Samakal:
2025-04-21@02:55:57 GMT

যে কারণে নিলামের গাড়ি পানির দরে

Published: 28th, February 2025 GMT

যে কারণে নিলামের গাড়ি পানির দরে

গাজীপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আক্তারউজ্জামানের আমদানি করা গাড়ি নিলাম থেকে কিনতে দরপত্র জমা পড়েছে একটি। মাত্র এক লাখ টাকা দর দিয়ে গাড়িটি কিনতে চান মহসীন মোহাম্মদ কবির নামে একজন দরদাতা। অথচ কাস্টমস বলছে, গাড়িটির সংরক্ষিত মূল্য ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।  প্রশ্ন হলো– এত কম দর কেন দিতে চান দরদাতা। 
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখার সহকারী কমিশনার মো.

সাকিব হোসেন বলেন, নিলামের বিধিবদ্ধ কিছু নিয়ম আছে। এসব মানতে গিয়ে অনেক সময় আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়তে হয়। নিয়মের বাইরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না কাস্টমস। কাঙ্ক্ষিত দর না পেলে তারা এনবিআরের সঙ্গে আলাপ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। নিয়মিত নিলামে অংশ নেওয়া ছৈয়দ জহিরুল ইসলাম নাঈম বলেন, নিয়মের ফাঁদে পড়ে এখন একটি গাড়িকে দুই বা তার বেশি বার নিলামে তুলছে কাস্টমস। অথচ তারা যদি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাজার যাচাই করত তাহলে গাড়ির সংরক্ষিত দাম সঠিকভাবে নিরূপণ করতে পারত। 
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী প্রথম নিলামে সংরক্ষিত দর বা তার চেয়ে বেশি পেলে সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে তা বিক্রি করতে পারবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কাঙ্ক্ষিত দর না পেলে নিলামে তোলা যাবে দ্বিতীয়বার। প্রথম নিলামের তুলনায় যদি এক টাকাও বেশি দর পায়; তাহলে বিক্রি করতে পারবে গাড়িটি। এ পর্যায়ে গাড়িটির সংরক্ষিত দাম আর বিবেচনা করা হবে না। কোনো কারণে যদি দ্বিতীয়বারও বিক্রি না করে তৃতীয়বার নিলামে তোলা হয় তাহলে যে কোনো দরে এই গাড়ি বিক্রি করতে পারবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। নিয়মের এই ফাঁদের সুযোগ নিচ্ছেন সিন্ডিকেটের সদস্যরা। পানির দরে গাড়ি কিনতে তারা প্রথম নিলামে দর দেন সংরক্ষিত দামের অনেক কম। যাতে দ্বিতীয়বার একটু বাড়তি দাম দিয়েই গাড়িটি কিনতে পারেন তারা। তৃতীয় নিলামে যে কোনো দামে গাড়ি বিক্রি করার নিয়ম থাকায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষও দ্বিতীয় নিলামে পণ্য ছেড়ে দেওয়ার মনস্তাত্ত্বিক এক চাপে থাকে। এই চাপ তৈরি করেই পানির দরে গাড়ি বিক্রি হচ্ছে।
সম্প্রতি একসঙ্গে ৪৪টি গাড়ির নিলাম হলেও ২৪টি গাড়ি ছিল একেবারে নতুন। সংসদ সদস্যদের আমদানি করা গাড়িগুলো টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার মডেলের। বাজার যাচাই করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতিটি গাড়ির সংরক্ষিত দাম নির্ধারণ করে ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। নিলামে ওঠা গাড়ির মধ্যে এবারে পাঁচটি ছিল টয়োটা হ্যারিয়ার, দুটি টয়োটা র‍্যাভ ফোর ও একটি টয়োটা এস্কোয়ার। বিলাসবহুল এসব গাড়ির দাম শোরুমে ৮ কোটি টাকার বেশি।  নিলামে সর্বোচ্চ ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা দাম পাওয়া গেছে মাত্র একটি গাড়ির। 
একটি গাড়ি পরপর তিনবার নিলামে তুলতে অনেক সময় ব্যয় হয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। এই ফাঁকে চুরি হয়ে যায় গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ। নষ্ট হয়ে যায় চাকচিক্য। এর সুযোগ নেয় নিলাম সিন্ডিকেট। তারা এমন গাড়ি কিনতে চায় কেজি দরে! দরও দেয় সেভাবে। নিলাম সিন্ডিকেট ভাঙতে ২০২৩ সাল থেকে অনলাইনে দর প্রস্তাবের সুযোগ রাখে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। নিলাম সম্পর্কে ভালো  ধারণা না থাকায় এবং জামানতের টাকা পেতে হয়রানি হওয়ায় অনলাইন ব্যবস্থা সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। গাড়ির নিলামে তাই ঘুরেফিরে অংশ নেয় একই চক্র। 
সাবেক সংসদ সদস্যদের ২৪টিসহ মোট ৪৪টি গাড়ি নিলামে বিক্রি করতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গত ২৭ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়। আগ্রহী ক্রেতার সংখ্যা বাড়াতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে এবং ঢাকা-চট্টগ্রামে সরাসরি নিলামের মাধ্যমে দর গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গাড়িগুলো সরাসরি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। 
সাবেক সংসদ সদস্যদের ২৪টি গাড়ির মধ্যে টয়োটা ব্র্যান্ডের ১০টি ল্যান্ডক্রুজারের জন্য কোনো আবেদন ও দরপ্রস্তাব জমা পড়েনি। বাকি ৩৪টি গাড়ির মধ্যে নিলামে সর্বোচ্চ দর উঠেছে খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন এবং নীলফামারী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাদ্দাম হোসেনের ফেলে যাওয়া গাড়িতে। এই দুই গাড়িতে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা করে দর দিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয়েছে। আর শুল্কমুক্ত সুবিধার বাইরে আমদানি করা ২০টি গাড়ির দর উঠেছে দুই লাখ থেকে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকার মধ্যে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক স টমস ক দরদ ত

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে ফেরিওয়ালা খুন

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে এক ফেরিওয়ালা খুন হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের পীরের বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত নীপেশ তালুকদার (৪২)। তাঁর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার সুনামপুর গ্রামে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গতকাল রাত ১১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, নীপেশের গ্রামের বাড়ি দিরাইয়ে হলেও সিলেট নগরের জালালাবাদ থানার তেমুখী এলাকায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। তিনি প্রতিদিন বাইসাইকেল দিয়ে হাটবাজারে পান, সুপারি ও সিগারেট ফেরি করে বিক্রি করতেন। গতকালও একইভাবে বিক্রি শেষে সন্ধ্যায় তিনি পীরের বাজার এলাকা দিয়ে ফিরছিলেন। বাজারের পশ্চিম পাশে আসামাত্রই কিছু ছিনতাইকারী নীপেশের পথরোধ করে এবং একপর্যায়ে তাঁর বুকের বাঁ পাশে ছুরিকাঘাত করে।

বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী গতকাল রাত ১২টায় প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। দ্রুত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ