জমি দখলে ব্যর্থ হয়ে প্রতিবন্ধীর বাড়ি ভাঙচুর
Published: 28th, February 2025 GMT
বরগুনার পাথরঘাটায় বাক্প্রতিবন্ধী ভাইবোনের বাড়ি দখলে ব্যর্থ হয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজন আহত হয়েছেন। প্রতিবেশী প্রবাসী ও তার স্ত্রী ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে এই হামলা করেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে কাঁঠালতলী ইউনিয়নের আমতলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। হামলায় আহতরা হলেন– আকিমুননেছা (৭০), তাঁর মেয়ে পারভীন আক্তার, ছেলে নজরুল হক, লিটন হাওলাদার ও নাতি লিপি বেগম (৬)। আহত পারভীন ও নজরুল হক বাক্প্রতিবন্ধী।
আহত লিটন হাওলাদার জানান, তারা চার ভাইবোন। বাড়িটি তাঁর ভাই সাইদুল হকের। সে মারা যাওয়ার পর তাঁর স্ত্রী চলে যান বাবার বাড়ি। এর পর থেকে ওই বাড়িতে চার ভাইবোন বসবাস করছেন। বাড়িটির ওপর নজর পড়ে প্রবাসী মিজানুর রহমানের স্ত্রী নাসরীন বেগমের। তারা বাড়িটি কিনে নিতে চায়। এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়। এর জের ধরে গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে তাদের ঘরে আগুন দিতে আসে কয়েকজন। বাধা দিলে তাঁকে মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়। এ সময় গ্রামবাসী মিজানুর রহমানের ভগ্নিপতি ইলিয়াসকে ধরে থানায় সোপর্দ করে। আদালত থেকে জামিন নিয়ে ইলিয়াস ও তার শ্যালকের বউ নাসরীন ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে ফের বাড়িতে হামলা করে ঘর ভাঙচুরসহ মালপত্র লুট করে নেয়। এখন প্রতিবন্ধী দুই ভাইবোনসহ তারা খোলা জায়গায় বসবাস করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, মিজানুর রহমান কয়েক বছর ধরে প্রবাসে থাকেন। প্রচুর টাকার মালিক হয়েছেন। তাদের বাড়ির পরিসর বাড়াতে প্রতিবন্ধীদের জমি দখল করতে পরিকল্পিত এ হামলা চালিয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে নাসরীন বেগমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। ঘটনার পর থেকে তারা আত্মগোপনে থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ সময় কথা হয় ইলিয়াস মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, তার শ্যালক ওই বাড়িতে জমি পাবে। কিন্তু তারা দিতে চায় না। তা নিয়ে বিরোধ চলছে। মারামারি বা ঘর ভাঙার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভোলায় সংঘর্ষ ঠেকাতে যাওয়া বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
ভোলায় জমির বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষে এক বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের কুঞ্জপট্টি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই বিএনপি নেতা সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের পর নিহত ব্যক্তির স্বজন, এলাকাবাসী, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ভোলা-ভেলুমিয়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম জামাল উদ্দিন হাওলাদার (৬০)। তিনি ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।
এলাকাবাসী, নিহতের স্বজন, গ্রাম পুলিশ ও ভোলা সদর থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কুঞ্জপট্টি মৌজায় মো. ইব্রাহীম রাঢ়ি নামের এক ব্যক্তি ৫ শতক জমি কেনেন। তবে পাশের জমির মালিক মো. আলম ব্যাপারী ওই জমি তাঁর বলে দাবি করেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কয়েক বছর ধরে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে অনেকবার সংঘর্ষ-সংঘাত হয়েছে। গতকাল সোমবার ঈদের দিনেও এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে আজ বেলা ১১টার দিকে দুই পক্ষ লাঠিয়াল ভাড়া করে জমি দখল করতে যায়। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে গুরুতর আহত হন স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন হাওলাদার। বিকেলে বরিশালে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘তোমরা মারামারি বন্ধ করো, আমি তোমাদের সমস্যা সমাধান করে দেব।’ এ সময় জামাল উদ্দিনের মাথায় ও শরীরে এলোপাতাড়ি পেটানো শুরু করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু বাড়ি আনার সময় পথে নড়ে উঠলে তাঁকে আবার বরিশালের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানের চিকিৎসক বিকেল ৫টার দিকে পরীক্ষা করে তাঁকে আবার মৃত ঘোষণা করেন।
ভেলুমিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জামাল উদ্দিন দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ইব্রাহীম রাঢ়ির ছেলে তাঁর মাথায় প্রথম আঘাত করেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে স্থানীয় লোকজন ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।
ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ বলেন, এ ঘটনায় কোনো পক্ষের অভিযোগ পাননি। পেলে ব্যবস্থা নেবেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।