও স্থিতিশীল। কিন্তু তাতে ক্রেতাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। তাঁদের চড়া দামে কিনতে হচ্ছে সয়াবিন তেল।
পাড়ার কয়েকটি মুদিদোকানে গতকাল সকালে সয়াবিন তেলের পাঁচ লিটারের বোতল না পেয়ে একটি সুপারশপে যান রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম। সেখানে গিয়েও তিনি দুই লিটার অথবা পাঁচ লিটারের বোতল পাননি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দোকানদারেরা বলছেন অল্প অল্প করে বোতলের তেল সরবরাহ করা হয়। এলেই ক্রেতারা কিনে নেন, থাকে না। তিনি আরও বলেন, ‘রোজার মাসে তেল বেশি লাগে। শুনেছি, আমদানি নাকি অনেক বেড়েছে। বাজারে গিয়ে তো পাই না।’
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাবে, দেশে বছরে ২২ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। শর্ষে ও কুঁড়ার তেল মিলিয়ে দেশে উৎপাদিত হয় প্রায় আড়াই লাখ টন। বাকিটা আমদানি করতে হয়। বেশি আসে পাম ও সয়াবিন তেল। পরিবার পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল বেশি কেনা হয়।
দর লিটারপ্রতি ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলের দর ৮৫২ টাকা। বাজারে যতটুকু পাওয়া যাচ্ছে, তার মোড়কে এই দরই লেখা হচ্ছে। অবশ্য খুচরা ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষেত্রে বেশি নিচ্ছেন।বোতলজাত তেলের সংকট নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, রমজান মাস সামনে রেখে বাজারে ভোজ্যতেলের বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অধিক পরিমাণ ভোজ্যতেল সরবরাহ করছে। ভোজ্যতেলের সরবরাহের পরিমাণ বিবেচনায় সংকটের কোনো সুযোগ নেই। বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় কিছু ব্যবসায়ীর মজুতের প্রবণতা থেকে যদি সংকট হয়ে থাকে, তা অচিরেই কেটে যাবে। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য স্থিতিশীল থাকায় অস্বাভাবিক মুনাফার সুযোগ নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, টি কে গ্রুপ ও বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেড চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি ভোজ্যতেল আমদানি করেছে, যা ৭ থেকে ১০ দিনের ভেতরে বাজারে প্রবেশ করবে।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বোতলজাত তেলের সংকট রয়ে গেছে। খোলা তেলের দামও চড়া। চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাজারের দোকানি মুহাম্মদ ফরিদুল হক বলেন, ‘আমরা ২০ কার্টন সয়াবিনের অর্ডার করে পাচ্ছি ২ কার্টন। সয়াবিনের সরবরাহ যদি স্বাভাবিক করা যায়, বাজারও স্বাভাবিক থাকবে।’
আমদানি বেড়েছেট্যারিফ কমিশনের হিসাবে, প্রতি মাসে সয়াবিনের চাহিদা ৮৭ হাজার টন। রোজায় চাহিদা আরও বাড়ে। এই চাহিদার বিপরীতে জানুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ সয়াবিন তেল আমদানি হয়। যেমন গত জানুয়ারিতে সয়াবিন তেল আমদানি হয় ১ লাখ ১৭ হাজার টন, যা গত ছয় বছরে মাসিক ভিত্তিতে সর্বোচ্চ। আবার সয়াবিন তেল তৈরির কাঁচামাল সয়াবিন বীজ আমদানি হয় তিন লাখ টন, যা থেকে পাওয়া যাবে ৪৫ হাজার টন সয়াবিন তেল।
অবশ্য ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে আমদানি ছিল কম। এ সময়ে মাত্র এক জাহাজে ২৫ হাজার টন সয়াবিন তেল আমদানি হয়। সব মিলিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ২৬ দিনে সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে ৫৭ হাজার টন। আরও আসছে ১ লাখ ৩০ হাজার টন। বাড়তি আমদানির খবরে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে খোলা সয়াবিনের দাম লিটারে ৪-৫ টাকা কমেছে।
জানতে চাইলে শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারক টি কে গ্রুপের পরিচালক মোস্তফা হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, আর্জেন্টিনার বন্দরে সমস্যার কারণে ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে যেসব ট্যাংকার বাংলাদেশে আসার কথা ছিল, সেগুলো শেষ সপ্তাহে এসেছে। তবে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে এসব তেল বন্দরে পৌঁছাতে শুরু করেছে, খালাস করে বাজারজাতও হচ্ছে। এখন সংকট থাকার কথা নয়।
আমরা ২০ কার্টন সয়াবিনের অর্ডার করে পাচ্ছি ২ কার্টন। সয়াবিনের সরবরাহ যদি স্বাভাবিক করা যায়, বাজারও স্বাভাবিক থাকবে।’বাজারের দোকানি মুহাম্মদ ফরিদুল হকসার্বিকভাবে গতবারের তুলনায় সয়াবিন তেল আমদানি বেশি হয়েছে। গত বছর রোজার আগে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি (২৬ তারিখ পর্যন্ত) মাসে আমদানি হয় ১ লাখ ২০ হাজার টন সয়াবিন তেল। এবার একই সময়ে আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৭৪ হাজার টন। টি কে গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই) এবং বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেড—এই চার প্রতিষ্ঠান আমদানি বাড়িয়েছে।
আর্জেন্টিনার বন্দরে সমস্যার কারণে ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে যেসব ট্যাংকার বাংলাদেশে আসার কথা ছিল, সেগুলো শেষ সপ্তাহে এসেছে। তবে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে এসব তেল বন্দরে পৌঁছাতে শুরু করেছে, খালাস করে বাজারজাতও হচ্ছে। এখন সংকট থাকার কথা নয়।শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারক টি কে গ্রুপের পরিচালক মোস্তফা হায়দারভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার গত নভেম্বর মূল্য সংযোজন কর (মূসক–ভ্যাট) কমিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বাড়তি আমদানি ও কর কমানোর পরও রোজার আগে দাম কমেনি, বরং খোলা সয়াবিন তেলের দাম অনেকটাই বেড়েছে।
[প্রতিবেদনটিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা]
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ জ যত ল র ব যবস য় র হ জ র টন সরবর হ ক র টন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহী ওয়াসায় চাকরি, বেতনের সঙ্গে রয়েছে গাড়ি সুবিধা
রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (রাজশাহী ওয়াসা) জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে তিন বছর মেয়াদে চুক্তির ভিত্তিতে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে।
পদের নাম: ব্যবস্থাপনা পরিচালকপদসংখ্যা: ১
আরও পড়ুনপল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনে বড় নিয়োগ, পদ ১৩৩০২৫ মার্চ ২০২৫যোগ্যতা: ন্যূনতম স্নাতকোত্তর বা বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) বা সমমানের ডিগ্রি। সরকারি/আধা সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে কর্মরত আছেন বা ছিলেন, এমন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর ন্যূনপক্ষে তৃতীয় গ্রেড স্কেল বা সমপর্যায়ের স্কেলধারী হতে হবে। অবশ্যই পানি সরবরাহ, পানি ব্যবস্থাপনা ও পয়োনিষ্কাশন খাতে ২০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে।
বয়স: অনূর্ধ্ব ৬০ বছর।
চাকরির ধরন: তিন বছরের চুক্তিভিত্তিক
বেতন-ভাতা: আলোচনা সাপেক্ষে
সুযোগ-সুবিধা: প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য চালক-জ্বালানিসহ একটি গাড়ি, আবাসিক টেলিফোন, মুঠোফোন ও তার বিল ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ প্রদান করবে।
আরও পড়ুনচীনে আইইএলটিএস ছাড়াই স্কলারশিপে মাস্টার্স-পিএইচডির সুযোগ২৭ মার্চ ২০২৫আবেদন যেভাবেআগ্রহী প্রার্থীদের বিস্তারিত বিবরণসংবলিত নিজের জীবনবৃত্তান্তসহ আহ্বায়ক, কর্মসম্পাদন সহায়তা কমিটি, রাজশাহী ওয়াসা বরাবর আবেদনপত্র পাঠাতে হবে।
আবেদনপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সদস্যসচিব, কর্মসম্পাদন সহায়তা কমিটি, রাজশাহী, বাসা নম্বর ২৮৪, সেক্টর ২, হাউজিং এস্টেট, উপশহর রাজশাহী-৬২০২।
আবেদনপত্র পাঠানোর শেষ সময়
২৪ এপ্রিল ২০২৫, বেলা তিনটা পর্যন্ত।
আরও পড়ুনব্র্যাকে খণ্ডকালীন চাকরি, বেতনের সঙ্গে উৎসব বোনাস, স্বাস্থ্যবিমাসহ নানা সুবিধা২৬ মার্চ ২০২৫