গাজীপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আক্তারউজ্জামানের আমদানি করা গাড়ি নিলাম থেকে কিনতে দরপত্র জমা পড়েছে একটি। মাত্র এক লাখ টাকা দর দিয়ে গাড়িটি কিনতে চান মহসীন মোহাম্মদ কবির নামে একজন দরদাতা। অথচ কাস্টমস বলছে, গাড়িটির সংরক্ষিত মূল্য ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। প্রশ্ন হলো– এত কম দর কেন দিতে চান দরদাতা।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখার সহকারী কমিশনার মো.
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী প্রথম নিলামে সংরক্ষিত দর বা তার চেয়ে বেশি পেলে সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে তা বিক্রি করতে পারবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কাঙ্ক্ষিত দর না পেলে নিলামে তোলা যাবে দ্বিতীয়বার। প্রথম নিলামের তুলনায় যদি এক টাকাও বেশি দর পায়; তাহলে বিক্রি করতে পারবে গাড়িটি। এ পর্যায়ে গাড়িটির সংরক্ষিত দাম আর বিবেচনা করা হবে না। কোনো কারণে যদি দ্বিতীয়বারও বিক্রি না করে তৃতীয়বার নিলামে তোলা হয় তাহলে যে কোনো দরে এই গাড়ি বিক্রি করতে পারবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। নিয়মের এই ফাঁদের সুযোগ নিচ্ছেন সিন্ডিকেটের সদস্যরা। পানির দরে গাড়ি কিনতে তারা প্রথম নিলামে দর দেন সংরক্ষিত দামের অনেক কম। যাতে দ্বিতীয়বার একটু বাড়তি দাম দিয়েই গাড়িটি কিনতে পারেন তারা। তৃতীয় নিলামে যে কোনো দামে গাড়ি বিক্রি করার নিয়ম থাকায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষও দ্বিতীয় নিলামে পণ্য ছেড়ে দেওয়ার মনস্তাত্ত্বিক এক চাপে থাকে। এই চাপ তৈরি করেই পানির দরে গাড়ি বিক্রি হচ্ছে।
সম্প্রতি একসঙ্গে ৪৪টি গাড়ির নিলাম হলেও ২৪টি গাড়ি ছিল একেবারে নতুন। সংসদ সদস্যদের আমদানি করা গাড়িগুলো টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার মডেলের। বাজার যাচাই করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতিটি গাড়ির সংরক্ষিত দাম নির্ধারণ করে ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। নিলামে ওঠা গাড়ির মধ্যে এবারে পাঁচটি ছিল টয়োটা হ্যারিয়ার, দুটি টয়োটা র্যাভ ফোর ও একটি টয়োটা এস্কোয়ার। বিলাসবহুল এসব গাড়ির দাম শোরুমে ৮ কোটি টাকার বেশি। নিলামে সর্বোচ্চ ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা দাম পাওয়া গেছে মাত্র একটি গাড়ির।
একটি গাড়ি পরপর তিনবার নিলামে তুলতে অনেক সময় ব্যয় হয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। এই ফাঁকে চুরি হয়ে যায় গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ। নষ্ট হয়ে যায় চাকচিক্য। এর সুযোগ নেয় নিলাম সিন্ডিকেট। তারা এমন গাড়ি কিনতে চায় কেজি দরে! দরও দেয় সেভাবে। নিলাম সিন্ডিকেট ভাঙতে ২০২৩ সাল থেকে অনলাইনে দর প্রস্তাবের সুযোগ রাখে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। নিলাম সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকায় এবং জামানতের টাকা পেতে হয়রানি হওয়ায় অনলাইন ব্যবস্থা সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। গাড়ির নিলামে তাই ঘুরেফিরে অংশ নেয় একই চক্র।
সাবেক সংসদ সদস্যদের ২৪টিসহ মোট ৪৪টি গাড়ি নিলামে বিক্রি করতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গত ২৭ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়। আগ্রহী ক্রেতার সংখ্যা বাড়াতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে এবং ঢাকা-চট্টগ্রামে সরাসরি নিলামের মাধ্যমে দর গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গাড়িগুলো সরাসরি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়।
সাবেক সংসদ সদস্যদের ২৪টি গাড়ির মধ্যে টয়োটা ব্র্যান্ডের ১০টি ল্যান্ডক্রুজারের জন্য কোনো আবেদন ও দরপ্রস্তাব জমা পড়েনি। বাকি ৩৪টি গাড়ির মধ্যে নিলামে সর্বোচ্চ দর উঠেছে খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন এবং নীলফামারী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাদ্দাম হোসেনের ফেলে যাওয়া গাড়িতে। এই দুই গাড়িতে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা করে দর দিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয়েছে। আর শুল্কমুক্ত সুবিধার বাইরে আমদানি করা ২০টি গাড়ির দর উঠেছে দুই লাখ থেকে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকার মধ্যে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের সকালে রোগী, নার্স ও ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে টিম খোরশেদ’র শুভেচ্ছা বিনিময়
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদের দিন সকালে নারায়ণগঞ্জের ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও সরকারি ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ঈদের দিন ভর্তি থাকা রোগী,নার্স ও পরিবার পরিজনের বন্ধন ছেড়ে নাগরিক সেবায় নিয়োজিত ট্রাফিক পুলিশদের মাঝে পুষ্টিকর প্রাত:রাস (নাস্তা-দুধ, জুস, বিস্কুট ও কেকের বক্স) বিতরণ করে মানবিক সংগঠন টিম খোরশেদ।
ঈদের নামাজ শেষে টিম খোরশেদ এর স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ প্রথমে হাসপাতালের রোগী ও নার্স ও পরে রাস্তায় কর্মরত ট্রাফিক পুলিশদের মাঝে নাস্তা বিতরণ করে।
টিম খোরশেদ এর দলনেতা সাবেক সিটি করপোরেশন কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ জানান, আমরা আসলে দূর্গত মানুষ ও নাগরিক সেবায় নিয়োজিতদের ঈদের আনন্দে অংশ নিয়ে হাসি ফুটানোর জন্যই আমাদের সকল কার্যক্রম।