ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস বা আইসিসিআরের বৃত্তির অর্থে ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই রাজনৈতিক কার্যকলাপ বা ইউনিয়ন গঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না। ভারতে থাকা অবস্থায় ভ্রমণ করতে পারবেন না সংবেদনশীল এলাকায়। এ মর্মে অঙ্গীকারপত্রে (মুচলেকা) সই করতে হচ্ছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের। শর্ত লঙ্ঘন করলে সেসব শিক্ষার্থীর বৃত্তি বাতিল ও নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ।

অটল বিহারী বাজপেয়ী জেনারেল স্কলারশিপ স্কিমের অধীনে ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নে ৬৪০ জনকে বৃত্তি দেয় আইসিসিআর। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অঙ্গীকারপত্রে বলা হয়, ‘আমাকে ভারতের এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ার জন্য আইসিসিআর ২০২৪-২৫ সালের বৃত্তি দিয়েছে। আমি কথা দিচ্ছি, ভারতে থাকাকালে কোনো রাজনৈতিক কার্যকলাপ, ভারতের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর কার্যকলাপ বা অন্য দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বিব্রতকর হতে পারে– এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকব না। এ ছাড়াও ভারতের কোনো সীমান্ত, নিষিদ্ধ, সুরক্ষিত বা জনজাতি এলাকা পরিদর্শন করব না। আমি এও অঙ্গীকার করছি, ওপরের শর্তগুলোর কোনো অংশ লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আমাকে দেওয়া আইসিসিআর প্রদেয় বৃত্তি বাতিল করা হবে।’

সম্প্রতি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এমন তথ্য উঠে আসে। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ভারতে পড়তে আসা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সংবাদমাধ্যমের সামনে আসতে দ্বিধাবোধ করছিলেন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বৃত্তির জন্য আবেদন করার সময় আমাদের অঙ্গীকারপত্র জমা দিতে বলা হয়েছিল। সাধারণত আবেদনের সময় এটি আমাদের হাইকমিশন সংগ্রহ করে থাকে। কিন্তু এ বছর ভর্তির পর আমাদের তাতে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছে।’

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের দাবি, যেসব বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আইসিসিআর বৃত্তি নিয়ে ভারতের পড়তে আসেন, তাদের আবেদনপত্রের সঙ্গে এ ধরনের একটি হলফনামা বা অঙ্গীকারপত্র জমা দিতে হয়। মূলত ভারতে বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃপক্ষই সেটি সংগ্রহ করে থাকে। কিন্তু গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সে দেশের রাজনৈতিক সমস্যার কারণে বেশ কিছু প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ আছে। তাই বাংলাদেশ হাইকমিশনের তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সেসব অঙ্গীকারপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।

সূত্র জানায়, আইসিসিআর স্কলারশিপে ভারতে অধ্যয়নরত অন্য দেশের শিক্ষার্থীদের এ ধরনের অঙ্গীকারপত্রে সইয়ের প্রয়োজন নেই। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করা এক ফিলিস্তিনি ছাত্রকেও এ ধরনের অঙ্গীকারপত্র সই করতে হয়নি।
তবে সরকারি নীতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার এ অঙ্গীকারপত্র সংগ্রহ করে থাকে, নাকি শুধু আইসিসিআর-অর্থায়নকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য ভারত সরকার এ অঙ্গীকারপত্র নিয়ে থাকে– তা এখনও স্পষ্ট নয়। 
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরকারপন্থি এবং সরকারবিরোধী মনোভাবের উত্থান হচ্ছে কিনা– তা তারা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এমনটা হলে রাজনৈতিক বিভাজন ভারতীয় ক্যাম্পাসগুলোতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এ মুহূর্তে ২৭০ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক র যকল প আইস স আর র জন ত ক র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আল-আকসায় ফিলিস্তিনিদের জন্য বিধিনিষেধ ইসরায়েলের

রমজান মাসে জেরুজালেমের পুরাতন নগরীর আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

গত বছর গাজার যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েল আল-আকসায় প্রবেশে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, বিশেষ করে পশ্চিম তীর থেকে আসা ফিলিস্তিনিদের ক্ষেত্রে। ডেভিড মেনসার বলেন, জননিরাপত্তার স্বার্থে প্রতি বছরের মতোই স্বাভাবিক বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে।

নিরাপত্তার অজুহাতে এবারও প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করা হতে পারে। গত বছর শুধু ৫৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ ও ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সেইসঙ্গে জেরুজালেমের পুরাতন শহরজুড়ে ইসরায়েলি পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।

এই বছরও সতর্কতা অবলম্বনের ইঙ্গিত দিয়ে মেনসার বলেন, সহিংসতা ও উসকানির যে কোনো চেষ্টাকে আমরা কঠোরভাবে প্রতিহত করব। তবে তিনি ঠিক কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

আল-আকসা মসজিদ ফিলিস্তিনিদের জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। দীর্ঘদিনের রীতির অংশ হিসেবে ইহুদিরা সেখানে প্রবেশ করতে পারলেও প্রার্থনার অনুমতি নেই।

ইসরায়েলি সরকার দাবি করেছে, তারা আল-আকসার স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চায়। তবে ফিলিস্তিনিদের আশঙ্কা, এই নিষেধাজ্ঞাগুলো তাদের ধর্মীয় অধিকার খর্ব করছে এবং পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ