কুমিল্লায় সিএনজি গ্যাস নেওয়ার সময় কথা কাটাকাটির জেরে ওমর ফারুক মজুমদার (৪৫) নামে সিএনজি চালিত অটোরিকশার এক চালককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে লালমাই উপজেলার পেরুল এলাকার এমআর সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ওমর ফারুক জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের লুধুয়া এলাকার আবদুল বারেক মজুমদারের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে কুমিল্লা নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লাঙ্গলকোটের লুধুয়া এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন নিহত ওমর ফারুকের স্বজন ও স্থানীয় সিএনজি চালকরা।

নিহত ওমরের খালাতো ভাই বাকের মজুমদার বলেন, শুক্রবার দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে লাকসাম বাইপাস এলাকা থেকে সিএনজি গ্যাস নেওয়ার জন্য ওমর ফারুক ভাই রওনা দেয়। এসময় মুদাফফরগঞ্জ সড়কের মাথায় এক অটোরিকশার সঙ্গে সামান্য ধাক্কা লাগে। এতে ওই অটোরিকশা চালক ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে আটকে রাখে। পরে আমি দেখে ঝগড়া মেটানোর চেষ্টা করি এবং তাকে স্ট্যান্ডে গিয়ে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলতে বলি। কিন্তু ওই অটোচালক তা না শুনে মোবাইল ফোনে লোকজন ডেকে এনে ওমর ফারুককে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লাকসামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

এদিকে ওমর ফারুকের মরদেহ নিয়ে আসার পর কুমিল্লা নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লুধুয়া এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন ফারুকের স্বজন, এলাকাবাসী ও অন্যান্য সিএনজি চালকরা। এ সময় তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে সড়কের দুই পাশে দুই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পুনরায় সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

শাহ আলম রাতে সমকালকে জানান, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে জহির নামে একজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে ওমর ফারুককে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।  জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করছে বলে তিনি জানান।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ সড়ক অবর ধ ওমর ফ র ক স এনজ

এছাড়াও পড়ুন:

ফের গোলার বিকট শব্দ টেকনাফ সীমান্তে

প্রায় দুই মাস পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে থেকে কক্সবাজার টেকনাফ সীমান্তে আবারও মুহুর্মুহু গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ সাবরাং সীমান্তসহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় রাখাইন থেকে বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। গোলার শব্দে স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।

এদিকে দীর্ঘদিন বন্ধের পর মিয়ানমারে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর (জান্তা সরকার) মধ্য তুমুল সংঘর্ষ ফের শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। তার আগে দীর্ঘ ১১ মাসের লড়াই-সংঘাতের পর ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের ২৭০ কিলোমিটার এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এরপরও স্বস্তিতে নেই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। মাঝখানে প্রায় দুই সংঘাত বন্ধ থাকার পর আবারো ওপার থেকে এপারে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।

ওপারের গোলার বিকট শব্দের সীমান্তের এপার কাঁপছে উল্লেখ করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘আমিও দুটি মুহুর্মুহু গোলার বিকট শব্দ শুনেছি। তবে সীমান্তে আামদের দায়িত্বরত বাহিনীরদের মাধ্যমে খোঁজখবর রাখছি।’

জানতে চাইলে টেকনাফ পৌরসভাস্থল সীমান্তের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তের খুব কাছে হওয়ায় ওপারে গোলার বিস্ফোরণ হলে আমার বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় মিয়ানমারের গোলার শব্দ শোনা গেছে। ঘরে থাকা লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে।’

শাহপরীর দ্বীপ বড় মাদ্রাসার শিক্ষক মো. জসিম বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ হঠাৎ মর্টারশেলের  বিকট শব্দের আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেছে, আমরা আতঙ্কে আছি।

টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলির শব্দ এ পারেও শোনা যাচ্ছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

তবে এ বিষয়ে সীমান্তে দায়িত্বে থাকা টেকনাফ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ